জামায়াত নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই রাজনীতি করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়: রিজভী


February%204%202025/rizvi.jpg

জামায়াত একদিকে মনোনয়ন দিচ্ছে, আরেক দিকে ভোট পেছানোর দাবি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘জামায়াত ৩৩ থেকে ৩৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে, অথচ এখন তারা নির্বাচন পেছাতে চায়।’ 

রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে এসব কথা বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘আপনারা (জামায়াত) নির্বাচন পেছাতে চান কেন? বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে ৫ আগস্ট।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দেড় বছর সময় পাওয়া যাবে। এত সময় কি সংস্কার করার জন্য যথেষ্ট নয়?’
পরোক্ষভাবে জামায়াতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একদিকে তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে, অন্যদিকে কিছু আসনে প্রার্থীও দিচ্ছে। এটাই হলো দ্বিচারিতা।’

রিজভী বলেন, ‘জনগণের মনোভাব বুঝতে জামায়াতের ইতিহাসই ব্যর্থ।

১৯৭১ সালে তারা যদি জনগণের মন বুঝত, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করত না। তারা ১৯৮৬ সালে এরশাদের অধীনে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনে যেত না। তারা সব সময় জনগণের মতামত উপেক্ষা করেছে। আসলে তাদের কাছে জনগণই কোনো বিষয় নয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জামায়াত নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই রাজনীতি করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই তো তারা একা নির্বাচন করলে দু-একটার বেশি আসন পায় না।

রিজভী বলেন, ‘এই দেশের বেশির ভাগ মানুষ মুসলমান, আর মুসলমানরা কথা রাখে। কিন্তু তারা (জামায়াত) কোনো দিন কথা রাখে না। খালেদা জিয়াই কথা রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশবাসী এখন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘কিছু দল হয়তো নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থান জোরদার বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে।’

তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কোনো দল বা ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে বাড়তি সময় দেবে না। আমরা চাই তারা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক। কারণ, রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক দায়িত্বই নির্বাচিত সরকারের।’

আওয়ামী লীগের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা একসময় অংশ নিয়েছিলেন, এখন তারা নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছেন বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী।

কারবালার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘ইমাম হোসাইন অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আজকের কিছু রাজনৈতিক দল সেই ইতিহাস থেকে কিছু শিখেছে কি না, জানি না।’

নির্বাচনের সময় পেছানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, ‘সমতাভিত্তিক পরিবেশ তৈরির জন্য এখনো যথেষ্ট সময় আছে। তাহলে ভোট পেছানোর দরকার কী?’

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা রাজনৈতিক নয়, বরং সামাজিক অপরাধ বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। নির্বাচনের দোষ কী?’

 

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×