
আছিয়ার মৃত্যু সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে : তারেক রহমান
শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে গণমাধ্যমে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রেরিত এক বিবৃতিতে তারেক রহমান এ কথা বলেন। মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া গত কয়েকদিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মৃত্যুবরণ করে। আছিয়ার মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেছেন, নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে। আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একইসঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের।তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে একাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের। আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আধুনিক এ যুগে মানবজাতি এরূপ অমানবিক, পৈশাচিক এবং বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত হতে পারে, তা কল্পনাতীত। ধর্ষণ শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র। আমাদের সমাজে যে নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তাকরণ ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তারেক রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নারী হেনস্তা, হয়রানি, ধর্ষণ বা ধর্ষণের হুমকির মতো ঘটনা মানুষ আর প্রত্যাশা করে না। তারপরেও এ ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে আইনিভাবে। এ ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়। বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

১৩ মার্চ ‘আছিয়া দিবস’ পালনের প্রস্তাব জামায়াতের
পাশবিক নির্যাতনের শিকার মাগুরার শিশু আছিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে দিনটিকে (১৩ মার্চ) ‘আছিয়া দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মাগুরায় বর্বর নির্যাতনের শিকার শিশু আছিয়া ইতিহাসের করুণ সাক্ষী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সারা বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে চলে গেল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আল্লাহ তা’আলা তাকে একান্ত প্রিয় হিসেবে কবুল করুন, আমিন। মহান রবের দরবারে দোআ করি তিনি যেন আছিয়ার পিতা-মাতাসহ আপনজন নির্বিশেষে বিবেকবান দেশবাসীকে এই শোক সহ্য করার তাওফিক দান করেন। তিনি বলেন, ‘আছিয়ার এ করুণ পরিণতি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমাদের এ জনপদ শিশুদের জন্য কতটা অনিরাপদ। এই পাশবিক ঘটনা প্রমাণ করে আমাদের সমাজে ও মস্তিষ্কে পচন ধরেছে। অবক্ষয় হয়েছে সামাজিক মূল্যবোধের। এ মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ এবং মস্তিষ্কের সংশোধন এখন একান্ত জরুরি। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ বাংলাদেশকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে নিজ নিজ জায়গা থেকে সংশোধনের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এর অংশ হিসেবে ১৩ মার্চ ‘আছিয়া দিবস’ পালন করা যেতে পারে। যার মূল উদ্দেশ্য হবে শিশুদের সুরক্ষায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি। এর মাধ্যমে এমন সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে যেখানে শিশু, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষ থাকবে নিরাপদ।তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ নামের যে পশুরা পাশবিক লালসা চরিতার্থ করতে গিয়ে নিষ্পাপ এ শিশুটির জীবনের আলো নিভিয়ে দিল আমি তাদের কঠিনতম ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। ধর্ষকদের এ শাস্তি সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। এমন শাস্তি কার্যকর করতে হবে যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ।’ জামায়াত আমির বলেন, ‘আসুন, ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে এবং সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই যাতে আর কোনো আছিয়াকে এভাবে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে না হয়।’ তিনি বলেন, ‘এই পাশবিক ঘটনার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান এবং সেই সঙ্গে নিহত শিশুটির পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করার জন্য আমি সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে জামায়াতের বিবৃতি
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল’ মর্মে যে মন্তব্য করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিবৃতি প্রদান করে তিনি বলেন, গত ১২ মার্চ বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার দীর্ঘ এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল’ মর্মে যে মন্তব্য করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি তার এ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বক্তব্যে বিস্মিত। তিনি আরও বলেন, ‘মাহফুজ আলমের বক্তব্যের জবাবে আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই যে, তিনি জামায়াত সম্পর্কে ভিত্তিহীন ও অসত্য বক্তব্য দিয়ে একটি প্রতিবেশী দেশের গুপ্তচর কারাবন্দি শাহরিয়ার কবিরদের ভাষাতেই কথা বলেছেন।’ মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘মাহফুজ আলমের স্মরণ রাখা উচিত যে, তিনি একটি অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সে কারণে কোনো রাজনৈতিক দলকে টার্গেট করে সমালোচনা ও অসত্য বক্তব্য দেওয়ার কোনো নৈতিক ও বিধিগত অধিকার তিনি রাখেন না। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে হলে রাজনীতির ময়দানে এসে বক্তব্য দেওয়া সমীচীন। তার এ বক্তব্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অরাজনৈতিক চরিত্রকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মাহফুজ আলমের জানা থাকার কথা যে, শেখ মুজিবের আমলে যুদ্ধাপরাধের জন্য যে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিলো তাতে যুদ্ধাপরাধের সাথে জামায়াতের কারো সংশ্লিষ্টতার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে শেখ মুজিব নিজেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিয়েছিলো এবং আত্মসমর্পণকারী পাকিস্তানি সৈন্যদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়ে ঐ সমস্যার সমাধান করে গিয়েছেন। জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েই তিনি তার নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন। শেখ হাসিনা ক্যাঙারু কোর্ট বসিয়ে জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল এবং তাদের দলীয় লোকদের দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী সাজিয়ে জামায়াত নেতাদের যে বিচার করেছিলো তা দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে বিচারপতিদের ভয় দেখিয়ে যে বিচার করা হয়েছে তা ছিল বিচারের নামে একটি প্রহসন। তার প্রমাণ স্কাইপ কেলেঙ্কারি, সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্য, মাওলানা সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর বক্তব্য। এমনকি ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট-এ হাসিনা সরকারের ঐ বিচার গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, ১৯৭১ সালে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধের সহযোগী হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জনাব মাহফুজ আলমের বক্তব্যটি সম্পূর্ণ অসত্য, ভিত্তিহীন ও অনুমান নির্ভর। তবে তার এ বক্তব্য কোনো রাজনৈতিক অসৎ অভিপ্রায় থেকে বা কোনো অপশক্তির ইন্ধনে তাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের অপরিণামদর্শী আকাঙ্ক্ষা থেকেও হতে পারে বলে দেশবাসী মনে করে। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের লেখার জবাবে আমি সুস্পষ্ট ভাষায় আরও জানাতে চাই, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আহলে সুন্নত আল জামায়াতের পূর্ণ অনুসারী। জামায়াতের আকিদা বিষয়ে প্রশ্ন তোলা সম্পূর্ণ অবান্তর ও এখতিয়ার বহির্ভূত। জামায়াতে ইসলামী, ফরায়েজী জামায়াত, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলামের সাথে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে আসছে। ১৯৮৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, চরমোনাইর পীর মাওলানা ফজলুল করিম ও খেলাফত মজলিসের নেতা শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক, জমিয়তে ওলামা ইসলামের নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন খান, নেযামে ইসলামের নেতা বিখ্যাত আলেম খতিবে আযম মাওলানা সিদ্দিক আহমেদ ও চট্টগ্রামের বাইতুশ শরীফের পীর মাওলানা আবদুল জব্বারসহ এ দেশের হক্কানী পীর এবং আলেমগণ মিলে ইত্তেহাদুল উম্মাহ গঠিত হয়েছিল। এ থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, জনাব মাহফুজ আলম না জেনে-বুঝেই জামায়াত সম্পর্কে ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। আশা করি আমাদের এই বক্তব্যের পর তার মনের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং তার ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বক্তব্যের জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করবেন এবং ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।’

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দায়ে শেখ হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিৎ: আমান উল্লাহ আমান
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দায়ে শেখ হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে যশোরে একটি হোটেলে খুলনা বিভাগের ছয় জেলার সাবেক সংসদ, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ-নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনা আক্রোশের রাজনীতি করতেন। আক্রোশের বশবর্তী হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের তিনি গুম করেছেন, খুন করেছেন। বিভিন্নভাবে অত্যাচার জুলুম নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছিলেন। একই সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীরা। এখন সেই সব তথ্য বেরিয়ে আসছে। ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে শেখ হাসিনার নির্দেশে। ৫৭ সেনাকর্মকর্তা হত্যার দায়ে ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিত। বিএনপির গুম হওয়া নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে দেওয়া দাবি জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনে বিএনপির শীর্ষ-নেতাদের হারিয়েছি। অনেক নেতা গুম হয়েছে। সর্বশেষ ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা গুম হয়েছে তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। শেখ হাসিনার আর দেশে ফেরত আসার সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, হাজার হাজার নেতাকর্মীর রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। দেশ প্রতিনিয়ত গণতান্ত্রিক ধারায় ধাবিত হচ্ছে। গণহত্যার বিচার হচ্ছে। শেখ হাসিনার বিচার হবে। এ বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। আসার সুযোগ নেই। তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। ষড়যন্ত্র চলছে। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের লক্ষে পৌঁছাতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গড়তে হবে। খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় খুলনা বিভাগের ছয় জেলা যশোর, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষনেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত দেন। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান যশোর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আমান উল্লাহ আমান।

মাগুরার শিশুটি আমাদের লজ্জা দিয়ে বিদায় নিয়েছে: ফখরুল
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে ‘নরপশুদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে শিশুটির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর তাৎক্ষণিক শোক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের গণমাধ্যমে পাঠানো শোক বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, মাগুরার কয়েকটা নরপশুর নিষ্ঠুরতা তার মতো এক শিশুর ওপর দিয়ে গিয়েছিল। ক্ষতচিহ্ন নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় সংগ্রাম করে শিশুটি জগতের মায়া ছেড়ে আমাদের কতটা লজ্জা দিয়ে ও কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি এই ‘নরপশুদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জীবনমৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মারা যায়। সম্প্রতি বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন আট বছর বয়সী ওই শিশুটি। গত ৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওইদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরদিন ৭ মার্চ (শুক্রবার) রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে গত ৮ মার্চ (শনিবার) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএইচের পিআইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।

ফেসবুকে নাহিদ-জামায়াতের আমিরের ছড়িয়ে পড়া ছবিটি এআই দ্বারা তৈরি
সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক না হিদ ইসলাম এবং জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের চুম্বনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিনও তার ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করেন। তবে ছবির এ দৃশ্য এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে বলে ‘রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ গ্রুপ’ থেকে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ১২টার দিকে সোহান আরএসবি নামের প্রোফাইল থেকে রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ গ্রুপে করা এক পোস্টে এ দাবি করা হয়। ওই পোস্টে তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক পোস্টের ছবি শেয়ার করে বলা হয়, নাহিদ ইসলাম এবং জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের এই ছবির চুম্বন দৃশ্যটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে ওই দৃশ্যের মতো কোনো কিছু ঘটেনি। এছাড়াও, নাহিদ ইসলামের হাতে ওই অনুষ্ঠানে ঘড়ি না থাকলেও এই ছবিতে ঘড়ি দেখা যায়, তার পাঞ্জাবির কাফ-এ এমব্রয়ডারি করা থাকলেও ওই ছবিতে সেটি নেই।

এবার হাসনাত আব্দুল্লাহর ‘ফুলস্টপ’!
জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে করা এক পোস্টে ‘ফুল স্টপ’ বলে সংক্ষিপ্ত মন্তব্য করেছেন। বুধবার (১২ মার্চ) রাতে সাদিকুর রহমান খানের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস শেয়ার করে এ মন্তব্য করেন তিনি। হাসনাতের শেয়ার করা সাদিকুর রহমানের স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, শাহবাগ এমনি এমনি অ্যাক্টিভ হয়নি। শাহবাগকে অ্যাক্টিভ করা হয়েছে বিশেষ একটা কারণে। আওয়ামী লীগকে নিয়েই ইলেকশন করার ছক দিল্লী থেকে চলে এসেছে। পেছনের অনেকগুলো শক্তি এই ব্যাপারে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে ‘ভালো’ আওয়ামী লীগারদের নিয়ে আওয়ামী লীগকে আপাতত ইলেকশনের মাঠে তোলা হবে। এরপর আওয়ামী লীগের মিটিং মিছিল বা হরতালে আর কোনো বাঁধা দেওয়া যাবে না। এরপর একে একে আওয়ামী লীগের নেতারা দেশে ফিরে আসবেন। এক বা দুই টার্ম পর কোন এক সুষ্ঠু ইলেকশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা হবে। যেমন ২০০৮ সালে আনা হয়েছিল। স্পষ্ট করে বলছি, এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা ইউনূসের নাই। তবে এই ক্ষমতা আমাদের তথা জনগণের আছে। একটা কথা মনে রাখবেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছিলো। এই উদারতার কাফফারা জিয়া নিজের প্রাণ দিয়ে দিয়েছিলেন। ২০০৯ এ আসার পর তো আর্মি অফিসারদের উপর ম্যাসাকার করলো। এবার যদি আসতে পারে, আমাদের খুঁজে খুঁজে ওরা খুন করবে। আমরা কেউ বেঁচে থাকতে পারবো না। কাজেই, উত্তরপাড়া থেকে যেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেই উদ্যোগের বিরুদ্ধে এখনই যদি সরব না হন, আমার আপনার মৃত্যুপরোয়ানা জারি হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের বিচার হওয়ার আগে কোন ইলেকশনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না। মিছিল করতে পারবে না। মিটিং করতে পারবে না। রক্তের দাগ শুকায় নাই। এই রক্তের মর্ম উত্তরপাড়া বুঝবে না, কারণ রক্ত তো আর ওরা দেয়নি। রক্ত দিয়েছি আমরা। এই দায়ও আমাদেরই। কোন ভালো আওয়ামী লীগ খারাপ আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা যেতে চাই না। আমাদের কাছে আওয়ামী লীগের একটাই পরিচয়। আওয়ামী লীগ খুনি। আমাদের ভাই বোনদের হত্যাকারী। খুনিদের স্থান ইলেকশন না। খুনিদের স্থান কারাগার। আশার কথা হলো, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখন পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্রে তাল দেয় নাই। বরং বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক, এইটা বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোরও চাওয়া। এই চাওয়া নিয়ে অনতিবিলম্বে জাতীয় ঐক্য চাই। ইলেকশন জুনে হোক, জুলাইয়ে হোক, ডিসেম্বরে হোক, কোন আপত্তি নাই। বাট সেই ইলেকশনে আওয়ামী লীগ থাকতে পারবে না। নৌকা মার্কা থাকতে পারবে না, এইটা হলো কথা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আনার চেষ্টা যে করবে,তাকেই জাতীয় শত্রু ঘোষণা করতে হবে। এক জুলাই গেছে, প্রয়োজনে আমরা আবার রাস্তায় নামবো। তাও আওয়ামী লীগের ফিরে আসার কোন রিস্ক আমরা নিতে পারবো না। আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। যেভাবে ইউরোপ নাজিদের নিষিদ্ধ করেছে। এর বাইরে গিয়ে ভালো আওয়ামী লীগের মুখোশ পড়িয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কোনো নির্বাচন এই দেশে হতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, আওয়ামী লীগকে রেখে ইনক্লুসিভ ইলেকশন চায়, এবার আর সুশীলতার ধার ধারবো না। আপা গেছে যেই পথে, তাকে বা তাদেরকেও সেই পথেই যেতে হবে। লাউড এন্ড ক্লিয়ার।

ফ্যাসিবাদের শাহবাগী ক্রীড়নক আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে : শিবির সভাপতি
শাহবাগের ক্রীড়নক, যাদের পাটাতনে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছিল, তারা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, জুলাইয়ের স্পিরিটের আলোকে নতুন বাংলাদেশ গড়ায় এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের কোনো বিকল্প নেই। বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর নয়া পল্টন জোনাকি কনভেনশন হলে ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির, ডা. শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তাফা হায়দার, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধানসহ রাজনৈতিক, সাংবাদিক, সামাজিক, ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা। ইফতার পূর্ব সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৬ বছর ছিল আমাদের জন্য এক দীর্ঘ চ্যালেঞ্জিং যাত্রা। এই সময়ে আমরা ফ্যাসিজমের করালগ্রাসে শতাধিক ভাইকে হারিয়েছি, ফ্যাসিজমের নির্যাতনে আমাদের অসংখ্য ভাইয়ের শরীর থেকে রক্ত ঝরেছে, আমাদের অনেক ভাই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, হাজার হাজার ভাই গুম হয়েছেন, অনেকে ফিরলেও এখনো ৬ জন ভাই গুম অবস্থায় আছেন। আমাদের অসংখ্য ভাই স্বাভাবিক ছাত্রজীবন কাটাতে পারেননি, অনেকে ছাত্রজীবন শেষ করতে পারেননি। জনশক্তিরা সবসময় ক্যাম্পাসে ভীতিকর অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছেন। গেস্টরুম, র্যাগিং, মানসিক টর্চার—এসব অন্যায়ের শিকার হয়েছেন অসংখ্য ভাই। এই সব দমনপীড়নের কথা আমরা কখনো ভুলতে পারব না। অবশেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আল্লাহ আমাদের এ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে একক কোনো মাস্টারমাইন্ড নেই উল্লেখ করে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, সেই অভ্যুত্থানে ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন। ফ্যাসিজমের পতনের আন্দোলনে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে ছাত্র-জনতার সঙ্গে সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে চেষ্টা করেছি। একটি ইমারত নির্মাণের জন্য অনেক উপকরণের প্রয়োজন হয়। ইমারত নির্মাণে ছোট-বড় কোনো উপকরণকেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। সবগুলো উপকরণের সংমিশ্রণেই একটি ইমারত নির্মিত হয়। তেমনি জুলাই অভ্যুত্থানও অনেক স্টেকহোল্ডারের সমন্বিত চেষ্টার মধ্য দিয়ে সফল হয়েছে। এজন্য এ আন্দোলনে কোনো একক মাস্টারমাইন্ড নেই, কোনো একক নেতা নাই। আমরা মনে করি, এ আন্দোলনের মূল ক্রেডিট আমাদের শহীদ ও আহত হওয়া ভাইদের। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে জুলাইয়ের সে স্পিরিটের আলোকে নতুন বাংলাদেশ গড়ায় ভূমিকা রাখা। তিনি বলেন, এই আন্দোলনে আমাদের দলীয় শহীদদের তালিকা আমরা প্রকাশ না করে সব শহীদদের সম্মিলিত তালিকা প্রকাশ করেছে। আমরা এই আন্দোলনে সবার অংশগ্রহণকে স্বীকার করি। তিনি আরও বলেন , জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছি। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে ট্রমা তৈরি হয়েছিল, সেই ট্রমা কাটিয়ে উঠা এবং ছাত্ররাজনীতির গুণগত সংস্কার সাধন করে একে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা কাজ করছি। জুলাইয়ের স্পিরিটকে জাগিয়ে রাখার জন্য আমরা জুলাই এক্সিবিশনসহ বিভিন্ন আয়োজন করছি। আমরা ফ্যাসিস্ট আমলের ভয়ের সংস্কৃতি ভেঙ্গে সবার জন্য বিকশিত হওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। তাই নিজেদের ব্যাপকভিত্তিক ছাত্রকল্যাণ ও সেবামূলক কাজে নিয়োজিত রেখেছি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রশিবির সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরা আমাদের এ কাজগুলোকে আরও বেগবান করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ইফতার মাহফিলে দোয়া পরিচালনার আগে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যে জাতির শিক্ষা যত উন্নত সে জাতি বিশ্বের বুকে ততটাই মর্যাদাপূর্ণ। আফসোস আমাদের স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী বেশি সময় পার করে আসলেও আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদর্শ চরিত্রবান দেশপ্রেমিক তৈরির কারখানা হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার ক্যাম্পাসগুলোতে বিপরীতে দেখছি অস্ত্র, রক্ত, লাশের স্তূপ। দেশবাসী শিক্ষার ক্যাম্পাসগুলোতে এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্য আর দেখতে চায় না। তিনি আরও বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে দফায় দফায় জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার প্রত্যাশা করেছিল। সেই প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি। চব্বিশের আন্দোলন ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে নতুন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। আমরা সাধারণ অভিভাবক হিসেবে প্রত্যাশা করি, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেন শিক্ষা ও গবেষণার কেন্দ্রে পরিণত হয়। চরিত্রবান দেশপ্রেমিক নাগরিক যেন বের হয়ে আসতে পারে। ইসলামী ছাত্রশিবিরকে বাংলাদেশের বিদগ্ধ, পরীক্ষিত ছাত্র সংগঠন উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে তাদের প্রিয় সঙ্গী সাথীদের হারিয়েছে, অনেক মেধাবী ছাত্র জুলুমের শিকার হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। বিশেষ করে চব্বিশের যে দ্বিতীয় স্বাধীনতার আন্দোলন, সেখানে চোখের সামনে পাখির মতো গুলি করে সন্তান ও সহকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের শহীদান কবুলে দোয়া ও আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাশের মিছিল আর দেখতে চায় না দেশবাসী: জামায়াত আমির
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্র, রক্ত আর লাশের মিছিল দেশবাসী আর দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর পল্টনে ছাত্রশিবিরের বিশিষ্টজনদের নিয়ে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সয়ম ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনে সবার অবদানকে মর্যাদা দিতেই কারো তালিকা প্রকাশ করেনি ছাত্রশিবির। ফ্যাসিস্ট আমলের সব কিছুতে পরিবর্তন আনতে কাজ চলছে। ভালো কাজগুলোকে আরও বেগবান করতে চান বলেও জানান জাহিদুল।পুলিশের ওপর প্রকাশ্যে হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে শিবির সভাপতি বলেন, ‘যাদের কারণে ফ্যাসিস্ট মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, সেই শাহবাগীরা আবারও জেগে উঠেছে। তাদের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।’

বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয়: মির্জা আব্বাস
‘বাংলাদেশ কারেও তালুকদারি নয়’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে শাহজাহানপুর বিএনপির এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় নির্বাচন বিলম্ব নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি গণতন্ত্রের জন্য, কথা বলার জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য। আজকে যখন ভোটের সময়ে আসছে, এখন বলেন এটা না করলে ভোট হবে না, ওটা না করলে ভোট হবে না… কেন রে ভাই কেন?’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো দেশটাকে বাপের তালুকদারি ভেবেছিল—যার কারণে যা খুশি তাই হয়েছে। আপনারাও কি তা-ই ভাবেন? এই বাংলাদেশ কারও তালুকদারি নয়। এই বাংলাদেশ জনগণের। সুতরাং, কথাবার্তা বলার সময়ে হিসাব করে বলবেন। যাতে আমাদের বেহিসাবি কথা বলতে না হয়।’ মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেকের ভেতরে কিছু লোভী রাজনীতিবিদ আছেন, কিছু লোভী রাজনৈতিক দল আছে, যারা শুধু বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা করে। কার্য্কর কোনও বিরোধিতা নয়। এই দলগুলো পাকিস্তান সৃষ্টির লগ্ন থেকে, ভারত বিভক্তি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শুধু বিরোধিতাই করে গেলো। দেশপ্রেমের লেশমাত্র তাদের ভেতরে নাই। তারা দেশকে ভালোবাসে না, দেশের মানুষকে ভালোবাসে না।’ ‘তারা ভালোবাসে যেভাবে হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে, যেভাবেই হোক ক্ষমতায় যেতে হবে। আমাদের তো আপত্তি নেই—দেশের মানুষ যদি ভোটের মাধ্যমে আপনাদের ক্ষমতায় নেয়, আপত্তির কী আছে? ভোটে আসেন। ভোটকে ভয় পান কেন? নির্বাচনকে ভয় পান কেন?’ নির্বাচনের বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘যারা লম্বা লম্বা কথা বলেন আজকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না, তারা বুকে হাত দিয়ে বলেন—এই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আপনাদের ক’জন নেতাকর্মী শাহাদাতবরণ করেছেন? বিএনপির ৪২২ জন নেতাকর্মী শাহাদাতবরণ করেছেন, শহীদ হয়েছেন এক মাসে। আপনাদের কয়জন হয়েছে?’ রাজধানীর ঢাকা মহানগরের দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শাহজাহানপুর রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব মাঠে বিএনপির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। ‘গণমাধ্যমের সমালোচনা’ মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আজকাল অনেক দলের কথা পত্র-পত্রিকায় লেখে না, অনেক দলের খারাপ কথা লেখে না, ভালো কথা হয়তো লেখে দুই-একটা।’ ‘আর বিএনপির ভালো কথা লেখে না। খারাপ দুই-একটা লিখে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘একটা কথা আছে না… সব পাখি মাছ খায় দোষ পড়ে মাছরাঙার। এখন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে সহজ। মরহুম সাইফুর রহমান সাহেব বলতেন, সিলেটি ভাষায় বলতেন—হাড্ডির পাশের মাংস খাইতে খুব মজা লাগে। বিএনপির একটি বড় দল, গোছানো দল, সুন্দর দল—এই দলের বদনাম করতে খুব মজা লাগে মানুষের।’ ‘বিভিন্ন দল একযোগে, বিভিন্ন টেলিভিশন একযোগে, বিভিন্ন ইউটিউবার একযোগে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে। এগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে আমাদের কাজের মাধ্যমে। জনগণের পাশে থেকে তাদের বোঝাতে হবে বিএনপি ছাড়া এ দেশের মানুষের কোনও বন্ধু নাই।’ ‘চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করুন’ মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক বদনাম করতেছে কিন্তু ওই লোকগুলো। অপকর্ম করে তারা, চাঁদাবাজি করে তারা, দুষ্কর্ম করে তারা, চাপিয়ে দেয় বিএনপির ওপরে। এসব চাঁদাবাজদের প্রতিরোধ করতে হবে, প্রতিহত করতে হবে মুখের কথা অথবা কাজে।’ ‘যদি না করেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব বারবার বলেছেন, যদি জনগণের মন থেকে উঠে যান… আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, তার চেয়েও ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। সাবধান থাকবেন।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবার নামে না, দুই-একজনের নামে অভিযোগ আছে। আমার একটা এলাকায় একশত কর্মী আছে, দুইটা কর্মী খারাপ, বদমাইসি-অপকর্ম করে। কিন্তু আমার ৯৮ জন কর্মী তো খারাপ না। সুতরাং, দুজন লোকের জন্য আমার সব কর্মী কালিমালিপ্ত হবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না।’ ‘যদি কোনও চাঁদাবাজ ঢুকে পড়ে কিংবা আসে… অনেক চাঁদাবাজ কিন্তু আওয়ামী লীগ… এখন দলের মধ্যে আছে। সব দলেই বিএনপিতে আছে, জামায়াতে আছে এবং অন্যান্য সংগঠনের ঢুকে গেছে তারা। সব দলে কম-বেশি আশ্রয় নিয়ে নিয়েছে। তাদের চিহ্নিত করেন, চিহ্নিত করে ওদের দল থেকে বের করে দেন, অথবা পুলিশে সোপর্দ করেন।’ মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ওরা ঢুকতে পারে, কিন্তু চিহ্নিত করে একটা একটা করে দল থেকে বের করে দেবেন, দলে ওদের অবস্থান হবে না।’ ‘বিএনপিতে কোনও অপকর্মকারী, কোনও দুষ্কৃতকারী, কোনও চাঁদাবাজের জায়গা নাই, হবে না, কেন খারাপ লোকের জায়গা বিএনপিতে হবে, এই কথা মনে রাখবেন।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এই সরকারের কোনো নির্বাচনই বিশ্বাসযোগ্য হবে না: জিএম কাদের
নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ‘নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেছেন, “জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। মিছিল, সমাবেশ ও ইফতার অনুষ্ঠানের মত অহিংস এবং সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জাতীয় পার্টি। “সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এই সরকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না। এই সরকারের কোনো নির্বাচনই বিশ্বাসযোগ্য হবে না।” বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করে জিএম কাদের বলেন, “ঢালাওভাবে সবাইকে আওয়ামী লীগের দোসর বানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীদের জীবনেরই নিরাপত্তা নেই। এমন ভয়ার্ত পরিস্থিতি স্মরণকালে নেই বললেই চলে।” আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান অপব্যবহার করেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি ও দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে অপব্যবহার করেছিল। ফলে জনস্বার্থে এগুলোর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। “কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে হয় ভেঙেচুরে তছনছ করে ফেলেছেন, অথবা পূর্বের আওয়ামী লীগ সরকারের ন্যায় একইভাবে অপব্যবহার করছেন। এক কথায় প্রতিষ্ঠানসমূহের ধ্বংসের ধারাবাহিকতা অপরিবর্তিত আছে।”

ধর্ষণ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশের হামলার নিন্দা ৫ দলীয় বাম জোটের
ঢাকার হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের মোড়ে ‘ধর্ষণ এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে আয়োজিত রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের হামলা ও লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে৫ দলীয় বাম জোট। বুধবার (১২ মার্চ) গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতিতে জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট কেন্দের সাধারণ সম্পাদক বিধান দাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) সভাপতি এমএ সামাদ, সাধারণ সম্পাদক শাহীদুর রহমান, সোস্যালিস্ট পার্টির সভাপতি শাহীন আহমেদ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সভাপতি তালেবুল ইসলাম ও সমতা পার্টির সভাপতি সামছুল হক এ প্রতিবাদা জানান। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘রমজান মাসে প্রতিদিনই দেশে গড়ে ১০ জন করে নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এই ধর্ষণ কান্ডে গর্ভবতী নারী, বিধবা এমনকি শিশুরাও রেহাই পায়নি। সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, মায়ের সামনে কন্যাকে ধর্ষণ মধ্যযুগীয় বর্বরতা কে হার মানিয়েছে। ধর্ষণ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য ধর্ষকদের উৎসাহিত করছে। সরকার বা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সেই সময় দেশের বিবেকবান ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ প্রতিরোধের অঙ্গীকার নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়, পুলিশ প্রশাসন ধর্ষণ প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে ও ধর্ষণ বিরোধীদের উপর হামলা ও নির্যাতন করে তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্র প্রকাশ করেছে।’ নেতৃবৃন্দ এই হামলার নিন্দা ও দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। সেই সাথে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবী করেছেন।

পলকসহ ছাত্রলীগের দুই নেতা রিমান্ডে
ঢাকার ধানমন্ডি থানার হত্যা মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ফের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিয়াম রহমান ও আনোয়ার হোসেন নাঈমের ৪ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট ধানমন্ডি থানাধীন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন ভুক্তভোগী রিয়াজ। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় গত ১০ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন নিহতের মা শাফিয়া বেগম।

আওয়ামী লীগের যাবতীয় অপকর্মের বৈধতা দিয়েছে শাহবাগ: হাসনাত আব্দুল্লাহ
আওয়ামী লীগের শাসনের সময় শাহবাগ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে গুম, খুন, আয়নাঘর, বিচারিক হত্যাকাণ্ডসহ যাবতীয় অপকর্মের বৈধতা দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বুধবার (১২ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘শাহবাগ একদিনে গড়ে ওঠেনি। এককভাবে কেউ শাহবাগ গড়ে তোলেনি। শাহবাগ কায়েম করতে সমর্থন দিয়েছিল তথাকথিত সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, আমলা, সাংস্কৃতিক কর্মী, বিদেশি এজেন্ট, রাজনীতিবিদ এবং ক্রীড়াবিদরাও।’ জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা লিখেছেন, ‘শাহবাগ কেড়ে নিয়েছিল এদেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা থেকে শুরু করে সব ধরনের মৌলিক মানবাধিকার। কেড়ে নিয়েছিল স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে গুম, খুন, আয়নাঘর, বিচারিক হত্যাকাণ্ডসহ যাবতীয় অপকর্মের বৈধতা দিয়েছিল শাহবাগ।’ হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও লেখেন, ‘শাহবাগ কায়েমে যারা সচেষ্ট ছিল, তাদেরই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বিগত পনেরো বছরে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদেরই সমর্থনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ক্ষমতার মসনদে ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এ সমন্বয়ক লিখেছেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আমরা বিগত পনেরো বছরে সংঘটিত সকল অন্যায়, অপকর্ম, গুম, খুন ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে চাই।’ হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘আমরা আশা রাখি, সকলের প্রচেষ্টায় তা সম্ভব। ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ জমিনে ইনসাফ কায়েম হবে। জুলাইয়ের শহীদদের স্পিরিট রক্ষায় আমরা সদা জাগ্রত। পুনরাবৃত্তি করছি, বিগত শাসনামলে হওয়া সকল অন্যায় ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’ এর আগে আরও একটি পোস্টে তিনি সাবধান করে দিয়ে বলেন, ‘২০২৫-এ এসে ২০১৩ ফেরানোর চেষ্টা করবেন না।’

শেখ হাসিনার জব্দ করা এক ব্যাংক হিসাবে আছে ৫ টাকা
আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা থাকার তথ্য আদালতকে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ৩টি ব্যাংক হিসাবে কত টাকা জমা হয়েছে, সেই তথ্য উল্লেখ নেই। একটি হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ মাত্র পাঁচ টাকা। আরেকটি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১৫০ টাকা। একটি ব্যাংক হিসাবে সর্বোচ্চ জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ ব্যাংক হিসাবটি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার যৌথ হিসাব। এ ছাড়া অবরুদ্ধ করা আরও একটি যৌথ ব্যাংক হিসাব রয়েছে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নামে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মোট ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসাব ১০টি এবং শেখ হাসিনার ব্যাংক হিসাব ১৭টি। এই ২৭টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৪১ কোটি ৬৬ লাখ ১ হাজার ৫৬৮ টাকা। আলাদা করে আওয়ামী লীগের ১০টি ব্যাংক হিসাবে আছে ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১০ টাকা এবং শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা থাকার তথ্য আদালতকে জানানো হয়েছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন মঙ্গলবার ওই ১২৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন। দুদকের তথ্যানুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় আওয়ামী লীগের একটি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৪ টাকা। এ ছাড়া বেসরকারি একটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় আওয়ামী লীগের তিনটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। ওই তিনটি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ২০ কোটি ৬৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৭০ টাকা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী তহবিল-২০০৮ নামে দুটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। একটি ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৯১৯ টাকা। আরেকটি ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫৬০ টাকা। এর বাইরে আওয়ামী লীগের আরও চারটি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। একটি বেসরকারি ব্যাংকের আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসেবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫৬০ টাকা। অন্য তিনটি ব্যাংক হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৪ লাখ ২৭ টাকা ২২৭ টাকা। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের ১০টি ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১০ টাকা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ১৫টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৬ টাকা। এর বাইরে শেখ রেহানার নামে ছয়টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। তাতে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৭ টাকা। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দুটি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ১৭ লাখ ১৫ হাজার ২৭১ টাকা জমা থাকার তথ্য পেয়েছে দুদক। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ২৯টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পেয়েছে দুদক। এসব ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৪৬৬ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৬ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ‘শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানাসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১২৪টি ব্যাংক হিসাবের বিস্তারিত তথ্য আদালতের কাছে তুলে ধরে দুদক। কোন ব্যাংকের, কোন শাখায়, কোন হিসাবে, কত টাকা জমা হয়েছে, সেসব বিবরণ আদালতের কাছে প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরা হয়েছে। তবে ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা থাকা এসব অর্থের স্থিতি কত তারিখের, তা এই প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।’ দুদকের তথ্যানুযায়ী, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদের ‘সুধা সদন’ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। শেখ রেহানা ও রাদওয়ান মুজিবের গাজীপুরের সম্পদ জব্দেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আরেক মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনই তিনি পালিয়ে ভারতে যান। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক মামলার তথ্য জানা গেছে। এর বাইরে দুদকও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ছয়টি মামলা করেছে।

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক। এ সময় তিনি দলটির নারী নেত্রীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতের ছবি জামায়াতের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়েছে। জামায়াতের নেত্রীদের কূটনৈতিকদের সঙ্গে সাক্ষাতের নজির নেই। মঙ্গলবার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াত কার্যালয়ে যান সারাহ কুক। দলটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জামায়াত আমিরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের। তারা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, আগামী নির্বাচন, মানবাধিকার, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন। সারাহ কুকের সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর টিমোথি ডকেট।

গণজাগরণ মঞ্চ-২ হওয়ার শঙ্কায় হাসনাত আব্দুল্লাহর সতর্ক বার্তা
দেশজুড়ে অব্যাহত নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ মোট ৯ দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ অঙ্গন। প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ধর্ষণ, খুন, ছিনতাইসহ আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকালে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের সদস্যের সঙ্গে পুলিশের মারামারি হয়েছে। সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্র সংগঠনগুলো। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি আগামী ১৫ মার্চ (শনিবার) বেলা ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে গণমিছিলের ডাক দেন তারা। এ অবস্থায় শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ-২ হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। দ্বিতীয় গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অন্যতম নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। পাশাপাশি তিনি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেছেন। বুধবার (১২ মার্চ) রাতে হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ফেরিফায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ২০২৫ এ এসে ২০১৩ ফেরানোর চেষ্টা করবেন না। সাবধান! হাসনাতের স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করছেন, একটি নির্দিষ্ট মহল গণজাগরণ মঞ্চ-২ আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এতে সামনের সারিতে থাকবে বাম ধারা ছাত্র সংগঠনের নেতারা। পেছনে থাকবে ছাত্রলীগের কর্মীরা। অনেকে বলছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে আরেকটা গণজাগরণ মঞ্চ বসাতে চায় পতিত আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের শঙ্কা, দুইদিন আন্দোলনকারীরা শাহবাগে অবস্থান করলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের লাখ লাখ কর্মীও যোগ দেবেন। গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম নেতা লাকি আক্তার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিলে অংশ নিয়েছেন, পাশাপাশি বক্তব্য রেখেছেন। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এবং গণজাগরণ মঞ্চের পরিচিত মুখ লাকি আক্তার বলেন, ‘দেশজুড়ে মানুষ ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে এ সরকার নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।’ লাকি আক্তার পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘ধর্ষণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিরসনের দাবিতে আগামী ১৫ মার্চ সকাল ১১টায় শাহবাগে গণমিছিল আয়োজন করা হবে।’ সাধারণ মানুষকে মিছিলে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। এদিকে, বুধবার (১২ মার্চ) মধ্যরাতে সেই লাকি আক্তারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। মিছিল থেকে তারা লাকিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। লাকি আক্তারের বিরুদ্ধে মিছিলকারী ঢাবি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তিনি শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ-২ আয়োজনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছেন। এ জন্য শিক্ষার্থীরা তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন।

দেশ ধ্বংসে অবৈধ টাকা খরচ করছেন হাসিনার ব্যবসায়ীরা: মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, গত ১৭ বছরে অবৈধভাবে যেসব ব্যবসায়ী টাকা কামিয়েছেন, এখন তারা দেশ ধ্বংস করতে সেই টাকা খরচ করছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সফলতার শেষ মুহূর্তে গত বছরের ৩ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবসায়ী সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আব্বাস বলেন, ব্যবসায়ীদের অনেকের নামে হত্যা মামলা থাকলেও, কেন তারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন না। শুধু ব্যবসায়ী নন, সচিবালয়ে খবর নেন– সেখানে আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও অবস্থান নিয়ে আছে। একটি বিশেষ দলকে নিয়ে কেউ সংবাদ প্রকাশ করে না বলে অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, আপনারা শুধু বিএনপিকে নিয়ে নিউজ করেন। ওই দলকে কারা টাকা দেয়, কারা হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করে দেয়– সেটিও জাতির সামনে প্রকাশ করতে অনুরোধ করেন তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক রেখেই আমাদের পথ চলতে হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সাংবাদিকতার বিকাশে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এখনও কেন বাতিল করা হয়নি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, দলের কঠিন দুঃসময়ে সাংবাদিকরা আমাদের অন্যতম ভরসা ছিলেন। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মিডিয়া সেলের সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল ও সদস্য শাম্মী আক্তার। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, যারা একাত্তর মানে না, মুক্তিযুদ্ধ মানে না– এ দেশের মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকার তাদের নেই। এমনকি ভোটে প্রার্থী হওয়ারও যোগ্যতা-অধিকার নেই। এ সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গঠিত এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে জননেতা মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন। সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কৃষক দলের তকদীর হোসেন মো. জসিম প্রমুখ।

জনগণের সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: তারেক রহমান
সমালোচনা করতে গিয়ে রাজনীতিবিদরা যেন জনগণের দাবি থেকে সরে না আসে সে বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এমনটা ঘটলে দেশের সব সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। এজন্য জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানীর শুটিং ক্লাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, আমরা একজন আরেকজনের বাস্তবধর্মী সমালোচনা অবশ্যই করব। কিন্তু সমালোচনা করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে যাতে না যাই, যেখানে দেশ ও জনগণের এই ইস্যুগুলোকে চিহ্নিত করতে ভুলে যাব এবং আমাদের কাছে অন্য কিছু মুখ্য হয়ে যাবে। এটি যদি হয় তাহলে এদেশের সম্ভাবনা সব শেষ হয়ে যাবে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা জনগণকে ঘিরে রাজনীতি করি। আজকে দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। রাজনীতিবিদরা কেনো এসব বিষয়ে বেশি বেশি ডিবেট করছে না যে, আমরা কিভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা সাজাবো? উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো হবে? কেনো এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। জাতির সামনে এসব নিয়েও কথা বলা উচিৎ। আমাদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা গণতন্ত্র ও একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সবাই ঐকমত্য। যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে। এখন সংস্কারের বিভিন্ন আলোচনা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে আমরা যারা রাজনৈতিক দলগুলো আছি, আমরা আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছি-ভালো একটা পরিবর্তনের জন্য। মানুষের ভোটের অধিকার ও কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। এখন বিভিন্নজন বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন। আলোচনা হচ্ছে। আমরা যেহেতু আড়াই বছর আগে প্রথম উপস্থাপন করেছি। তারপরেও আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। জাতি, মানুষ ও দেশের ভালোর জন্য যেকোনো বিষয়ে আলোচনা হতেই পারে। সংস্কার কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের বিষয়গুলো তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, এখানে আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বলতে পারি, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনগণ এবং দেশ। এই মুহূর্তে সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা, অবশ্যই এটি প্রয়োজন আছে। কেনো আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে থেকে আরও কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি না। যেমন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে মানুষ কত কষ্টে আছে, চিকিৎসা ব্যবস্থা, খাল খনন ও কৃষি উৎপাদান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা নিয়ে কেনো আমরা রাজনৈতিক দলগুলো এবিষয়ে আলোচনা করছি না? বিএনপি মনে করে এবিষয়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক ব্যবস্থা এবং ভোটের ব্যবস্থা যেমন আলোচনা হওয়া উচিত, তারচেয়ে বেশি কিংবা সমান আলোচনা হওয়া উচিত-কিভাবে মানুষের সমস্যার সমাধান করবে। এছাড়া আমরা রাজনৈতিক দলগুলো জাতির সামনে পরিবেশ সংস্কারের ব্যাপারে কি সংস্কার উপস্থাপন করতে পারি এবং ২০ কোটি মানুষ খাবার ও ব্যবহারের পানি সরবরাহ করতে পারি-এটি কি সংস্কার প্রস্তাব হতে পারে না? তারেক রহমান বলেন, মূল বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র, সেটি হচ্ছে একটি মানবিক বাংলাদেশ। যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে বহুল আলোচিত বিষয় হচ্ছে, সংস্কার। আমরা সব রাজনৈতিক দলগুলো বিগত ১৫ বছর ধরে আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছি। এই আন্দোলন করেছি, জনগণের ডাকাতি করে নেওয়া অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সেটাতে আমরা সফল হয়েছি। তারেক রহমান বলেন, প্রায় ২০ কোটি মানুষের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কি হবে? বাজার ব্যবস্থা কী হবে? এসব নিয়ে কথা বলার নামও তো সংস্কার। শুধু কী নির্বাচনের সময় জাতীয় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বললেই কী সংস্কার? যাতে মানুষ মিনিমাম চিকিৎসা সুবিধা পায় সেটিও ভাবতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে হলে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। এ বিষয়েও ডিবেট বা কর্মপরিকল্পনা থাকা উচিত প্রত্যেকটি দলের। শিক্ষা ব্যবস্থাকে কিভাবে দেখতে চাই। সেটিও সংস্কারের অংশ। এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদি আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন, এবিপার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, জাগপার সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, ইউএসএ অ্যাম্বাসি প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন পলিটিক্যাল অফিসার জেমস এ স্টুয়ার্ট এবং ভারতীয় অ্যাম্বাসি প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

চকবাজারে মার্কেট দখল নিয়ে যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
রাজধানী ঢাকার চকবাজারে হাজী সেলিম ক্রোকারিজ মার্কেট দখলকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে যুবদলের ইসহাক গ্রুপ এবং মিন্টু, নাহিদ, মইন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন- রাব্বি (২০), আরমান (২৫) কারী মিজান (৪০), আলমগীর (৩০), আল আমিন (২৩) ও রুবেল সিকদার (২০)। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাহ আলম বলেন, মারপিটে আহত অবস্থায় ছয় জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। আর একজনের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয়রা জানান, একমাস আগে যুবদলের ইসহাক বুড়িগঙ্গা বেড়ীবাঁধ এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের এমটিসি ক্রোকারিজ মার্কেটটির দখল নেয়। তারপর থেকে যুবদলের পক্ষ মিন্টু, নাহিদ, হায়দার ও মইন গ্রুপ মার্কেটটি তাদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

বিচার-সংস্কার দাবিতে দ্রুত রাজপথে নামার ঘোষণা জাতীয় নাগরিক পার্টির
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা ও নির্যাতনকারীদের বিচার এবং সংস্কারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা ও সংস্কারের দাবিতে শিগগির রাজপথে নামবেন তারা। সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শহীদ পরিবার এবং আহতদের নিয়ে দলের ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেছেন। নাহিদ বলেন, শহীদ পরিবার শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের খুনিদের আসামি করে শত শত মামলা করেছে। যদি এর বিচার ছাড়া আরেকটি সরকার চলে আসে তাহলে কী নিশ্চয়তা আছে, আওয়ামী লীগকে আবার এই বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করা হবে না? অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোকে এবং সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে আওয়ামী লীগের ফয়সালা কী হবে। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ করা হচ্ছে আমরা নাকি নির্বাচন পেছানোর রাজনীতি করছি। খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আপনারা বিচার ও সংস্কার পেছানোর রাজনীতি করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের জন্য এত তাড়াহুড়া করে, ভোট চাইতে গেলে কিন্তু সেই জবাবদিহি তাদের দিতে হবে।’ কতদিনের মধ্যে কোন প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম হবে এবং সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে তার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ অবিলম্বে ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমরা তা ধরে রাখতে চাই। আমরা কেউ নির্বাচনের বিরুদ্ধে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব বলেই নিজেরা দল গঠন করেছি। কিন্তু আমরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বলেছি গণপরিষদ নির্বাচন, কারণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সংবিধান অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য আমরা কারও ওপর নির্ভর করতে চাই না, তাই নিজেরাই মাঠে নেমে দাবি বাস্তবায়ন করতে চাই। শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধাদের মনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের সবার বুঝতে হবে। তিনি আরও বলেন ৫ আগস্ট দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে দিয়েছে। দেশে ফ্যাসিস্ট রাজনীতির আর কোনো জায়গা হবে না। দেশে মব তৈরির রাজনীতির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইসলাম ধর্মকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা-ষড়যন্ত্র অনেক গ্রুপ করছে। আমরা সেগুলো প্রতিহত করব। এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে নির্বাচন চাই, কিন্তু যে খুনি হাসিনার হুকুমে এতগুলো প্রাণ গেছে সেই খুনির বিচার হওয়ার আগে কোন মুখে শুধু নির্বাচনের কথা বলে? বিচার না চেয়ে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নির্বাচনের কথা বলতে লজ্জা লাগে না?’ ইফতার অনুষ্ঠানে শহীদ জাবির ইবরাহীমের বাবা নওশের আলী বলেন, খুনিদের বিচারের আগে কোনো রকম নির্বাচন চাই না। আগে বিচার হবে তারপর সংস্কার হবে। আমরা আর চব্বিশ, নব্বই, একাত্তরের রক্তক্ষরণ চাই না। আশুলিয়ায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের লাশ ভ্যানে স্তূপ করে রেখে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। আমরা মা, আমরা কীভাবে মেনে নিতে পারি, কত কষ্ট করে সন্তানকে বড় করেছি। সেই সন্তানকে কুকুর-বিড়ালের মতো কীভাবে মারা হলো। আমার সন্তানকে মারার উত্তর না খোঁজা পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’ ইফতার অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনীম জারা, আহত আসিফ শাহরিয়ার।

জামায়াতের নারী নেত্রীদের ওপর বিএনপির হামলা ফ্যাসিবাদকে হার মানিয়েছে: গোলাম পরওয়ার
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ঝিনাইদহের মহেষপুরে জামায়াতের নারী নেত্রীদের ওপর বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদেরও হার মানিয়েছে।’ সোমবার (১০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ঝিনাইদহের মহেষপুরে জামায়াতের নারী নেত্রীদের ওপর বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশবাসীরঅবগতির জন্য আমি উল্লেখ করছি যে, রোববার (৯ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে মহেশপুর উপজেলা বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামের খাইরুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় নারীদের নিয়ে বিশ্ব নারী দিবসের আলোচনা সভা করছিল। এ সময় ওই এলাকার বিএনপির সন্ত্রাসী আল আমিন, ঝুমুর, সাহেব, সোহেল ও আশরাফুল হাতুড়ি, কাঁচি ও বাঁশের লাঠি নিয়ে জামায়াতের নারী নেত্রী হাসিনা খাতুনসহ অন্য নারীদের ওপর হামলা করে এবং খারাপ ভাষায় তাদের গালিগালাজ করতে থাকে।’ জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা সালেহা বেগমকে বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এ ছাড়া আসামিরা হাসিনা খাতুনকে খাইরুল ইসলামের বাড়ি থেকে ধাক্কা মারতে মারতে রাস্তার ওপর এনে বাম কানে দুটি চড় মারেন।’ ঝিনাইদহে জামায়াতের নেত্রীদের ওপর বিএনপির সন্ত্রাসীদের হামলা ও নারীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।

পাঁচ দেশ ও কেম্যান আইল্যান্ডসে শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে
চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংসহ পাঁচটি দেশ ও কেম্যান আইল্যান্ডস দ্বীপপুঞ্জে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। শফিকুল আলম বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) ও যৌথ তদন্ত দল অনুসন্ধানে অবৈধভাবে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সম্পদের সন্ধান পেয়েছে।বিজ্ঞাপন প্রেস সচিব বলেন, ‘বিএফআইইউ ও যৌথ তদন্ত দলের অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং পশ্চিম ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপ কেম্যান আইল্যান্ডসে শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে রাশিয়ান ‘স্ল্যাশ ফান্ডের’ অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।’ শফিকুল আলম বলেন, ‘১২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬৩৫ দশমিক ১৪ কোটি টাকা, রাজউকের ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা (দলিল মূল্য) মূল্যের ৬০ কাঠা প্লট ও ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জমিসহ ৮টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএফআইইউ দুটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকাসহ ১১টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে। সব ব্যাংক হিসাবের তথ্য দুদকে পাঠানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এছাড়া প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মোট ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। ছয়টি মামলার তদন্ত সম্পাদন ও চার্জশিট দাখিল এবং পরিবারের সাত সদস্যকে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।’

ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে: সভাপতি
ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি বলেন, ‘মাগুরায় আমাদের বোনকে যারা ধর্ষণ করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ সোমবার (১০ মার্চ) হাইকোর্ট গেটের সামনের সড়কে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন। মানববন্ধনে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটি থেকে আসা প্রায় হাজারখানেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘দিনের পর দিন নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা গতানুগতিক ধারার বক্তব্য শুনতে পাচ্ছি। সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব আমরা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করছি।’ তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনরা ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাজ পথে নেমে এসেছে। তারা ক্লাস বর্জন করেছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সমর্থন জানাচ্ছি। আমাদের বোনের ধর্ষকদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ ছাত্রদলের সভাপতি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরের সমাজ ব্যবস্থা যে পরিমাণে ধ্বংস হয়েছে, আমরা সেটির পরিবর্তন চাই। আমরা বিশ্বাস করি, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যদি কোনো সরকার গঠিত হয়, তাহলে সেই সরকার নারী নির্যাতন বন্ধ করবে।’ অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যতদিন রয়েছেন, দয়া করে আজ থেকে আপনারা আরও বেশি সচেষ্ট হন। প্রতিটি ধর্ষণ, নিপীড়নের ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সুনিশ্চিত করেন। এছাড়াও অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে না পারলে আমরা আপনাদের ওপর আঙুল তুলতে বাধ্য হবো।’ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল সরকার। এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ দেশের সব মানুষ সমর্থন দেওয়ার পরেও তারা কিন্তু আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তারা উন্নতি করতে পারেনি। আপনারা দেখেছেন মাগুরাতে আট বছরের শিশুকে কীভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু এ দেশের কিছু মানুষ নারীদের পোশাক নিয়ে বার বার কথা বলে। নারীদের পোশাক যদি সমস্যা হতো তাহলে কীভাবে আমার আট বছরের বোন ধর্ষনের শিকার হয়, ছাত্রদল প্রশ্ন রাখতে চায়। বাংলাদেশের গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠেছে সেজন্য গত সাত বা আট মাস ধরে নারীর প্রতি যে সহিংসতা যে নির্যাতন সেগুলো কিন্তু ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণের কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। ছাত্রদল আহ্বান জানাচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই আইন-আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কঠোর করতে হবে।’