সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ও যোগ্যতাসহ যে সুপারিশ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের


সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ও যোগ্যতাসহ যে সুপারিশ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের
কামাল আহমেদ

সরকারি কর্মকর্তাদের নবম গ্রেডের স্কেলের সমান বেতন ও সাংবাদিকতা করতে হলে ন্যূনতম স্নাতক পাসের প্রস্তাব রেখে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।

শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের সদস্যরা এ প্রতিবেদন জমা দেন। গণমাধ্যম সংস্কারের জন্য কমিটি তাদের প্রতিবেদনে মোট ২০টি সুপারিশ করেছে।
 
পরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, ‘বিসিএস ক্যাডারদের এন্ট্রি পদে নবম গ্রেডের যে বেতন, সাংবাদিকতা শুরুর বেতন তার সঙ্গে মিল রেখে যেন করা হয় প্রতিবেদনে সেই সুপারিশ করা হয়েছে।’
 
তিনি আরো বলেন, ‘এটা সারা দেশেই নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ঢাকায় এর পাশাপাশি ‘ঢাকা ভাতা’ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সাংবাদিকতা করতে হলে ন্যূনতম স্নাতক পাসের যোগ্যতা থাকতে হবে। প্রথমে ‘শিক্ষানবিশ সাংবাদিক’ হিসেবে কাজ করতে হবে। শিক্ষানবিশ হিসেবে এক বছর কাজ করতে হবে। এরপর প্রমোশন পাবে।’
 
কমিশনের প্রধান বলেন, ‘সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন তৈরির সুপারিশ দেয়া হয়েছে। সেই আইনের খসড়াও তৈরি করে দেয়া হয়েছে।’
 
তিনি বলেন, ‘সরকারের হিসাবে ৬০০ পত্রিকা রয়েছে যারা সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়ার যোগ্যতা রাখে, কিন্তু বাস্তবে প্রকাশিত ও বিক্রীত পত্রিকার সংখ্যা মাত্র ৫২টি। বাকিরা প্রতারণা করে সরকারি বিজ্ঞাপন হাতিয়ে নিচ্ছে।’
  
কামাল আহমেদ বলেন, ‘গণমাধ্যমে কালো টাকা ঢুকেছে। রাজনৈতিক পরিচয় অন্ধকারে রেখেই গণমাধ্যমের মালিকানা দেয়া হয়েছে। সব কয়টি টেলিভিশনের আবেদনে দেখা গেছে জনস্বার্থ কোনোটিতেই ছিল না৷ সবগুলোই রাজনৈতিক পরিচয়ে দেয়া হয়েছে।’
 
তিনি বলেন, ‘এক প্রতিষ্ঠান একটিমাত্র গণমাধ্যমের মালিক হতে পারবেন এমন প্রস্তাবনা দিয়েছেন। ওয়ান হাউস ওয়ান মিডিয়ার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারকে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। দুটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা তৈরি করতে হবে। এই সংস্থাকে স্বায়ত্তশাসনের মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে।’
 
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ নভেম্বর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদকে প্রধান করে ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন’ গঠনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, দ্য ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধি শামসুল হক জাহিদ, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্স (অ্যাটকো) প্রতিনিধি, নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক সাংবাদিক জিমি আমির, ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×