
সাভারের একটি রিসোর্টে গোপন বৈঠক করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। ওই বৈঠকে দুজন নারী সদস্যের উপস্থিতির তথ্যও পাওয়া গেছে।
বুধবার ১৭ ডিসেম্বর সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরমান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার ভোরে সাভারের মধুমতি মডেল টাউনের গ্রিন জোন রিসোর্টে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওসি জানান, ভোর ৫টা ২৩ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ৫৪ মিনিট পর্যন্ত রিসোর্টের একটি কক্ষে বৈঠকটি চলে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মিরপুরের আলমগীর হোসেন রিসোর্টের নাইট ডিউটিরত কর্মী হাবিবুর রহমান সিয়ামের মাধ্যমে ২০৪ নম্বর কক্ষটি বুকিং দেন। পরে রাত ৪টা ৮ মিনিটে আলমগীরের পরিচয়ে দুই নারী ওই কক্ষে প্রবেশ করেন।
তিনি আরও বলেন, ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে আলমগীর হোসেন আরও একজনকে সঙ্গে নিয়ে কক্ষে অবস্থান নেন। সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে চারজন একসঙ্গে ওই কক্ষ ত্যাগ করেন। তাদের চলাচলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং রিসোর্ট সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ওই সময় কক্ষে হাদি হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত কিলিং মিশনের প্রধান শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান, তার বান্ধবী মারিয়া, আলমগীর হোসেনসহ মোট চারজন একত্রিত হয়েছিলেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই বৈঠকেই হাদিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
এর আগে ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
১৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এক জরুরি কল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাফর এবং হাদির ভাই ওমর বিন হাদি। ওই বৈঠকেই তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে নিরাপদে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।