ফরিদা পারভীনের দাফন হবে কুষ্টিয়ায়
- বিনোদন ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:০৩ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাঙালি সঙ্গীতের অমর কণ্ঠ ফরিদা পারভীনকে কুষ্টিয়ায় দাফন করা হবে। তাঁর মরদেহ প্রথমে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে, যাতে সর্বসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন।
রোববার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে কুষ্টিয়ায় নেওয়া হবে। সেখানে বাদ মাগরিব নামাজের পর কুষ্টিয়ার পৌর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম নিমেরি সাংবাদিকদের বলেন, “মাকে আমরা কুষ্টিয়ায় দাফন করব, তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী।”
মেয়ে জিহান ফারিয়া বলেন, “মা মর্যাদা নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তার শেষ ইচ্ছে ছিল কুষ্টিয়ায় যাওয়ার এবং বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন হওয়ার।”
ফরিদা পারভীন গতকাল রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তার মরদেহ রাতেই তেজগাঁওয়ের বাড়িতে নেওয়া হয়।
শিল্পীকে গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার গুরুতর হওয়ায় ভর্তি হওয়ার পরই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় তিনি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। চলতি বছরে তিন দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন ৫৫ বছর ধরে সংগীতে অবদান রেখেছেন। পারিবারিক প্রেরণায় এবং বাবার উৎসাহে সংগীতজগতে প্রবেশ করেন। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে তাঁর পথচলা শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীতে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছ থেকে লালনগীতির প্রশিক্ষণ নেন এবং লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান।
ফরিদা পারভীন ১৯৮৭ সালে সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক অর্জন করেন। ১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ চলচ্চিত্রের ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৮ সালে জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কারও পান। তাঁর কণ্ঠে লালনের গান ছাড়াও আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গানও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে।
লালনকন্যা খ্যাত ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, বিএনপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শোক প্রকাশ করেছেন।