জাপানের শপিংমল-বিমানবন্দরে মুসলিম পর্যটকদের জন্য নামাজের বিশেষ কক্ষ


জাপানের শপিংমল-বিমানবন্দরে মুসলিম পর্যটকদের জন্য নামাজের বিশেষ কক্ষ

জাপানে বেড়ে চলেছে মুসলিম পর্যটকদের সংখ্যা, আর তাদের ধর্মীয় চাহিদা মেটাতে দেশটি নিচ্ছে একের পর এক উদ্যোগ। এখন শপিংমল, বিমানবন্দর, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এমনকি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও চালু হচ্ছে আলাদা নামাজের কক্ষ, যা মুসলিম ভ্রমণকারীদের জন্য ভীষণ সুবিধাজনক হয়ে উঠছে।

গত এক দশকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও তুরস্কসহ মুসলিমপ্রধান দেশগুলো থেকে জাপানে পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। জাপান ন্যাশনাল ট্যুরিজম অর্গানাইজেশনের (JNTO) তথ্য বলছে, শুধু ২০২৩ সালেই এসব দেশ থেকে ৮ লাখ ৭০ হাজারের বেশি পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছেন। জাপানের এই অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে রয়েছে মুসলিম দেশগুলোতে টার্গেট করে চালানো বিশেষ মার্কেটিং প্রচারণা, ইয়েনের দরপতনের সুযোগ এবং বাড়তি ফ্লাইট সংযোগ।

এই প্রবণতা জাপানের খুচরা বাজারে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দিয়েছে। এখন শুধু হালাল খাবার নয়, নামাজের জন্য আলাদা জায়গাও ভাবনায় আনছে শপিংমল ও পর্যটনকেন্দ্রগুলো। টোকিওর বিলাসবহুল গিনজা এলাকার ‘মাতসুয়া গিনজা’ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে আগে থেকেই রয়েছে নামাজ কক্ষ, যেখানে মুসলিম পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে প্রার্থনা করতে পারেন। শিবুয়া পারকো শপিং সেন্টারও মুসলিম ক্রেতাদের কথা বিবেচনায় রেখে তৈরি করেছে নামাজের ব্যবস্থা।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির বৃহত্তম শপিংমল অপারেটর ‘এইয়ন মল’। বর্তমানে চিবা, কানাগাওয়া, আইচি, হিরোশিমা ও ওকিনাওয়াসহ সাতটি বড় মলে চালু রয়েছে নামাজের কক্ষ, এবং ভবিষ্যতে আরও মলে এই সুবিধা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শুধু কেনাকাটার জায়গা নয়, নামাজের সুবিধা যুক্ত হচ্ছে বিমানবন্দরেও। টোকিওর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন নামাজ কক্ষ সংযুক্ত হয়েছে, আর হানেদা বিমানবন্দরের ডিপার্চার লবিতেও রাখা হয়েছে নামাজের স্থান, যা দীর্ঘ ট্রানজিট বা ভোরের ফ্লাইটে থাকা যাত্রীদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।

এছাড়া শহরের বাইরের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও বাড়ছে ধর্মীয় সুযোগ-সুবিধা। কিয়োটো টাওয়ার, চিবা এবং ওসাকার প্রিমিয়াম আউটলেটে এখন নামাজের আলাদা জায়গা রয়েছে, যেখানে মুসলিম পর্যটকরা সহজেই ইবাদত করতে পারছেন। এর পাশাপাশি, প্রযুক্তিনির্ভর নানা অ্যাপ ব্যবহার করে ভ্রমণকারীরা নামাজের সময়, কিবলার দিক এবং কাছাকাছি নামাজ কক্ষের অবস্থানও খুব সহজে জানতে পারছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানের এসব উদ্যোগ কেবল মুসলিম পর্যটকদের জন্যই সহায়ক নয়, বরং দেশটির পর্যটন খাতকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈচিত্র্যময় করে তুলছে। হালাল খাবার, নামাজের কক্ষ এবং প্রযুক্তি-সহায়ক সেবার সমন্বয়ে জাপান এখন দ্রুতই মুসলিম-বান্ধব পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

সূত্র: দ্য হালাল টাইমস

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×