১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:৫৫ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২৫

আসন্ন ২৪ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান দিবসকে সামনে রেখে গত ১৫ বছরে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিবৃতিতে জানায়, সাক্ষাতে আবরার ফাহাদের পরিবার ২০০৯ থেকে শুরু করে চলমান সময় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের তালিকা তৈরি ও প্রত্যেকটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান।
আবরার ফাহাদের বাবা বিচার প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে সরকারের কার্যকর ভূমিকা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য কথা বলার কারণে তাকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। সে দেশের স্বার্থে কথা বলেছিল, অসম পানি বণ্টনের বিরুদ্ধে বলেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার মা এখনো ছেলের জন্য আর্তনাদ করেন। আর কোনো মায়ের যেন সন্তান হারানোর কষ্ট পেতে না হয়, আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’
সাক্ষাতকালে বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণে সরকারি উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি জানান, সেতু না থাকায় ওই অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো শিক্ষার্থী বান্ধব নয়। পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাব, সরঞ্জাম ও অন্যান্য ব্যবস্থার সংকট রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা চাই এ সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থী বান্ধব করতে পদক্ষেপ নেবে।’
এ সময় বুয়েটসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিং বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বানও জানান তিনি।
ফাইয়াজ বলেন, ‘বুয়েটে নিপীড়নের ঘটনা এটাই প্রথম না। আগেও ঘটেছে। আগে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর তদন্ত ও বিচার করা প্রয়োজন।’
সাক্ষাৎ শেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মারার ঘটনাটি পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হবেই। চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগ ও এর সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতের তালিকা করে প্রত্যেকটি ঘটনা তদন্ত করা হবে। এর পাশাপাশি তৎকালীন সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেগুলো নিয়েও তদন্তকাজ চলছে। সরকার ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে।’