বিজিবির আর্মি অফিসারকে এখনো গ্রেপ্তার হয়নি: নাহিদ ইসলাম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১০:১০ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক আর্মি অফিসারকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি যা তিনি উদ্বেগজনক বলে দেখছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় মানবতাবিরোধী এক মামলার সাক্ষ্য দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে এই অভিযোগ করেন তিনি।
সাক্ষ্য দেয়া মামলাটি অনুষ্ঠিত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জুলাই আগস্টে সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত এতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। নাহিদ জানান, ঘটনার তদন্তে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদেরও দায়ের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে এবং এই কারণে আদালত ও সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে অপরাধীকে বিচারের মুখে নিয়ে আসা হোক, বাহিনীভেদ বিবেচনা ছাড়াই।
নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা রামপুরা-বাড্ডার ঘটনায় দেখেছেন, বিজিবির একজন আর্মি অফিসার, তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ফলে ট্রাইব্যুনালের কাছে, যে অপরাধী, তাকে যেন বিচারের আওতায় আনা হয়। সে কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, পুলিশ, মিলিটারিসহ অন্যান্য বাহিনীর যারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনায় জড়িত, তাদের যাতে বিচারের আওতায় আনা হয়। কোনো বাহিনী থেকে যাতে কেউ পার পেয়ে না যায়, সেটা আমাদের কাছে স্পষ্ট থাকতে হবে। আমরা দেখেছি, গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। আমি নিজে অভিযোগ দিয়েছি, ডিজিএফআইয়ের যেসব কর্মকর্তা আমাকে তুলে নিয়ে গেছে, আমাকে হেনস্তা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে।
নাহিদ দ্রুত গ্রেপ্তার ও যথাযথ বিচারের দাবি করেন এবং অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান যে, তিনি নিজেও গুম ও নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, যারা জনগণের ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, গুম করেছে বা নির্যাতন করেছে এবং ক্ষমতাসীনদের সহায়তায় স্বৈরশাসকশৈলীর পুনরুদ্ধার চেয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তার বক্তব্যের আরেকটি অংশে তিনি বলেন, যারা জনগণের ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, গুম করেছে, নির্যাতন করেছে এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছে, ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছে, তাদের সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
নাহিদ আরও বলেছেন, তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে হাজির হওয়া মৃত্যু-আহত ও নির্যাতনের ঘটনা বিচারঅধীন আনা হবে বলে চান। তিনি প্রতিবেদন শেষে যোগ করেন, বিচার প্রক্রিয়া যদি দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে চলতে পারে তবেই সমাজে দিকনির্দেশনা দাঁড়াবে।
শেষবার তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি ন্যায়বিচারের। এত মানুষ, আমাদের ভাই-বোনেরা শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে, রক্ত দিয়েছে। আওয়ামী লীগ, পুলিশসহ যারা জড়িত, তারা বিচারের আওতায় আসবে, তাদের শাস্তি হবে। এটা ন্যায়বিচারের একটা নিদর্শন হয়ে থাকবে শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, সারা পৃথিবীর জন্য। যে বা যারা স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়, জনগণকে হত্যা করে, তার পরিণতি আসলে কী হয়।