ডাকসু-জাকসু নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে: ডা. জাহিদ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৪৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তাঁর মতে, এই নির্বাচনগুলো ঘিরে একাধিক পক্ষের সরে দাঁড়ানো প্রমাণ করে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর মানুষের আস্থা ক্ষুন্ন হয়েছে।
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে ছাত্র সংসদের যে নির্বাচন হচ্ছে এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গতকালকে যে জাকসু নির্বাচন হয়েছে সেখানে শুধু ছাত্র দলের কথা কেন বলেন, সেখানে বিভিন্ন প্যানেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী, ইভেন শিক্ষকরা পর্যন্ত নির্বাচন থেকে অনেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। নিশ্চয়ই সেখানে কোনো না কোনো কারণ আছে।”
দেশের সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “কাজেই আমার বক্তব্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট, দেশের মানুষ ২০০৯-এ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪-তে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮-তে দিনের ভোট রাতে হয়েছে, ২০২৪-এ আমি-ডামি নির্বাচন হয়েছে। মানুষ নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখতে চায়। সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে এমন কোনো নির্বাচন আয়োজন না করা, যে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন আসবে, মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হবে, নির্বাচন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী দলসমূহ সরে যাবে।”
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের সময় প্রাণ হারানো সাংবাদিক ও শিক্ষকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন, সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম ও শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বিভক্ত রাজনীতির ফলাফলের ব্যাপারে সতর্ক করে ডা. জাহিদ বলেন, “বিভক্তিতে স্বৈরাচার ফেরার পথ সুগম হবে। কোনো বিভেদ-বিভাজন আপনাকে আমাকে শক্তিশালী করবে না। মনে রাখতে হবে স্বৈরাচার পালিয়েছে… স্বৈরাচার ফেরত আসার পথ সুগম হবে না। কিন্তু কেউ যদি স্বৈরাচারকে পুনর্বাসিত করতে চান তাহলে এই ধরনের প্রহসনমূলক ব্যবস্থার আয়োজন করবেন যেটি সত্যিকার অর্থে শেষ বিচারে ভালো বলে পরিগণিত হবে না।”
সব পক্ষকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনো সময় আছে, সবার প্রতি আহ্বান, ঐক্যবদ্ধ হন। গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করেছেন তারা কোনো অবস্থাতেই বিভাজনের রাজনীতিতে যাবেন না। ঐক্যের রাজনীতিতে আসুন। জনগণের মনের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। জনগণের উপর দায়িত্ব দিন।”
নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, “যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের বলব, বামেও যাবেন না ডানেও যাবে না…মধ্যবর্তী অবস্থা অবলম্বন করুন এবং ভোটারদের সঙ্গে, জনগণ ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলুন। কোনদিকে হেলে পড়ার দরকার নেই। আপনি আপনার নিরপেক্ষতা দিয়েই প্রমাণ করবেন এবং আগামী দিনের ভবিষ্যৎ স্বীকৃতি দেবে আপনার অবস্থান কী ছিল। কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে, সেই নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা শিক্ষকরা সরে দাঁড়াবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।”
সংবিধান সংস্কার প্রসঙ্গে ডা. জাহিদ বলেন, জনগণের রায়ের ভিত্তিতেই ঠিক হবে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রীয় কাঠামো কেমন হবে। তিনি বলেন, “জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনের সংবিধান কী হবে, সংস্কার কী ধরনের হওয়া উচিৎ। জনগণ যাদেরকেই নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবে, তারাই ৩৬ জুলাইয়ের যে আদর্শ এবং উদ্দেশ্য, সর্বোপরি এ দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করেই আগামী দিনে সংসদে সংস্কার হবে। সেই সংস্কারের মাধ্যমেই বাংলাদেশ ভবিষ্যৎমুখী বাংলাদেশ, অর্থাৎ আগামীর বাংলাদেশ ৩১ দফার আলোকে বিনির্মাণে বিএনপির দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্ব দেবেন।”