গুম বন্ধে রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরি: ছাত্রশিবির সভাপতি


গুম বন্ধে রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরি: ছাত্রশিবির সভাপতি

গুম বন্ধে রাজনৈতিকভাবে দৃঢ় সিদ্ধান্ত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

শনিবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত গুমকৃতদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, “নির্মম ও অমানবিক গুম মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গুম বন্ধে রাজনৈতিক দৃঢ় সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে গুমের সংস্কৃতির চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকেরই রাজনীতি করার স্বাধীনতা এবং আইনগত সুবিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিগত সময়ে যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের জন্য এই সাংবিধানিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা হয়নি। বরং তাদের উপর গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন এবং রিমান্ডের মতো নিপীড়ন চালানো হয়েছে। যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার চেষ্টা করা হয়েছে।”

সভায় জাহিদুল ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের পর একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, যেখানে অতীতের সকল অবিচারের সুষ্ঠু ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এই আশায় গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থায়, যেমন র‌্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে, গুম কমিশনের তথ্য-উপাত্ত জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমাদের সাতজন ভাইয়ের কোনো খোঁজখবর পাওয়া যায়নি।”

সভায় সরকারের প্রতি পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়:
১. অনতিবিলম্বে গুম হওয়া সবাইকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে অথবা তাদের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানাতে হবে।

২. প্রতিটি গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩. বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে ব্যবহৃত সব ‘আয়নাঘর’-এর বিস্তারিত তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।

৪. গুমকৃত ব্যক্তিদের পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং যারা গুম থেকে ফিরে এসেছেন তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. র‌্যাব, পুলিশসহ দেশের সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ সংস্কার করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ গুম, খুন বা ক্রসফায়ারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধ সংঘটিত করতে না পারে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী, গুম হওয়া শফিকুল ইসলামের ভাই সাদেক হোসেন, রেজোয়ান হোসেনের ভাই রিপন হোসেন, মুকাদ্দাস আলীর পিতা আব্দুল হালিম, হাফেজ জাকির হোসেনের ভাই জিয়াউর রহমান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ এবং তথ্য সম্পাদক আবু সায়েদ সুমন প্রমুখ।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×