ঢাকার প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক স্থাপন বাধ্যতামূলক: পরিবেশ উপদেষ্টা
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:২১ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজধানী ঢাকাকে একটি দূষণমুক্ত, সবুজ ও আধুনিক শহরে রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক স্থাপন অপরিহার্য বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় সেপটিক ট্যাংক ও সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন নিয়ে আয়োজিত এক অংশীজন সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “ঢাকাকে একটি ব্রাউন শহর থেকে সবুজ ও স্মার্ট নগরীতে রূপান্তর করতে হলে কার্যকর সিউয়ারেজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক বা এসটিপি (সুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন বাধ্যতামূলক করতে হবে।”
সভায় বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, রাজধানীতে হাসপাতাল বা বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোর জন্য এসটিপি নির্মাণ কোনোভাবেই জটিল কাজ নয়। তার মতে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে ঢাকার নদী ও খালগুলোকে দূষণমুক্ত করার পথ অনেকটাই প্রশস্ত হবে।
“রাজধানীর নদী ও খাল দূষণমুক্ত করা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এবং উৎস থেকে বর্জ্য ফেলার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। শুধু ড্রেজিং করে কিংবা দায় এড়িয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়,” বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “ঢাকাকে সুন্দর করতে সব সংস্থাকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।” বুড়িগঙ্গা নদীর করুণ অবস্থা তুলে ধরে তিনি জানান, “এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বুড়িগঙ্গাকে যা রক্ষা করা সবচেয়ে কঠিন। তবে যতই কঠিন হোক সেটা সম্ভব, তার জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।”
সভায় তিনি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সুশাসন এবং আইনি সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজউকের আইন সংশোধন ও বাস্তবায়ন কার্যকর হলে রাজধানীকে একটি পরিচ্ছন্ন, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব নগরীতে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।
পরিবেশ রক্ষায় ছাদবাগান, রাস্তার বিভাজকে গাছ লাগানো এবং পার্কগুলো সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি ভবন নির্মাণে সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বাস্তবায়নে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মতিন।
অনুষ্ঠানে রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. গিয়াস উদ্দিন বক্তব্য দেন এবং প্রারম্ভিক উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন রাজউকের উপনগর পরিকল্পনাবিদ সাঈদ রেজাউল হক।
বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ডাইকি এক্সিস বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুই ওয়াসে এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী শফিকুল ইসলাম।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা ঢাকা শহরকে একটি টেকসই ও বসবাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন।