করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমরা কোন রাষ্ট্রের প্রক্সি হতে চাই না: মুহম্মদ জিয়াউল হক


j.jpg

দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের টেকসই লাভক্ষতি নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা না করে অন্তর্বর্তী সরকার হুটহাট রাখাইনে মানবিক করিডর/প্যাসেজ/চ্যানেল নিয়ে আরাকান আর্মি কিংবা জাতিসংঘের সাথে আলোচনা করতে পারে না বলে জানিয়েছে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি। আজ ১৩ মে (মঙ্গলবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সময় স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক এসব কথা বলেন।  

স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির মেম্বাররা জানায়, রাখাইনে করিডর দেয়া অনেকটা আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইজরাইলের সাথে আরব রাষ্ট্রগুলোর আব্রাহাম এ্যাকর্ড/চুক্তির মত। যেখানে ফিলিস্তিনের স্বার্থ না দেখে দখলদার ইজরাইলের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অতএব, সীমান্তবর্তী রাখাইন অঞ্চলে গণহত্যায় লিপ্ত আরাকান আর্মি নয়, বরং রোহিঙ্গাদেরকেই প্রাধান্য দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও স্বার্থের মধ্যেই সীমান্তে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও স্বার্থে জড়িত। 

সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। আমরা কোন রাষ্ট্রের প্রক্সি হতে চাই না। কিন্তু গণমাধ্যম মারফত পাওয়া তথ্য, করিডর ও চট্টগ্রাম পোর্ট বিষয়ে সরকারের অবস্থান ও বক্তব্য আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করছে। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করা প্লাটফর্মগুলোর সাথে সরকারকে অবশ্যই আলোচনায় বসতে হবে, কার সাথে কীভাবে ও কি সমঝোতায় যাচ্ছে সেগুলো স্পষ্ট করতে হবে। জনগণের কনসার্ন (সম্মতি) ছাড়া করিডর কিংবা চট্টগ্রাম পোর্ট বিদেশীদের ব্যবস্থাপনায় দেয়া যাবে না। এখানে দুটি বিষয়কে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে- প্রথমত: রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান রোহিঙ্গাদের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের সাথে নিয়ে করতে হবে, কোন বৈদেশিক শক্তির স্বার্থে নয়।  দ্বিতীয়ত: বাংলাদেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য হুমকি কোন রাষ্ট্র/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানকে এখানে যুক্ত করা যাবে না। 

তিনি আরও বলেন, একটা মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র হিসেবে আমরা যেভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে থাকি, ইজরাইলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি, ঠিক তেমনি আমাদেরকে রোহিঙ্গাদের পক্ষ নিতে হবে, আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। একইসাথে, রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে রোহিঙ্গা নেতৃত্ব তৈরি এবং তাদের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থাপনার সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আরাকান অঞ্চলকে রোহিঙ্গা শাসিত (রোহিঙ্গা ডমিন্যান্ট) স্টেইট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। দুবাই ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের সাথে আমেরিকা ও ইজরাইলের একাধিক সমঝোতা/চুক্তি রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে প্রচুর ভারতীয় স্টাফ রয়েছে। অতএব, ডিপি ওয়ার্ল্ডকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বন্দরে মার্কিন নৌ জাহাজ ভিড়তে পারবে কিনা, ইজরাইলীরা আসবে কি না, ভারতীয়রা কাজ করবে কিনা এবং ডিপি ওয়ার্ল্ডের সাথে সরকার কীভাবে ও কি কি সমঝোতা/চুক্তি করতে চায়– অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব বিষয় স্পষ্ট করতে হবে, জনগণের নিকট খোলাসা করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রেজিমের মত কোনো চুক্তি/সমঝোতা গোপন করা যাবে না।  

একইভাবে আমেরিকা ও ইজরাইলের সাথে একাধিক সমঝোতা ও চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডকেও চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনায় যুক্ত করতে পারে না বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×