দারিদ্র্য কারও স্বপ্নের পথে বাধা হওয়া উচিত নয়: প্রধান উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:২০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাদের ওপর নির্ভরশীল প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর অবশ্যই আমাদের শোনা উচিত। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি, দারিদ্র্য কারও স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে উঠতে পারে না। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সম্পদের ন্যায্য বিতরণ ন্যায়বিচারের শক্তিশালী হাতিয়ার।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিস্থাপক বৈশ্বিক অর্থনীতি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস আরও বলেন, যখন একজন নারী ব্যবসা শুরু করেন, যখন তরুণরা সৌর শক্তি তৈরি করে এবং আইটি অর্জন করে, এবং যখন জনবসতির শিশুরা পুষ্টি ও স্যানিটেশন সুবিধা পেয়ে স্কুলে যায় সেই সময় রূপান্তর বাস্তব এবং স্থায়ী হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উন্নয়নের জন্য করা অর্থায়ন প্রতিশ্রুতিগুলো অবশ্যই কার্যকর হতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বার্ষিক বিনিয়োগের ফাঁক পূরণ করা জরুরি।
ড. ইউনূস পাঁচটি অগ্রাধিকার তুলে ধরেন, যা সুস্থায়ী উন্নয়ন ও আর্থিক সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ
প্রথমত, অভ্যন্তরীণ সম্পদ ন্যায্যভাবে একত্রিত করে আন্তর্জাতিক সহায়তার সমর্থন নিশ্চিত করা। কর ব্যবস্থা প্রগতিশীল ও স্বচ্ছ হতে হবে, এবং বহুজাতিক করপোরেশনগুলোও তাদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করবে।
দ্বিতীয়ত, উদ্ভাবনী অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসার ব্যবহার। মিশ্রিত অর্থ এবং পুনঃবিনিয়োগযোগ্য মুনাফা সমস্যার সমাধানে চাকরি, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত করে।
তৃতীয়ত, বিশ্ব আর্থিক কাঠামো ও ঋণ প্রশাসনের সংস্কার। উন্নয়নশীল দেশগুলোর বেশি অংশগ্রহণ এবং ঋণকে স্থিতিস্থাপক ও উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার জরুরি।
চতুর্থত, স্বচ্ছতা বজায় রাখা, অবৈধ অর্থায়ন রোধ ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। জনগণ, বিশেষ করে তরুণরা, সম্পদের ব্যবহার এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি জানার অধিকার রাখে।
পঞ্চমত, সবচেয়ে দুর্বলদের জন্য, যেমন প্রাণবন্ত আবাসন, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানো।
ড. ইউনূসের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতিই টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি।