
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম সরকারি শাটডাউনে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। টানা ৩৬ দিন ধরে চলা এই অচলাবস্থা এখন বড় আঘাত হেনেছে দেশের বিমান চলাচল খাতে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৭ নভেম্বর) থেকে দেশের ৪০টি প্রধান বিমানবন্দরে ফ্লাইট ১০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)। কর্মী সংকট ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার (৭ নভেম্বর) প্রকাশিত বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ৩৫ দিনের শাটডাউন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম। এবারকার অচলাবস্থা সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
বিবিসির তথ্যমতে, প্রায় ১৩ হাজার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও ৫০ হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা বেতন ছাড়াই দায়িত্ব পালন করছেন। এতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ফ্লাইট বিলম্ব ও বাতিলের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি জানান, শুক্রবার থেকেই ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
এফএএ প্রধান ব্রায়ান বেডফোর্ড বলেন, “কন্ট্রোলারদের ক্লান্তি ও আর্থিক চাপ আকাশপথের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই ধাপে ধাপে ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—প্রথম দিন ৪ শতাংশ, পরদিন ৫ শতাংশ, এবং এক সপ্তাহের মধ্যে তা ১০ শতাংশে পৌঁছাবে।”
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ৪০টি বিমানবন্দরের তালিকা বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রকাশ করা হবে। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো ও ডালাসের মতো ব্যস্ততম বিমানবন্দরও এই সিদ্ধান্তের আওতায় আসবে। বিমান সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার ফ্লাইট বাতিল হতে পারে।
সরকারি অচলাবস্থার কারণে শেয়ারবাজার থেকে বিমান চলাচল—সব খাতেই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি আরও বলেন, শাটডাউন পরিস্থিতি তিন অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটদের সাম্প্রতিক নির্বাচনী সাফল্যের কারণ হিসেবে কাজ করেছে। ডেমোক্র্যাটদের ‘উগ্রপন্থি পাগল’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প কংগ্রেসকে দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান এবং সিনেটে ‘ফিলিবাস্টার’ নিয়ম বাতিলের দাবি তোলেন।