লক্ষ্মীপুরে বৃদ্ধার সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে মরিয়া কুচক্রী মহল: কিনে বিপাকে প্রবাসী
- লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০১:১৩ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

পিতার ওয়ারিশি সম্পত্তি পেয়ে শেষ বয়সে এসে তা বিক্রি করেন বৃদ্ধা আফিয়া খাতুন। আফিয়া খাতুনের বিক্রয়কৃত সেই সম্পত্তি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারই ছেলে, ছেলের বউ ও মেয়ে। আর কষ্টার্জিত টাকায় সে সম্পত্তি কিনে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসী মো. সুমন। তিনি বাড়ি করার জন্য দুই বছর আগে আফিয়া খাতুনের কাছ থেকে ৯ শতাংশ জমি কিনেন। কিন্তু বর্তমানে বাড়ি করতে এসে পড়েন বাঁধার সম্মুখীন। নিজেদের জমি দাবি করে তাতে বাঁধা দিচ্ছেন প্রবাসী আবদুস সহিদের স্ত্রী শারমিন আক্তার, ফারুক হোসেনের স্ত্রী হাজেরা বেগম এবং তাদের বোন সালেহা বেগম। তারা আফিয়া খাতুনের ছেলের বউ ও মেয়ে।
মো. সুমন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী গ্রামের নানমান হাজী বাড়ির মৃত মো. হানিফের ছেলে ও সাউথ আফ্রিকান প্রবাসী।
জানা যায়, আফিয়া খাতুনের স্বামী মারা যাওয়ার আগে তার দুই ছেলে, তাদের বউ ও তার মেয়ে কৌশলে তাদের পিতার সকল সম্পত্তি লিখে নেয়। এ সময় তারা তাদের অন্ধ এক ভাইসহ দুই ভাইকে বাবার ও তাদের মাকে স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে। এনিয়ে তখন এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এদিকে প্রবাসী মো. সুমন ২ বছর আগে আফিয়া খাতুনের কাছ থেকে লাহারকান্দি ইউনিয়নের আবুর বাপের গোজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে ৯ শতাংশ জমি কিনেন। ঐ জমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক আফিয়া খাতুন।
সম্প্রতি সুমন সে জমিতে বাড়ি করার জন্য মাটি ভরাটের কাজ শুরু করলে একই গ্রামের প্রবাসী আবদুস সহিদের স্ত্রী শারমিন আক্তার, ফারুক হোসেনের স্ত্রী হাজেরা বেগম বাঁধা দেন। তারা দাবি করেন ঐ জমি তাদের স্বামীরা ওয়ারিশ সূত্রে মালিক।
মো. সুমন বলেন, ‘আমার কষ্টার্জিত টাকায় বাড়ি করার জন্য আফিয়া খাতুনের কাছ থেকে জমি কিনেছি। জমি কেনার পর থেকে এই জমি আমার দখলে ছিল। সম্প্রতি প্রবাস থেকে এসে বাড়ি করার জন্য মাটি ভরাট করতে গেলে তারা আমাকে বাঁধা দেয়। তারা আমাকে কোন কাজ করতে দিচ্ছে না। এছাড়া তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট এর প্রতিকার চাই।’
স্থানীয়রা বলেন, ঐ জমির মালিক মৃত আবদুর রহমানের মেয়ে আফিয়া খাতুন। সে পৈত্রিক সূত্রে ঐ জমি পেয়েছে। কিন্তু আফিয়া খাতুনের ছেলেরা তাদের পৈত্রিক জমি দাবি করে বাঁধা দিচ্ছে। আফিয়া খাতুনের এই ছেলে, মেয়ে ও ছেলের বউ এর আগে তাদের পিতার সম্পত্তিও লিখে নিয়েছে। তখন তারা তাদের দুই ভাইকে ও মাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে।
আফিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলেরা আমার কোন খোঁজ খবর নেয় না। তারা তাদের বাবার কাছ থেকে জোর করে জমি লিখে নিয়েছে। আমার চিকিৎসা খরচ ও অন্যান্য খরচ চালানোর জন্য আমার বাবার কাছ থেকে পাওয়া ৯ শতাংশ জমি বিক্রি করেছি। কিন্তু আমার সন্তানরা ও তাদের বউ মিলে সেই জমিও দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে আফিয়া খাতুনের ছেলে ফারুক হোসেনের স্ত্রী হাজেরা বেগম বলেন, ‘আমার শাশুড়ি পৈত্রিক সূত্রে কিছু জমির মালিক হয়েছে, যা বিভিন্ন দাগে। তিনি একই দাগে জমির মালিক নন। তাই আমরা আমাদের জমি দখলে নিতে বাঁধা দিচ্ছি। এখন এ বিষয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি।’