স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু


February 4 2025/patuakhali-20250628192340.jpg

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মনে করছেন দাদা বাড়ির লোকজন। তবে নানা বাড়ির লোকজনের দাবি, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ জুন) দিবাগত রাতে মির্জাগঞ্জের কিশোরীর দাদা বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর ধরে নিহত কিশোরী তার দাদি রোকেয়া বেগমের সঙ্গে বসবাস করছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় দাদি তাকে বাসায় একা রেখে পাশের বাড়িতে পান খেতে যান। তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী পড়ার টেবিলে বসা ছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান দাদি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত কিশোরীর খালা উপমা পারভিন খাদিজা অভিযোগ করে বলেন, আমার বোনের মেয়ে আত্মহত্যা করেনি বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বহুদিন ধরে তার ফুফাতো ভাই সাকিল ও সাজিত তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিল। এমনকি গোসলের সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করে, পরে তা দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ব্ল্যাকমেইল করত।

তিনি আরও বলেন, বাড়ির সামনে থাকা শামীম নামে এক ব্যক্তি পড়াশোনার কথা বলে মেয়েটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন এবং সুযোগ নিয়ে তিনিও হয়রানি করেন। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগী কিশোরী তার খালাকে ফোনে জানাতেন এবং কাঁদতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান কিশোরীর বাবা-মা। ২০১৮ সালে কিশোরীর মা সাজেদা বুলবুলকে ১২ টুকরো করে হত্যা করেন বাবা শাহাজাদা সাজু। মামলার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ার আদালত তার বাবাকে ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। বর্তমানে তিনি ৬ বছর সাজা ভোগ করেছেন।

মায়ের মৃত্যুর পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কিশোরী তার সেজো খালার সঙ্গেই থাকতেন। এরপর তিনি আদালতের মাধ্যমে দাদির কাছে চলে যান।

নিহতের মামাতো ভাই আশিকুল ইসলাম সিয়াম বলেন, ঘটনার সময় রাত ১০টা হলেও আমাদের জানানো হয় রাত ২টায়। তা ছাড়া তার আত্মহত্যার কোনো কারণ নেই। এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না, আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত তরুণীর বড় মামা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমার ভাগনির মৃত্যু কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। সে মানসিকভাবে এতটা ভেঙে পড়ার মতো মেয়ে ছিল না। ওর ওপর অনেকদিন ধরেই নির্যাতন চলছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×