
অবৈধ আমদানি ঠেকাতে বিদেশ থেকে আনা মোবাইল ফোনে শুল্ক কমানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, শিগগিরই এই খাতে শুল্ক হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ’পরবর্তী সরকারের আর্থ-সামাজিক অগ্রাধিকারসমূহ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি জানান, দেশের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত তুলনামূলকভাবে কম থাকায় রাজস্ব আয় বাড়ানো না গেলে গুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রয়োজনীয় ব্যয় করা কঠিন হয়ে পড়বে। রাজস্ব প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা না গেলে অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত গতি ফেরানো সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বর্তমান আর্থিক খাতের চাপের মধ্যেও রাজস্ব আদায়ের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে মনে করেন মো. আব্দুর রহমান খান। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে আমদানি শুল্কের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ভ্যাট ও আয়কর আদায়ের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে অবৈধ আমদানি রোধে মোবাইল ফোন আমদানিতে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সেমিনারে র্যাপিড চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়বে। তিনি জানান, গত তিন বছরে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৯০ লাখ।
আলোচনায় আরও জানানো হয়, গত এক বছরে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে নারীদের অংশগ্রহণ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যদি এলডিসি গ্রাজুয়েশন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার কথা বিবেচনা করে, তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের হাতে খুব বেশি সময় থাকবে না।
র্যাপিডের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বর্তমানে রাজস্ব আদায়ের যে গতি রয়েছে তা বাড়ানো না গেলে নতুন সরকার চলতি অর্থবছরে নতুন কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম সহজে বাস্তবায়ন করতে পারবে না। রাজস্ব আহরণে গতি না এলে বহু উন্নয়ন উদ্যোগ পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কাও তুলে ধরা হয়।
এসময় আসন্ন নতুন সরকারকে ১২টি দিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে র্যাপিড। এগুলো হলো -
১) এলডিসি গ্রাজুয়েশন
২) মূল্যস্ফীতি কমানো
৩) ব্যাংক খাতে সুশাসন
৪) দক্ষ কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে
৫) রিজার্ভ বাড়ানো
৬) অঅভ্যন্তরীণ রাজস্ব বাড়ানো
৭) স্বাস্থ্য, শিক্ষা বরাদ্দ বাড়ানো
৮) ঋণ কমানো
৯) জ্বালানি নিরাপত্তা
১০) শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো
১১) তথ্য উপাত্তের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
১২) ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তৈরি করা।