সাংবাদিক তুহিন হত্যা: পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় যা জানা গেল


সাংবাদিক তুহিন হত্যা: পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় যা জানা গেল

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নতুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। ফুটেজে দেখা যায়, দেশীয় অস্ত্র হাতে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছিল সন্ত্রাসীরা, সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করছিলেন তুহিন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই ভিডিও করার কারণেই প্রাণ দিতে হয়েছে তাকে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত আটটার দিকে গাজীপুর নগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন (৩৮) ‘দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ’-এর একজন প্রতিবেদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রবিউল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের আগের মুহূর্তের একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীদের একটি চিহ্নিত দল এক ব্যক্তিকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করছে। সেই সময় পাশ থেকে মোবাইল ফোনে ঘটনাটি ধারণ করছিলেন তুহিন। তাঁর ধারণ করা ভিডিও দেখে ফেলেই সম্ভবত হামলাকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আক্রমণ করে।

ঘটনাস্থল ছিল চান্দনা চৌরাস্তার মসজিদ মার্কেটের পশ্চিম পাশের এলাকা। ফুটেজ অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে একটি কালো পোশাক পরা নারী ওই এলাকায় হেঁটে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই এক ব্যক্তি—যার গায়ে নীল জামা ছিল—পেছন থেকে ওই নারীকে জোর করে টেনে ধরে। নারীটি সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেই ব্যক্তি সামনে গিয়ে পথরোধ করেন এবং একপর্যায়ে তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই, ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েকজন যুবক ওই ব্যক্তিকে আক্রমণের চেষ্টা করে। তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তির নাম বাদশা মিয়া। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কালো জামা পরা নারীর সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ঘটনার জেরেই সন্ত্রাসীরা বাদশার ওপর হামলা চালায়।

ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক তুহিনের বন্ধু শামীম হোসেন। তিনি বলেন, “হত্যার আগে আমি দেখেছি, একজন নারী ও কয়েকজন যুবক এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছিল। তুহিন সেটা মোবাইলে ভিডিও করতে যায়। পরে জানতে পারি, ওকে এক দোকানের ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।”

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার বাসন থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। থানার ওসি শাহীন খান জানিয়েছেন, নিহত তুহিনের ভাই সেলিম মিয়া বাদী হয়ে ২৫-২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×