আবার ইসির কাছে শাপলা প্রতীক চেয়ে আবেদন এনসিপির
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:৫২ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

শাপলা প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে ফের নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার, দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের স্বাক্ষরে একটি চিঠি নির্বাচন কমিশনের সচিবের কাছে পাঠানো হয়। এর সঙ্গে পাঠানো হয়েছে শাপলা প্রতীকের সাতটি ভিজ্যুয়াল নমুনাও।
চিঠিতে এনসিপি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, “গণমানুষের সঙ্গে শাপলা প্রতীক কেন্দ্রিক গভীর সংযোগ স্থাপিত হয়েছে এবং এটি ব্যতীত ইসির দেওয়া তালিকা থেকে অন্য কোনো প্রতীক পছন্দ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রতীক সংক্রান্ত আলোচনার একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে, যার অংশ হিসেবেই এই আবেদন পুনরায় করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার ৯(১) ধারা অনুযায়ী প্রতীক তালিকা হালনাগাদের উদ্যোগ নেয়। এনসিপির দাবি, ইসির সংশ্লিষ্ট কমিটি ১৫০টি প্রতীক নিয়ে একটি চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছিল। এ বিষয়ে ৪ জুন একটি বৈঠকে অংশ নিলে ইসির এক কর্মকর্তা আশ্বস্ত করেন যে চূড়ান্ত তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এর আগে ২২ জুন এনসিপি নিবন্ধনের আবেদন করে এবং শাপলা প্রতীক সংরক্ষণের অনুরোধ জানায়। পরে ৩ আগস্ট একটি চিঠিতে প্রতীক পছন্দক্রম অনুযায়ী ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা এবং ৩. লাল শাপলা চেয়ে ইসিতে আবেদন করে দলটি।
তবে এনসিপির অভিযোগ, ৩ আগস্ট ও ২৪ সেপ্টেম্বরের আবেদনগুলো কমিশন এখনো নিষ্পত্তি না করেই ৩০ সেপ্টেম্বর একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যা তারা বিধিবহির্ভূত বলেই মনে করে।
চিঠিতে এনসিপি আরও উল্লেখ করেছে, “সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীসহ দেশের ১০১ জন বিজ্ঞ আইনজীবী ইতিমধ্যে শাপলাকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে মত দিয়েছেন।”
এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “‘শাপলা’ প্রতীক এনসিপিকে না দেওয়াটা খুব বেশি আইনি জটিলতা বলে আমি মনে করি না, এটা দেওয়া যেতেই পারে।”
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও এনসিপির জন্য শাপলা প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে তার দলের ইতিবাচক অবস্থান জানিয়েছেন বলে দাবি করেছে দলটি।
চিঠিতে এনসিপি দাবি করেছে, শাপলা প্রতীক না দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত আইনি ভিত্তির চেয়ে বরং রাজনৈতিক পক্ষপাত ও মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। তাদের ভাষায়, কমিশনের এমন আচরণ একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এনসিপি আরও অভিযোগ করেছে, নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করছে এবং প্রতীক না দিয়ে একটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত, বৈষম্যমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী’ আচরণ করছে, যা দলের নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করছে।
চিঠির শেষ অংশে এনসিপি নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার ৯(১) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা বা ৩. লাল শাপলা প্রতীকগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি তাদের বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দলটির আশা, নির্বাচন কমিশন ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দ্রুত এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।