
রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় মারধর ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ভাটারা থানার একটি মামলায় রোববার ১৪ ডিসেম্বর পুলিশের তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইয়ের আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে তুরিন আফরোজের পক্ষে থাকা আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, “মারধর ও প্রতারণা মামলায় তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তার জামিন চেয়ে শুনানি করি। তবে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।”
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী মনজুর আলম নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে নাবিশা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তার ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ভারতীয় অশোক লে ল্যান্ড ব্র্যান্ডের বাস ও ট্রাক আমদানি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি ও লিজ দেওয়া। অভিযোগ অনুযায়ী, তুরিন আফরোজ প্রথমে নগদে ৭৮ লাখ টাকায় দুটি বাস কেনার আগ্রহ দেখান। পরে ২০২১ সালের ১ জুলাই কিস্তি ভিত্তিতে একই দামে দুটি বাস কেনেন এবং এর মধ্যে ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি কিস্তির টাকা পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
মামলার নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বকেয়া কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য ২০২২ সালের ২৯ মার্চ মনজুর আলম নাহিদ তুরিন আফরোজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তাকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়। ২ এপ্রিল আবারও টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানালেও কোনো সাড়া মেলেনি। এরপর ৪ এপ্রিল তুরিন আফরোজের গাড়িচালক আমির হোসেন ৭ থেকে ৮ জনকে সঙ্গে নিয়ে বাদীকে হুমকি দেন। পরদিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে তুরিন আফরোজ ও তার গাড়িচালক আমির হোসেন ২০ থেকে ২৫ জনকে নিয়ে বসুন্ধরায় মনজুর আলম নাহিদের বাসায় যান। সেখানে প্রায় ৩২ লাখ টাকার আসবাব ও মালামাল ভাঙচুর করা হয় এবং মনজুর আলম নাহিদকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এই ঘটনার পর ২০২২ সালে মনজুর আলম নাহিদ আদালতে তুরিন আফরোজ ও তার গাড়িচালক আমির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন সংশ্লিষ্ট এক শিক্ষার্থী আব্দুল জব্বারকে হত্যাচেষ্টার মামলায় পরদিন আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে ২১ এপ্রিল মিরপুরের গোলচত্বর এলাকায় গুলিতে আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী নিহতের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের একটি মামলায়ও আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। সর্বশেষ ১৮ জুন উত্তরা পশ্চিম থানার আওতায় মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত হুসাইন হত্যা মামলায় তুরিন আফরোজকে আবারও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।