নেপাল থেকে বিকেল ৩টায় দেশে ফিরতে পারে বাংলাদেশ ফুটবল দল


নেপাল থেকে বিকেল ৩টায় দেশে ফিরতে পারে বাংলাদেশ ফুটবল দল

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল আজ বিকেল ৩টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ফ্লাইটে নেপাল থেকে দেশে ফিরতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক বার্তায় আইএসপিআর এ তথ্য জানায়।

বার্তায় বলা হয়, “বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানযোগে আজ আনুমানিক বিকেল তিনটার দিকে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।”

আইএসপিআর আরও জানায়, দলটিকে আনতে যাওয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানটি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৫৩ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করে।

উল্লেখ্য, নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল সেখান থেকে দেশে ফিরছে।

সোমবার নেপাল সরকার ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বল্পমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর, হাজার হাজার তরুণ-তরুণী বিক্ষোভে নামেন। পুলিশের গুলিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

পরদিন মঙ্গলবার সরকারি স্থাপনায় হামলার পর সহিংসতা ভয়াবহ আকার নেয়। একই দিন প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দায়িত্ব দিলেও তিনি সরকারি বাসভবন ছেড়ে চলে যান। তার অবস্থান এখনো অনির্দিষ্ট।

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে রেহান রাজ দঙ্গল জানান, তারা সেনা কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছেন যে, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আনা হোক।

২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সুশীলা কার্কি নেপালের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত হওয়া একমাত্র নারী এবং তখন থেকেই জনপ্রিয়। তবে সেনা সদর দপ্তরের বাইরে জড়ো হওয়া কিছু আন্দোলনকারী তার নেতৃত্বে আপত্তি জানিয়েছেন।

বুধবার সেনাবাহিনী কাঠমান্ডুর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পাহারা দেয়। এসময় যানবাহন ও জনসাধারণকে তল্লাশি করা হয় এবং সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।

যদিও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, সেনাবাহিনী প্রথমে ব্যারাকে অবস্থান করছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে তাদের মোতায়েন শুরু হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

এছাড়া বুধবার শহরের প্রধান কারাগারেও সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। কারাবন্দিরা প্রহরীদের প্রতিহত করে আগুন ধরিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে সেনারা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পালাতে যাওয়া বন্দিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

‘জেনারেশন জি’র আন্দোলন নামে পরিচিত এই বিক্ষোভ শুরু হয় সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে। সরকার জানায়, এসব মাধ্যম নিবন্ধিত নয় এবং সরকারি তত্ত্বাবধানে আসেনি।

মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে, কারণ পুলিশের গুলিতে ১৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ আরও বাড়ে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, রাজনৈতিক নেতাদের সন্তানরা বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হলেও সাধারণ তরুণরা কর্মসংস্থানের চরম সংকটে রয়েছেন।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নেপালে তরুণদের বেকারত্বের হার ছিল প্রায় ২০ শতাংশ। সরকারি হিসাবে, প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি যুবক জীবিকার সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×