শহীদ সাংবাদিক তুরাবের ভাই এনসিপি ছাড়লেন
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:৩৪ এম, ০৮ আগস্ট ২০২৫

সিলেটে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে একের পর এক নেতার পদত্যাগের ধারায় এবার যুক্ত হলেন শহীদ সাংবাদিক আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাবের ভাই, আবুল আজরফ আহসান জাবুর। এনসিপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাম্প্রতিক সময়ের একাধিক পদত্যাগের মধ্যে এটি সর্বশেষ সংযোজন। এ নিয়ে সিলেট জেলায় দলটি থেকে পদত্যাগ করলেন মোট ১০ জন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে তিনি নিজেই গণমাধ্যমে তার পদত্যাগের তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক বরাবর পদত্যাগপত্র দাখিল করেছি।’
আবুল আজরফ আহসান জাবুর সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এনসিপির সদ্যঘোষিত সিলেট জেলা সমন্বয় কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন। গত ১৯ জুন এই কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পান নাজিম উদ্দিন শাহান। কমিটির অনুমোদন দিয়েছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
পদত্যাগপত্রে আবুল আজরফ উল্লেখ করেছেন, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যস্ততার কারণে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় একটি নতুন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব পালন তার পক্ষে সম্ভব নয় বলেই তিনি নিজ ইচ্ছায় ও সচেতনভাবে পদত্যাগ করেছেন।
এনসিপির সিলেট অঞ্চলে পদত্যাগের ঘটনা নতুন নয়। জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকেই একাধিক নেতা কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া কিংবা পূর্বে অবহিত না করে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্র বলছে, এসব কারণেই দলটির অন্তঃকলহ বেড়ে গেছে।
১২ জুলাই কমিটি ঘোষণার ঠিক পরদিনই বিশ্বনাথ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে একসাথে চারজন নেতা পদত্যাগ করেন। গোয়াইনঘাট কমিটি থেকে সরে দাঁড়ান সদস্য ফাহিম আহমদ ও যুগ্ম সমন্বয়কারী নাদিম মাহমুদ। আর বিশ্বনাথ কমিটি ছাড়েন যুগ্ম সমন্বয়কারী রুহুল আমিন এবং সদস্য শাহেদ আহম্মেদ।
১৪ জুলাই আরও একজন, রুহুল আমিন নামে একজন নেতা, বিয়ানীবাজার উপজেলা কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
২১ জুলাই গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে ফের চারজন নেতা দায়িত্ব ছেড়ে দেন। তারা হলেন—যুগ্ম সমন্বয়কারী এনামুল হক মারুফ, সদস্য তরিকুল ইসলাম, কিবরিয়া আহমদ ও কামরুল হাসান।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী এমডি সালাহ উদ্দিন সাজু বলেন, ‘রাজনৈতিক দলে যোগদান এবং পদত্যাগ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তা ছাড়া এনসিপি এ দেশের একটু রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের নতুন একটি দল। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এনসিপির কমিটি ঘোষণার পর থেকে পারিবারিক সদস্য, আত্মীয়স্বজন কিংবা বিভিন্ন সূত্রে পরিচয় থাকার সুবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের চাপ সৃষ্টি করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় কিছু কিছু নেতাকর্মী কমিটি থেকে পদত্যাগ করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পদত্যাগ নিয়ে এনসিপির হাইকমান্ডের দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। বরং এনসিপি আরও বৃহৎ পরিসরে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে আস্থা ও নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে স্থান করে নেবে ইনশাআল্লাহ।’