মিটার না দেখেই অনুমাননির্ভর বিল বানিয়ে দিচ্ছে বিদ্যুৎ অফিস!


February 4 2025/1751085127_c86e00261d4eb0a6334e.jpg

পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কুয়াকাটা জোনের ধুলাসার ইউনিয়নের কাউয়ারচরে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে মিটার রিডিং নেওয়া হয়নি। তবুও প্রতি মাসে অনুমাননির্ভর বিল তৈরি করে বিল গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত ইউনিট ও জরিমানাও যোগ করা হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা জানান, সর্বশেষ মার্চ মাসে মিটার রিডিং নেওয়া হয়েছিল। এরপর এপ্রিল, মে এবং জুন, এই তিন মাসে কেউ মিটার রিডিং করতে আসেননি। ২০ জুন গ্রাহকদের হাতে মে মাসের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পৌঁছায় যেখানে দেখা যায় বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৮ জুন। অর্থাৎ বিলের কাগজ গ্রাহকের হাতে পৌঁছানোর আগেই সময় শেষ। অনেকে বাধ্য হয়ে জরিমানা দিয়ে বিল পরিশোধ করেছেন।

২৭ জুন আবার জুন মাসের বিলের কাগজ দেওয়া হয়। সেই কাগজেও বিলের ইস্যু তারিখ ছিল ১২ জুন। অথচ গ্রাহকদের হাতে পৌঁছেছে ১৫ দিন পর। এই বিলের শেষ তারিখ ছিল ১ জুলাই অর্থাৎ হাতে পাওয়ার পর মাত্র ৪ দিন সময়। গ্রাহকরা বলছেন, এত স্বল্প সময়ে বিল পরিশোধ করা একজন সাধারণ গ্রাহকের পক্ষে কঠিন।

আরও অভিযোগ রয়েছে, মে মাসে যারা বিল পরিশোধ করেছেন তাদের সেই বিল জুন মাসের সঙ্গে আবার যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেন, মিটারে যে ইউনিট দেখা যায় তার চেয়ে বেশি ইউনিট বিলের কাগজে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানীয় গৃহিণী রহিমা আক্তার বলেন, আমার প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে বড়জোর ৮০–১০০ টাকা। অথচ এবার বিল এসেছে ৬০০ টাকা সঙ্গে জরিমানাও রয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার ঘরে একটি লাইট এবং মাঝে মাঝে একটি ফ্যান চলে। আগে বিল আসত ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। এবার এসেছে ৯০০ টাকা। অথচ মিটার রিডিং অনুযায়ী এত ইউনিট খরচ হওয়ার কথা নয়।

স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিক বলেন, অভিযোগগুলো সঠিক। আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। অনেক সময় বিলের কাগজ আসে জমা দেওয়ার শেষ তারিখের এক বা দুই দিন আগে। যা কিনা একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে তখন বিল পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবু ভয় দেখিয়ে বিল আদায় করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ অফিস থেকে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়, বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে জরিমানা যুক্ত করেও বিল পরিশোধে বাধ্য হন।

এ বিষয়ে কুয়াকাটা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. মোতাহার উদ্দিন বলেন, আমাদের মিটার রিডারের সংকট রয়েছে। লোকবল কম থাকায় বিল সরবরাহে বিলম্ব হয়েছে। বিল বেশি আসার অভিযোগ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। যেসব এলাকায় সমস্যা হয়েছে, সেগুলোর সমাধান করা হবে।

এদিকে ভুক্তভোগীরা নিয়মিত মিটার রিডিং, নির্দিষ্ট সময়ে বিল প্রদান ও ভুল বিল সংশোধনের ব্যবস্থা নিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×