
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে আর কোন মামলা নেই
হত্যা মামলা থেকে দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে করা মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জামান বাবরসহ আটজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকালে বিশেষ জজ আদালত-৩’-এর বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন। এর ফলে বিচারিক আদালতে তারেক রহমান ও বাবরের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইনজীবীরা।মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবাহান সানভীরকে দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করা হয়। এতে এক এগারোর সময়ে বাদী হয়ে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।’ বিএনপির আইনজীবী বোরহান উদ্দিন জানান, আসামিদের বিপক্ষে কোনো স্বাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি দুদক। এতে তারেক রহমানের দেশে ফিরে রাজনীতি করতে আর কোনো বাধা নেই।

এই সরকার যত দ্রুত বিদায় নেবে দেশ-জাতির জন্য তত মঙ্গল: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই সরকার যত দ্রুত বিদায় নেবে দেশ ও জাতির জন্য তত মঙ্গল। তিনি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এত ভয়াবহতা স্মরণকালে কেউ দেখিনি। পুলিশ প্রশাসনকে ঢালাওভাবে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা ও মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে। পুলিশের মনোবল ফেরাতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। পুলিশ প্রশাসনকে অকার্যকর করা হয়েছে। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, যেহেতু সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, সেদিক থেকে এ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দেশের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এ সরকার দেশকে আগুনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বুধবার (১৯ মার্চ) ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে সন্ত্রাসী হামলার পর গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন বিকেলে কচুক্ষেত সংলগ্ন দ্য বুফে প্যালেস রেস্তোরাঁয় দলটির ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর জি এম কাদের গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, এ সরকার নির্বাচনের নামে প্রহসনের আয়োজন করবে। আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করে এই সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। শুধু মিছিল মিটিং নয়, এই সরকারের আমলে ইফতার পার্টিও করতে দিচ্ছে না। তারা নিজেদের লোক দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছে। সেই দলকে ক্ষমতাসীন করার জন্য সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছে। সরকারের সব পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে নতুন দলটি। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এই সরকারের চলে যাওয়া উচিত, তারা দেশ চালাতে পারছে না। এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনও দিতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কিছু লোক জ্ঞানী-গুণী। কিন্তু, তাদের দেশ চালানোর কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তাদের কোনো প্রস্তাবনা বাস্তবসম্মত হবে না। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, এই সরকার দেশকে বিভক্ত করে ফেলছে। ইসলামী উগ্রপন্থি এবং রক্ষণশীলদের এক করেছে, আর উদারপন্থিদের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে অপবাদ দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে ভিন্ন মতালম্বীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই, মনে হচ্ছে তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। দেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে তারা রাজনীতি করতে চাচ্ছে, তাতে দেশ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন বিকেল ৪টার দিকে দ্য বুফে প্যালেস রেস্তোরাঁয় দলের ইফতার মাহফিলে নেতাকর্মী ও স্থানীয় রোজাদাররা উপস্থিত হন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল সেখানে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এসময় নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে তার সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়। এর প্রায় ১০ মিনিট পর তারা শতাধিক লোক নিয়ে ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। এতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী, স্থানীয় রোজাদার, সাংবাদিক ও পথচারীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। ইফতারের আগ মুহূর্তে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের লাঠিচার্জ করে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে সেনা নিরাপত্তায় জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান জাপা নেতারা। ইফতার মাহফিলে জাপার ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সামসুল হকের সভাপতিত্বে এবং সুলতান আহমেদ সেলিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জামায়াতের বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইজরায়েলের নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকা ও সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার (১৯ মার্চ) দলটির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন এ ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুর ১টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন বলেন, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোরে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলায় নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত ও অসংখ্য সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। গাজায় যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে এ ইজরায়েলি নৃশংস হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, মানবতার দুশমন ইসরায়েল যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ গাজায় ইতিহাসের নিকৃষ্টতম বিমান হামলা চালিয়ে শিশুসহ ৪ শতাধিক লোককে হত্যা করেছে। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধ বিরতি কার্যকর করার পর থেকেই মানবতার দুশমন ইসরায়েল গাজায় একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। ১৮ মার্চের হামলাটি ছিল অত্যন্ত নিকৃষ্টতম। এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করেছে এবং নির্মম বর্বরতা চালিয়েছে। ইসরায়েলের এই নির্মম বর্বরতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দেশের সকল মহানগরীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই বিক্ষোভ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য জামায়াতে ইসলামীসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিলে গণতন্ত্রের কবর রচনা হবে : তারেক রহমান
দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিলে গণতন্ত্রের কবর রচনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে দেশ ইমেজ সংকটে পড়বে বলেও জানান তিনি। বুধবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মানে বিএনপির ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এসব কথা বলেন তিনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারেক রহমান বলেন, ‘ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা এবং চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে উগ্রবাদী জনগোষ্ঠী এবং পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি দেশে ফের গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে।অন্যদিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বে ইমেজ সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘জনপ্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের নামে গৌণ ইস্যুকে মুখ্য করে অকারণ সময়ক্ষেপণের চেষ্টা হলে সেটি জনমনে ভুল বার্তা পৌঁছাবে।’ তারেক রহমান বলেন, ‘গত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসন-শোষণে দেশের শুধু শিক্ষাব্যবস্থা, রাজনীতি, অর্থনীতি এ সব কিছু ধ্বংস হয়নি, বরং বাংলাদেশের আবহমানকালের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকেও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঘৃণার বিষবাষ্প, বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে সামাজিক সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন।’ ‘একটি রাষ্ট্র ও সমাজের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক সম্প্রীতি ও মূল্যবোধ যদি বিনষ্ট করে দেওয়া যায়, তখনই সমাজব্যবস্থা অবক্ষয়, ভঙ্গুর, নিষ্ঠুর ও অমানবিক হয়ে ওঠে। ভঙ্গুর রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা উগ্রবাদ আর চরমপন্থা বিকাশের এক উর্বর ভূমিতে পরিণত হয়,’ বলেন তিনি। দেশে হঠাৎ করেই অতীতের মতো নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে মন্তব্য করে তারেক বলেন, ‘দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীদের নিরাপত্তাহীন রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। সরকার, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি কিংবা অন্য কোনো কাজে হয়তো বেশি মনোযোগী থাকার কারণে, আমাদের নারীরা নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে কি না, এ বিষয়টি গভীরভাবে ভাবার প্রয়োজন আছে।’ ‘শুধু একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যই মাফিয়া সরকারের পতন ঘটেনি—এ কথা যেমন সত্য। তার চেয়েও আরো চরম সত্য হয়তো একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না করার জন্যই কিন্তু মাফিয়া সরকারের নির্মম পতন হয়েছিল। সুতরাং একটি নির্বাচনকে শুধু কোনো একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়া না যাওয়ার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করার অবকাশ নেই,’ বলেন তারেক রহমান।

কোরআনের আইনে মানবিক দেশ গড়তে হবে : জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, পবিত্র কোরআনের আইনের ভিত্তিতে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনজীবী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বুধবার (১৯ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াত আমির বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি ইসলামী আইনের থেকে পৃথিবীতে ভালো কোনও আইন নেই। তাই ইসলামী আইনে, কোরআনের আইনের আলোকে মানবিক দেশ গড়তে হবে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা কোনও অংশে কম নয়। বার ও বেঞ্চের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত হতে পারে। অসহায় বিচার প্রার্থীদের জন্য বিনামূল্য মামলা পরিচালনা করতে আইনজীবীদের আহ্বান জামায়াত আমির। বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, দক্ষিণের নায়েবে আমীর ড. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ পেলেও গণতন্ত্রের দিশা খুঁজে পাচ্ছি না: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভিন্ন খাতের সংস্কার প্রস্তাবগুলো এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে গেছে। আমি অনুরোধ করবো সেগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে তারপর মতামত দিন। যাতে সবাইকে নিয়ে সামনের পথ এগোতে পারি। তিনি বলেন, আজকে আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশ পেলেও এখনো গণতন্ত্রের দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই বাংলাদেশের মূল আকাঙ্ক্ষা। বুধবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে এ ইফতারের আয়োজন করে বিএনপি। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুরুতে দলের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান মির্জা ফখরুল। ঐক্যে জোর দিয়ে ফখরুল বলেন, এ মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো নিরসন করা। বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে দলের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। গণতন্ত্রের পথে যাওয়ার বিকল্প নেই বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রুত নির্বাচনের কথা পরিষ্কারভাবে বলছি কারণ জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠন করা যায়। নির্বাচিত সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। বিএনপির ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিকর চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিজেপি মহাসচিব আবদুল মতিন সুদ প্রমুখ অংশ নেন।

ভারতের কাছ থেকে সবসময় ভালো আচরণ প্রত্যাশা করি: ফারুক
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। একটি ভালো প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা সবসময় তাদের কাছ থেকে ভালো আচরণ প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম সবসময় বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত থাকে। বিষয়টা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তারা অপপ্রচার করেই ক্ষান্ত হয় না, বরং যে কোনো ধরনের উসকানি দেওয়ার কাজে লিপ্ত থাকে, চক্রান্তেও লিপ্ত থাকে। বুধবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবীর বেপারীসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়ার মাজারে এ শ্রদ্ধা জানান ফারুক। বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী নানান উছিলায় দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ এমন সব বিষয় সামনে আসছে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বিব্রতকর। এর জন্য দেশের মানুষও লজ্জাকর অবস্থায় পড়ে যায়। এগুলোকে অনেকাংশে পতিত স্বৈরাচারের কাণ্ড-কারখানা বলেই মনে হয়। তিনি বলেন, কিছুদিন সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চলছিল। সেটি নিয়েও ভারতের মিডিয়াগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পানি ঘোলা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু দেশের মানুষ এবং প্রশাসন সতর্ক থাকায় খুব বেশি ক্ষতিসাধন করতে পারেনি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় আপনাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আপনার আশপাশের কিছু লোক আপনাকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছে। আমার বক্তব্য হলো, আপনি দুষ্টু লোকদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। ‘মনে রাখতে হবে, এসব চক্রান্তের মূল উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করা কিংবা একটি অরাজক অবস্থা তৈরি করে আপনাকে বিপদে ফেলা। কারণ, তারা জানে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারলে দেশের অবস্থা স্বাভাবিক থাকবে না। তাই বিনয়ের সঙ্গে বলবো, পরিস্থিতি ভালো থাকতে থাকতে আপনি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিন’- যোগ করেন জয়নুল আবদিন ফারুক। এসময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, এস এম মিজানুর রহমান, সুরঞ্জন ঘোষ, কালাম ফয়েজী, সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিন, রেজাউল করিম, আলমগীর হোসেন আলম, নাছির হোসেন বাবু, মহিদুল ইসলাম মামুন, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, নবি হোসেন, মজিবর রহমান, মুকুল ও কবীর হোসেন প্রমুখ।

নজরুল ইসলাম খানের সহধর্মিণী আর নেই
বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সহধর্মিণী অলিফা আকতার কান্তা ইসলাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থান ইন্তেকাল করেন তিনি। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি স্বামী, ১ ছেলে, দুই মেয়ে এবং নাতি নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন। অলিফা আকতার কান্তা ইসলাম মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক জানিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বলে জানান শায়রুল। তিনি জানান, মরহুমের নামাজে জানাজা বুধবার বাদ জোহর বনানী ডিওএইচএস মসজিদ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মরহুমকে রাজধানীর মিরপুরে শ্বশুর-শাশুড়ির করবের পাশে দাফন করা হবে।

ঢাকায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ১৬৯
রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সোমবার (১৭ মার্চ) বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে বিভিন্ন থানায় করা ৬৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের। মঙ্গলবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছে ১০ ডাকাত, ১১ ছিনতাইকারী, ৩ চাঁদাবাজ, ৮ চোর, ১২ মাদক কারবারি ও ২৯ পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িতরা। অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, একটি পিকআপ, পাঁচটি মোটরসাইকেল, পাচঁটি মোবাইল ফোন, আটটি চাকু, একটি চাপাতি, একটি বড় ছুরি, একটি লোহার রেঞ্জ, একটি রড, দুটি ককটেল সদৃশ বস্তু, একটি সিপিইউ, একটি মনিটর ও একটি প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া উদ্ধার মাদকের মধ্যে রয়েছে ২ হাজার ১৩২ পিস ইয়াবা ও ১৮ গ্রাম হেরোইন ও ২০০ গ্রাম গাঁজা। এদিকে ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাজধানীর ৫০ থানা এলাকায় জননিরাপত্তায় দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল দল দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০ ও দিনে ছিল ৩২৭টি দল। এ ছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি ৭১টি চেকপোস্ট পরিচালনা করে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নামে মামলা, ছাত্রদলের প্রতিবাদ
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের পদযাত্রায় বাধা এবং পুলিশ কর্তৃক গায়েবি মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান। নেতারা বলেন, দেশব্যাপী নারীদের প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতিতে দেশের সব প্রান্তে সচেতন ছাত্র-জনতা অব্যাহতভাবে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ মার্চ ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামক প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর গণপদযাত্রা করে স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে শাহবাগ এলাকায় তাদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাদী হয়ে প্ল্যাটফর্মটির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের ১২ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ৭০-৮০ জনকে আসামি করে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। যদিও মামলার আসামি হিসেবে এজাহারভুক্ত একাধিক ছাত্রনেতা ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন না। ছাত্রদল মনে করে, এ ধরনের মামলা ফ্যাসিস্ট রেজিমের গায়েবি মামলার সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি। এছাড়াও গভীর রাতে ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডকে নিজ বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করেছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি পুলিশের এমন আচরণে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা মনে করি ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা রেজিমের পতনের পরও পুলিশের আচরণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন হয়নি। ছাত্রদল নেতারা ছাত্রনেতাদের হয়রানি না করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নয়ন এবং নারী নির্যাতনের মামলাগুলোর দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের মুখোমুখি করা হচ্ছে: তারেক রহমান
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় যেতে পারে এমনটা স্পষ্ট হওয়ার পর দলটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় বিএনপির অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র ছিল তা আবারও শুরু হয়েছে। বিএনপির যখন অধিকাংশ মানুষের সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তখনই মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের মতো বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারেক রহমান বলেন, ধীরে ধীরে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও বিএনপির বিরুদ্ধে একটি বিশাল ষড়যন্ত্র গড়ে উঠেছে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের সহযোগিতা এখন বেশি করে প্রয়োজন। যুক্তি-তর্ক দিয়ে নতুন ভোটারদের বিএনপির প্রতি অনুপ্রাণিত করতে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, একটি মহল বিএনপি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এক এগারোর মতো বিএনপির বিরুদ্ধে নানা বানোয়াট অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের জন্য একটি জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মতপার্থক্য ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী দিনের সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হবে। দেশের উন্নয়নে সবসময় বিএনপি ভূমিকা রেখেছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, সংসদের মাধ্যমে জবাবদিহিতার সরকারই প্রকৃত উন্নয়ন করতে পারবে। স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিএনপিই আড়াই বছর আগে সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছে। এগুলো তরুণ ভোটারকে বোঝাতে হবে।

‘যুবদল পরিচয়ে কেউ দখল-বাণিজ্য করলে আটক করুন’
যুবদল পরিচয়ে কোথাও দখল-বাণিজ্য করলে অভিযুক্তকে আটক করে জানানোর আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। সোমবার (১৭ মার্চ) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, গুলিস্তানসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত দখল করে এক শ্রেণির দুষ্কৃতকারী জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘ্নিত করার পাশাপাশি ফুটপাত কেন্দ্রিক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামরত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন হিসেবে জাতীয়তাবাদী যুবদল এসব অবৈধ দখল-বাণিজ্য কেন্দ্রিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময়ই সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এ ধরনের কাজে যুবদলের কারও ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা দৃষ্টিগোচর হওয়া মাত্রই অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে বহিষ্কারসহ তার বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের অবৈধ দখল বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে যুবদলের পরিচয় ব্যবহার করে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ইমেজ ক্ষুণ্ন করছে। বিজ্ঞপ্তিতে যুবদল আরও জানায়, দলীয় পরিচয় ব্যবহারকারী এ ধরনের অপরাধীর প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক বন্ধুদের এবং এ জাতীয় অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন। এতে বলা হয়, যুবদলের পরিচয় ব্যবহার করে কোথাও দখল বাণিজ্যের কোনো ঘটনা পরিলক্ষিত হওয়া মাত্রই অপরাধীকে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আটক করে যুবদলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে (দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল, মোবাইল: ০১৮১৯২৯৫১০৬ এবং সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া, মোবাইল: ০১৭১২০৬১১৯৮) জানানোর জন্য সচেতন জনসাধারণ ও ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

আবারও দ্রুত নির্বাচনের কথা তুললেন মির্জা ফখরুল
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে আবারও অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১৭ মার্চ) তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা এখন যেটা চাইছি, অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চাইছি যে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমরা সবাই মিলে দায়িত্ব দিয়েছি, অতি অল্প সময়ের মধ্যে যেটা আমরা বার বার করে বলেছি, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে সমস্ত সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেই সংস্কারগুলো করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিকে যাবেন। কারণ আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে যে- যত দেরি হবে তত বেশি আবার বাংলাদেশে পক্ষের শক্তিকে পরাজিত করবার জন্য বিরুদ্ধ শক্তি-ফ্যাসিস্ট শক্তিরা আবার মাথাচাড়া দিতে শুরু করে দেবে এবং তারা শুধু নয় একই সঙ্গে যারা জঙ্গি মনোভাব পোষণ করে থাকে, যারা উগ্র মনোভাব পোষণ করে থাকে তারাও এই সুযোগগুলো নেয়ার চেষ্টা করবে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা একটা ভয়াবহ দানবীয় পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসেছি। আজকে সেখানে আমাদেরকে একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আমরা পত্রিকার পাতা খুললেই বিচলিত হয়ে পড়ি যে, আবার সেই দেখা যাচ্ছে যে, হত্যা-খুন-জখম-ধর্ষণ। এগুলো এমন একটা জায়গায় চলে যাচ্ছে যে, আমাদেরকে সকল উৎপীড়িত করছে। অন্যদিকে আমরা দেখছি যে, ইয়াং জেনারেশন অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। আবার দেখছি যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, অর্গানাইজেশনগুলো আছে তাদের কর্মীরা দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নেমে এসেছে।’ মির্জা ফখরুল লেখেন, ‘যত দ্রুত নির্বাচন হবে, যত দ্রুত জনগণের প্রতিনিধিরা সংসদে আসবে, সংসদে এসে একদিকে তারা দেশ পরিচালনা করবেন অন্যদিকে বাকি যেসব প্রয়োজনীয় সংস্কার আছে, সেগুলো আমরা এক সঙ্গে করতে পারব। বিএনপির পক্ষ থেকে বলতে চাই, সংস্কারের ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ৩১ দফা দুই বছর আগে দিয়েছি, যে সংস্কারের কথা কেউ বলেনি। সেই সংস্কারগুলো আজকে উঠে এসেছে। যার সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। সেজন্য আমরা মনে করি যে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত, নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা কিছুটা হলেও রক্ষা করা দরকার।’

অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের আরেকটি দল আসছে, নেতৃত্বে শিবিরের সাবেকরা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতাদের উদ্যোগে এপ্রিলে আরেকটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আসছে। যা ভবিষ্যতে রূপ নেবে রাজনৈতিক দলে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্ল্যাটফর্মের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটিতে (জানাক) ছিলেন শিবিরের সাবেক নেতারাও। এনসিপির শীর্ষ পদ নিয়ে বিরোধে তাদের একাংশ আলাদা হয়ে যায়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের দাবিতে তাদের নেতৃত্বে আরেকটি রাজনৈতিক দল আসছে। ঘোষণাপত্রে যুক্ত করা গ্রাফিতিতে দু’জন তরুণীসহ ছয়জনের মুখচ্ছবি রয়েছে। নারীদের একজন হিজাব পরা, অন্যজনের মাথা খোলা। তরুণদের একজন দাড়ি-টুপি জোব্বা পরা, একজন আদিবাসী। জামায়াতে ইসলামীর মতো ধর্মভিত্তিক নয়, এর মাধ্যমে মধ্যপন্থি দল গঠনের আভাস দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তারা সমকালকে জানান, রাজনৈতিক প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে প্ল্যাটফর্মটি। জনগণ চাইলে রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে। শুধু সাবেক শিবির নয়, সব মতের মানুষের জন্যই উন্মুক্ত থাকবে। শিবির ‘ট্যাগিং’-এ এনসিপিতে যাদের জায়গা হয়নি, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুত ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ পূরণের সম্ভাবনা না থাকায় যারা এনসিপিতে যোগ দেননি, তাদের নিয়ে হবে প্ল্যাটফর্ম। সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হবে। সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনের শুরু হয়। এতে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষও রাজপথে নামেন। আন্দোলন অভ্যুত্থানে রূপ নিলে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অভাবনীয় পতন ঘটে। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান অনুযায়ী, অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সহযোগীর ভূমিকায় ছিল আওয়ামী লীগ। অপরাধের মূল হোতা শেখ হাসিনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা সামনের থাকলেও নেতৃত্বে ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারাও ছিলেন। এছাড়া ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা আমলের শেষ দিকে নিষিদ্ধ হওয়া শিবির নেতারা সাংগঠনিক পরিচয়ে ছিলেন না আন্দোলনে। অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, শরফুদ্দিনসহ অন্তত ৩০ নেতা যোগ দেন জানাকে। তারা আলী আহসান জুনায়েদকে এনসিপির সদস্য সচিব পদে চেয়েছিলেন। ছাত্রশক্তি, ছাত্র অধিকার, ছাত্রলীগের পক্ষত্যাগী এবং বাম সংগঠন থেকে আসা নেতারাও নিজ নিজ বলয় থেকে শীর্ষ পদ চেয়েছিলেন। এ বিরোধে সাবেক শিবির নেতারা এনসিপিতে যোগ দেননি। যোগ না দেওয়া নেতাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ আমলে শিবির হত্যাকে যেভাবে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, নতুন দলেও শুধু অতীতে শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে নেতৃত্বে আসতে দেওয়া হয়নি। ট্যাগিংয়ের রাজনীতি অব্যাহত রাখা হয়েছে। রাফে সালমান রিফাত জানাকের যুগ্ম সদস্য সচিব ছিলেন। নতুন প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে তিনি সমকালকে বলেন, এনসিপি গঠন প্রক্রিয়ায় অনেক কিছুই ন্যায্য হয়নি। শুধু সাবেক শিবির নয়, কওমি মাদ্রাসা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকে তা মনে করেন। তাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণা করবে, এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। যা রাজনৈতিক প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। ঈদের পর পর জনগণের কাছে যাবে। জনগণ গ্রহণ করলে, রাজনৈতিক দল গঠিত হতে পারে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জানাকের সর্বশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয় কেন্দ্রীয় কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে বিলুপ্ত হবে। তাই জানাক আর কার্যকর নয় জানিয়ে রাফে সালমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের আরেক সাবেক সভাপতি মির্জা গালিবসহ যারা অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিলেন, তারাও নতুন প্ল্যাটফর্মে থাকবেন। প্ল্যাটফর্মের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ, ধর্মবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়ামুক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এবং আধিপত্যবাদের বিপক্ষে কার্যকর অবস্থান—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও সম্মান দেওয়া এখনও অসম্পূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থানের দাবিগুলোর প্রকৃত বাস্তবায়ন চাই। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন সম্ভব।

ক্ষমতায় এলে সব অন্যায়-জুলুমের বিচার নিশ্চিত করা হবে: তারেক রহমান
গুম-খুনের দায়ে শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিচার না হলে আবারও অন্যায়ের সুযোগ তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে সব অন্যায়-জুলুমের বিচার নিশ্চিত করা হবে। রোববার (১৬ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম, খুনের শিকার পরিবার ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ এবং তাদের জন্য ‘ঈদ উপহার বিতরণ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির প্রত্যাশা সামনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা হবে। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা দেশ পরিচালনা করবেন। তিনি আরও বলেন, আগামীতে যে সরকারই আসুক, যে মানুষগুলো দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্যাতিত হয়েছেন। তাদের অবশ্যই বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এসময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ও দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ও দলের কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা মো. আবুল কাশেম ও মোস্তফা জামান-ই সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী এবং গুমের শিকার হওয়া বিএনপি’র গণশিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শাম্মী আক্তার, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়জী, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।

শেখ সেলিমের হাজার কোটির কমিশন বাণিজ্য
বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে হাজার হাজার কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য পরিচালনা করতেন এক সময়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সবশেষ কয়েকটি সরকারে মন্ত্রিত্ব না থাকলেও শেখ পরিবারের প্রভাব কাজে লাগিয়ে গত ১৫ বছরে উন্নয়ন কাজে নিয়মিত কমিশন বাণিজ্য করে গেছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানের ১৩০০ কোটি টাকার কাজে পছন্দের ঠিকাদারের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে কমিশন গ্রহণ করার সুনির্দিষ্ট একটি অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ সেলিমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।রোববার (১৬ মার্চ) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিম। এরপর টানা চারটি সংসদে ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। শেখ মুজিবের ভাগনে হওয়ার সুবাদে মন্ত্রিত্ব না থাকলেও স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, সড়ক পরিবহনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদারি কাজের বড় অংশ ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। বিশেষ করে বৃহত্তর ফরিদপুর, খুলনা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের সব উন্নয়নকাজ ভাগবাটোয়ারা করতেন তিনি। বিনিময়ে মিলত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমিশন। দুদক সূত্রে জানা যায়, সরকারি কাজের নিয়ম অনুযায়ী কোনো কাজের দরপ্রস্তাবের তথ্য গোপন থাকে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বাইরে অন্য কারো এটি জানার কথা নয়। কিন্তু শেখ সেলিম প্রতিটি উন্নয়নকাজের জন্য দরপ্রস্তাব জমা দেওয়া ঠিকাদারদের আর্থিক প্রস্তাবের তথ্য পেয়ে যেতেন এবং এরপরই কাজ দেওয়া ও কমিশন নেওয়ার সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বনানীতে শেখ সেলিমের বাসায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজের হিসাব মিলেছে। বনানীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই নথিতে গোপালগঞ্জের ১১টি, চুয়াডাঙ্গার একটি, হবিগঞ্জের একটি, টাঙ্গাইলের একটি, ময়মনসিংহের একটি, ফরিদপুরের একটি, নাটোরের একটি, খুলনার তিনটি এবং রাজশাহীর দুটি প্যাকেজের দরপত্রের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। নথির পাতায় পাতায় বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে নির্বাচিত ঠিকাদার, কাজ শেষ করার সময় ও কমিশনের হার উল্লেখ রয়েছে। ওই নথির অনুলিপিসহ একটি অভিযোগ দুদকে জমা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গোপালগঞ্জেরই ১১টি উন্নয়নকাজ ১১ প্যাকেজে ভাগ করে ঠিকাদার নির্ধারণ হতো। এসব প্যাকেজে বাউন্ডারি ওয়াল, বিদ্যুতের সাব স্টেশন, গ্যালারি শেড, স্টেডিয়াম সংস্কার ও উন্নয়ন, হোস্টেল কাম অফিস ভবন, উইমেন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে জিমনেসিয়াম, স্টেডিয়াম ও স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গ্যালারি চেয়ার স্থাপনসহ নানা নির্মাণকাজের তথ্য রয়েছে। যার মধ্যে বিএফএল/এইচএলসি-জে/ভি নামে ১২ কোটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার; কিউ এইচ মাসুদ অ্যান্ড কোং নামে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩৯ হাজার; মেসার্স আনাম ট্রেডার্সের নামে ১০ কোটি ২২ লাখ ৫৬ হাজার; এ, এস-এ এটকো- জে/ভি নামে ৯ কোটি ৩৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকার কাজ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মার্কেন্টাইল কর্পোরেশনের নামে ১১ কোটি ৬৭ লাখ ৬৩ হাজার, বিএফএল-এএলসিএল জে/ভি নামে ১৩ কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার, কিউ এইচ মাসুদ অ্যান্ড কোং নামে ১৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭৮ হাজার, মেসার্স আনাম ট্রেডার্সের নামে ১১ কোটি ৭০ লাখ ৪২ হাজার টাকার কাজ দেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জের বাইরে চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, হবিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও নাটোরের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ রয়েছে।

বিএনপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না : মুরাদ
যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তাদের বিষয়ে আলেম ওলামাদের সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা জেলা যুবদল সভাপতি ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি ধর্মবান্ধব রাজনৈতিক দল কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। বিএনপি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জনসাধারণকে আদর্শ জাতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করে, বেহেশতে যাওয়ার টিকিট বিক্রি করে না।’ রোববার (১৬ মার্চ) ধামরাইয়ের কালামপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে স্থানীয় আলেম ওলামা, ইমাম ও খতিবদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলার ৮৫০টি মসজিদের ইমাম খতিব ও ১২০টি কওমি মাদ্রাসার ইমাম খতিবেরা উপস্থিত ছিলেন। ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন, ‘একটি দল পবিত্র ইসলাম ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। কুরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। বিএনপি বিশ্বাস করে, মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইসলামি মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির বিকাশ ঘটলে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে শান্তি, ন্যায্যতা, মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে।’ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা চাপিয়ে দিয়েছিল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস সংযোজন করে সংখ্যা গরিষ্ঠ মানূষের অনুভুতির প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। বিএনপি শহীদ জিয়ার সেই নীতি ধারণ করে চলেছে। ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মো. ইলিয়াছ। এতে উপস্থিত ছিলেন ধামরাই উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি আশরাফ আলী, কালামপুর উলামা পরিষদের সভাপতি আবু সাঈদ জিহাদি, মাওলানা ইদ্রিস আলী, মাওলানা উসমান গণি, মুফতি ইউসুফ বিন সিরাজ, মুফতি মো. রাকিব, মাওলানা আবদুল আলিম, মাওলানা আবদুল মজিদ, মাওলানা ফরহাদ, মো. ইবরাহিম. মুফতি মো. আরিফ প্রমুখ।
-67d6511b1863a.jpg)
আবরার হত্যাকাণ্ডের রায় দ্রুত কার্যকর চায় জামায়াত
বুয়েটের ছাত্র শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় উচ্চ আদালত ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখায় দ্রুত রায় কার্যকরের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার রোববার (১৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে এক ভয়াবহ নিষ্ঠুর ও পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, আবরার ফাহাদের পিতার মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র গঠন করা হয়। দুই পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ১৬ মার্চ হাইকোর্টের রায়ে সেই ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের যে রায় আজকে হাইকোর্ট দিয়েছেন, তার মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত হবে বলে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এ রায়ে আমরা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি বলেন, রায় দ্রুত কার্যকর হলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ন্যায় বিচার পাবে। বিচারের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইল ফলক তৈরি হবে, ইনশাআল্লাহ।

ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন
ধর্ষণের মামলায় ফাঁসির সাজা নির্ধারণসহ নারী ও শিশু নিপীড়ন রোধে পাঁচ দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ। এ দাবিতে শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন তারা। জামায়াতের হাজারখানেক নারী নেতাকর্মী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতের নারী নেতাকর্মীদের এত দিন সভা, সমাবেশ, মিছিলের মতো প্রকাশ্য কর্মসূচির দেখা যায়নি। নারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় বার্তা পৌঁছাতেন। ৫ আগস্টের পরও নারী নেতাকর্মীরা ছিলেন আড়ালে। তবে সপ্তাহখানেক আগে থেকে নারী নেতাকর্মীদের সামনে আনতে শুরু করেছে জামায়াত। প্রথম বারের মতো রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্য কর্মসূচি করছেন নারীরা। শনিবার জামায়াতের মহিলা বিভাগের মানববন্ধন থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘বেঁচে থাকা ও নিরাপত্তার অধিকার দাও', ‘ধর্ষকদের প্রকাশ্য জনসম্মুখে ফাঁসি চাই, দিতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি কর, করতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় জামিন বিধান বাতিল কর, করত হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় এক বিধান, এক শাস্তি; ধর্ষককে ফাঁসি দিবি, দিতে হবে’। জামায়াতের মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি নুরন্নিসা সিদ্দিকা বলেন, ‘মাগুরার শিশু আছিয়া হত্যার মামলার রায় এক সাপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। ধর্ষণের একমাত্র সাজা হবে ফাঁসি। ধর্ষকরা যুগে যুগে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় সমাজ থেকে ধর্ষণ দূর করা যায়নি। ধর্ষককে জনসম্মুখে ফাঁসি দিতে হবে। তাহলে আর কেউ ধর্ষণের সাহস পাবে না। ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলা নিষ্পত্তির ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই।’ জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সাবিকুন্নাহার মুন্নী বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকারের ছত্রছায়ায় ধর্ষণের বিস্তার হয়েছে সমাজে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন থাকলেও, পাঁচ দাবি বাস্তবায়ন না করলে নারী সমাজকে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে।’ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য নাজমুন্নাহার নীল, মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান ও মার্জিয়া বেগম।

গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: নাহিদ ইসলাম
গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র রিফর্ম প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রধানরা নিজ নিজ ক্ষেত্রের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।’সংস্কার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী যে প্রেক্ষিতে সরকার গঠিত হয়েছে–সংস্কার এবং বিচার– মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়ই করতে হবে। জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলকে এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করতে হবে।’সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে। অন্যথা পার্লামেন্টে সংবিধান টেকসই হবে না। ইউএন সেক্রেটারিও বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই যেন একটা ঐকমত্যে আসে।’নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে আমরা একটা সংস্কারের প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখি। সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন কাজে দেবে না। সব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে একমত। মতপার্থক্যটা হচ্ছে কোন সংস্কারটা কখন হবে। ইলেকশনের আগে কতটুকু হবে পরে কতটুকু হবে। আমরা মনে করি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে সেই মতপার্থক্যটা কেটে যাবে।’ বিচারের বিষয়ে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছি। তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।’

আওয়ামী লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
আওয়ামী লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শুক্রবার (১৪ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি। হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেন, যে পথ দিয়ে আওয়ামী লীগ পালিয়েছে, ঠিক সে পথ দিয়েই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবারও (১৩ মার্চ) প্রায় একইরকম দাবি করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। ওই পোস্টে হাসনাত লিখেছিলেন, এ নির্বাচনেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছে। ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগ নামে নতুন একটি ‘টেবলেট’ নিয়ে শীঘ্রই হাজির হবে। এনসিপির এ নেতা ওই পোস্টে আরও লিখেন, যারা এই পরিকল্পনা করছেন, আমি আপনাদেরকে সতর্ক করে দিচ্ছি, এখানে কোনো ‘ইফস’ এবং ‘বাটস’ নেই। তিনি লিখেন, বিচারের পূর্বে আওয়ামী লীগের যেকোনো ধরনের পুনর্বাসনের চেষ্টার আলাপ দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে। সুতরাং ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগের টেবলেট নিয়ে হাজির হবেন না। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে আর কোনো আলাপ নয়। ফুলস্টপ।

প্রত্যেক মা-বোন-কন্যার নিরাপত্তায় সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি কোনে প্রত্যেক মা, বোন ও কন্যার নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে শিগগির ব্যবস্থা নিতে হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান। তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে আট বছর বয়সী এক শিশুর ধর্ষণের পর মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের সবাইকে দুঃখ, লজ্জা ও শোকার্ত করেছে। দেশের শিশু ও নারীদের কখনোই সহিংসতা, নিপীড়ন ও হয়রানির মুখোমুখি হওয়া উচিত না। তিনি আরও বলেছেন, জাতি হিসেবে মানুষ হিসেবে আমাদের নিজেদের দিকে তাকানো দরকার, যেন দেশে এ ধরনের অন্যায় না হয়, তা নিশ্চিত করা যায় এবং যেখানে সবার স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি সম্মান রাখা যায়। এ ধরনের ভয়াবহ অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের জন্য তাদের পাশে থাকার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের দল বিএনপি দুটি সেল গঠন করেছে - একটি চিকিৎসা সহায়তার জন্য ও অপরটি আইনি সহায়তার জন্য। এই সেলগুলোতে বেশ কিছুসংখ্যক নারী চিকিৎসক ও আইনজীবী আছেন যারা ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারকে বিনামূল্যে, পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবেন। তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আবারও দায়িত্ব পালনের নেতৃত্ব দিতে এবং লিঙ্গ, ধর্ম বা রাজনৈতিক মতামত নির্বিশেষে সবার জন্য নিরাপদ, সমান ও ন্যায্য সমাজ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান সময়ে নির্যাতিত আছিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি কোনোভাবেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছেন না। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে অতিদ্রুত আইনের শাসন বলবৎ হবে। কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুষ্কৃতকারীরা নানাভাবে আশকারা পাচ্ছে।’ শুক্রবার (১৪ মার্চ) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর দুঃশাসনে শান্তি ও সামাজিক সংহতি বিনষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে সমাজকে দুর্গন্ধময় করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যের জমি দখল, লুট, টাকা পাচারের মহা উৎসবের মধ্য দিয়ে নিজের সিংহাসন অটল রাখতে সব ধরনের নোংরামিকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার শাসনের সমসময়ে হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী, শিশু নির্যাতন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর অকথ্য নির্যাতন, রাষ্ট্র ও সমাজের এমনই বিস্তার লাভ ঘটানো হয়েছিল, যাতে সভ্য, শিষ্ট, সজ্জন মানুষের বসবাস করা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছিল।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেই রেশ ধরেই এখনও নারী-শিশু নির্যাতনকারীরা যেন সুযোগের অপেক্ষায় ওঁতপেতে বসে রয়েছে। সম্প্রতি মাগুরায় বোনের শ্বশুর বাড়িতে বোনের শ্বশুর কর্তৃক ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ, কয়েকদিন চিকিৎসারত থেকে গতকাল তার মৃত্যুবরণ সারা জাতিকে বিমূঢ় বেদনায় বেদনার্ত করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা জাতির চোখ অশ্রুসজল। দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনে মানবিকতা, নৈতিকতা, ন্যায্যতা, ন্যায় বিচার অদৃশ্য করা হয়েছে। অপকর্মকারীরা অধিকাংশই ছিল শেখ হাসিনার দলের লোক। কারণ এরা জনসেবার চেয়ে আত্মসেবাকেই বড় করে দেখেছে।’ রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মানুষের সমবেত ধ্বনি ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা, কিন্তু সেটি যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেতে থাকবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে। প্রশাসন যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও মানবিক না হলে সমাজে অন্যায়-অবিচার এবং খুন, জখম, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকোপ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। অবিলম্বে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন বলবৎ করে সমাজে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা আবারও জোরালো দাবি করছি, ধর্ষণে নির্যাতিত শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অতি দ্রুত নিশ্চিত করা হোক।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি থেকে দেশব্যাপী নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ এবং “নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি এবং স্বাস্থ্য সহায়তা সেল” গঠন করা হয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলামসহ অনেকে।

আছিয়ার মৃত্যু সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে : তারেক রহমান
শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে গণমাধ্যমে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রেরিত এক বিবৃতিতে তারেক রহমান এ কথা বলেন। মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া গত কয়েকদিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মৃত্যুবরণ করে। আছিয়ার মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেছেন, নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে। আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একইসঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের।তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে একাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের। আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আধুনিক এ যুগে মানবজাতি এরূপ অমানবিক, পৈশাচিক এবং বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত হতে পারে, তা কল্পনাতীত। ধর্ষণ শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র। আমাদের সমাজে যে নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তাকরণ ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তারেক রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নারী হেনস্তা, হয়রানি, ধর্ষণ বা ধর্ষণের হুমকির মতো ঘটনা মানুষ আর প্রত্যাশা করে না। তারপরেও এ ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে আইনিভাবে। এ ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়। বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।