ইসরায়েলি পর্যটকদের বের করে দিলেন স্পেনিশ রেস্তোরাঁ মালিক


ইসরায়েলি পর্যটকদের বের করে দিলেন স্পেনিশ রেস্তোরাঁ মালিক

ইসরায়েলের গাজা হামলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে স্পেনের এক রেস্তোরাঁ মালিক সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন—নিজের রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দিয়েছেন আটজন ইহুদি পর্যটককে। আর এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তা বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছে।

ঘটনাটি ঘটে স্পেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর ভিগোর একটি ছোট রেস্তোরাঁ ‘মিমাসা’তে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, রেস্তোরাঁর মালিক স্পষ্ট ভাষায় ওই পর্যটকদের উদ্দেশে বলেন, তিনি তাদের সেবা দিতে রাজি নন। গাজার পরিস্থিতিতে তার প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র।

ভিডিওতে মালিককে বলতে শোনা যায়, "তোমরা ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছ, যাও গাজায় গিয়ে খাও! তোমরা মানুষ হত্যা করো, তারপর বেড়াতে চলে আসো! এখান থেকে বেরিয়ে যাও!" ভিডিওর পেছনে আরও শোনা যায়, "ফিলিস্তিন মুক্ত হোক!" ও "ইহুদিবাদ নিপাত যাক!"—এমন প্রতিবাদী স্লোগান।

ঘটনার পর ইসরায়েলপন্থী কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায় এবং বয়কটের ডাক দেয়। তবে তার বিপরীতে বহু মানুষ, স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিদেশি পর্যটক পর্যন্ত, মালিকের অবস্থানের প্রশংসা জানিয়ে রেস্তোরাঁটিতে ভিড় করতে শুরু করেন।

কয়েক দিনের মধ্যেই ‘মিমাসা’র গ্রাহকসংখ্যা বেড়ে যায়। অনেকেই জানান, তারা এই রেস্তোরাঁয় এসেছেন মালিকের নৈতিক অবস্থানের প্রতি সংহতি জানাতেই।

রেস্তোরাঁর মালিক পরে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে বলেন, তিনি এই অভূতপূর্ব সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।

যদিও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও কিছু ইহুদি অনলাইন গ্রুপ ঘটনার সমালোচনা করেছে, তবুও বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইউরোপজুড়ে গড়ে ওঠা একটি বৃহত্তর জনমতের প্রতিফলন। সেখানে মানুষ ফিলিস্তিনে চলমান সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে।

সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বয়কট আন্দোলন জোরদার হয়েছে—বিশেষ করে যারা তেল আবিবের দখলদার নীতিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন করছে।

স্পেন সরকার এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ঘটনাটি ইউরোপীয় জনমতের একটি দৃশ্যমান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়—যেখানে প্রতিবাদ আর শুধু রাজপথেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং ছড়িয়ে পড়েছে রেস্তোরাঁ, দোকান ও পর্যটন শিল্পেও।

এই ঘটনা আবারও দেখিয়ে দেয়—ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোও হতে পারে বৈশ্বিক ন্যায়বোধ ও সংহতির শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।

সূত্র: পার্সটুডে

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×