শাহীনুলের লেনদেন খতিয়ে দেখছে বিএফআইইউ


শাহীনুলের লেনদেন খতিয়ে দেখছে বিএফআইইউ

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের ব্যাংক লেনদেন পর্যালোচনা করছে সংস্থাটি নিজেই। তার স্ত্রী সুমা ইসলামের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও যাচাই করা হচ্ছে। ১৮ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে শাহীনুল ইসলাম ছুটিতে রয়েছেন। তবে তিনি এখনও বিএফআইইউর প্রধান পদে বহাল আছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

বিএফআইইউ সূত্র জানায়, দুইটি উপায়ে লেনদেন পর্যালোচনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে শাহীনুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর দুটি অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রাথমিকভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, গত ১২ মে শাহীনুল ইসলামের অ্যাকাউন্টে মিজানুর রহমান নামে একজন নগদ ২৩ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন। একই ব্যক্তি তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ৪ মে ১৫ লাখ এবং ৫ মে ৫ লাখ টাকা জমা দেন। এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, আপত্তিকর ভিডিও নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যেমন: এনা পরিবহনের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের পর ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণে হস্তক্ষেপের অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, এসব কর্মকাণ্ডে তিনি নিজের ভাগনে পরিচয় ব্যবহার করেছেন। উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা পাওয়া গেলে এসব অভিযোগের দিকেও তদন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

১৮ আগস্ট শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ভিডিওগুলোকে ভুয়া দাবি করলেও ১৯ আগস্ট তিনি অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। ২০ আগস্ট অফিসে যোগ দিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিনই সরকার চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদ কুতুবকে। সদস্যরা হলেন: বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের পরিচালক মো. মতিউর রহমান এবং যুগ্মসচিব মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম (সদস্যসচিব)। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন তৎকালীন বিএফআইইউ প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। এরপর দীর্ঘদিন পদটি শূন্য থাকার পর ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি শাহীনুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×