১ সেপ্টেম্বরেই শুরু হচ্ছে ডিজিটাল ব্যাংকের আবেদন: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:২৪ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৫

দেশে ডিজিটাল আর্থিক খাতের সম্প্রসারণ ও ব্যাংকিং সেবায় উদ্ভাবন ত্বরান্বিত করতে আগামী ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন গ্রহণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, প্রযুক্তিনির্ভর বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আর্থিক সেবার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে আর্থিক খাতের বিস্তার ঘটানো সম্ভব হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগানো এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে ক্ষুদ্র, কুটির ও ছোট উদ্যোক্তাদের (সিএমএসই) উন্নয়ন অপরিহার্য। এই খাতের জন্য সহজ ঋণপ্রাপ্তি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে ডিজিটাল ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী যোগ্য আবেদনকারীদের নীতিগতভাবে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য সিলগালা করা আবেদনপত্রের সঙ্গে (অ-ফেরতযোগ্য) ৫ লাখ টাকা প্রসেসিং ফি এবং প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে। অসম্পূর্ণ আবেদন বাতিল হবে। সরাসরি আবেদন জমা দেওয়ার পাশাপাশি ই-মেইলের মাধ্যমেও নথি পাঠাতে হবে। বিস্তারিত নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ([email protected]) দেওয়া আছে।
নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিত ও পুরো প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার পর এই নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ৫২টি আবেদন গ্রহণ করেছিল, যার মধ্যে ৮টি প্রাথমিক অনুমোদন পায় এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মতিপত্র দেওয়া হয়।
তবে বিশ্বব্যাংক আগেই বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্স প্রদানের স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তাদের ‘বাংলাদেশ: কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়াগনস্টিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি, নীতিনির্ধারণে অস্পষ্টতা এবং লাইসেন্স বণ্টনের অসঙ্গতি বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, কিছু প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যতে লাইসেন্স দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও অনেকেই কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা পায়নি, যা তাদের অনিশ্চয়তায় ফেলেছে।
ডিজিটাল ব্যাংককে বিশ্বব্যাপী শাখাবিহীন ব্যাংকিংয়ের অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান ২০২২ সালেই এ ব্যবস্থা চালু করেছে। বর্তমানে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি ক্ষুদ্র ঋণ দিতে না পারলেও ডিজিটাল ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বা আলাদা লাইসেন্সের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে।
বর্তমানে ক্ষুদ্র ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত থাকলেও কোনো প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারলে এ সীমা বাড়ানো হতে পারে।