কক্সবাজার ভ্রমণে থেকেও সিলেটে ককটেল ফাটালেন সাংবাদিক রেজা রুবেল!
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৩:২১ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

কক্সবাজারে থেকেও সিলেটে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক আইনের মামলায় আসামি হলেন সাংবাদিক রেজা রুবেল। মামলায় তার বিরুদ্ধে ককটেল ফোটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদি সিলেট মহানগর কৃষক দলের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এবং বারুতখানার উত্তরণ-৬৪ নম্বর বাসার মো. আলী নেওয়াজ খানের ছেলে আলী আরশাদ খাঁন। মামলায় তিনি ৪৮ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত সন্ধ্যায় ও রাত ১০টায় স্বেচ্ছাসেবকদল, যুবদল ও ছাত্রদলের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের মারামারি ও ৩১টি মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজসহ ৪ জন আহত হন। এ ঘটনায় ১৩ এপ্রিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এজাহারে ৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে রেজা রুবেলকে।
ওই মামলার এজাহারের বর্ণনামতে, ১-৯ নম্বর আসামি অন্যদের ককটেল সরবরাহ করেন। পরে সকল আসামি মিলে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা প্রতিবাদ মিছিলে থাকা নেতাকর্মীদের গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। মামলায় রেজা রুবেলকে যুবলীগ নেতা দেখানো হয়েছে।
সাংবাদিক রেজা রুবেল ঘটনার ৪ দিন আগে থেকেই কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। সেখানে তিনি তার বন্ধু সিলেট জেলা যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আলিউর রহমান আলীসহ কয়েকজন ভ্রমণ সঙ্গী ছিলেন। ওই দিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তারা সৌদিয়া পরিবহনের বাসে কক্সবাজার থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং পর দিন সকালে তারা সিলেটে এসে পৌঁছান। কক্সবাজারে অবস্থানকালে রেজা রুবেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তার ফেসবুক আইডি থেকে অনেক লাইভ ভিডিও ও ফটোও আপলোড করেছেন।
ফটো সাংবাদিক রেজা রুবেল সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সহযোগী সদস্য এবং বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক। তিনি স্থানীয় দৈনিক শ্যামল সিলেট ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন এশিয়ান টেলিভিশনের সিলেটের ক্যামেরা পার্সন হিসেবে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে রেজা রুবেল বলেন, ‘ঘটনার চার দিন আগে থেকে আমি কক্সবাজার অবস্থান করছিলাম। সিলেটের বাইরে থাকা স্বত্বেও যড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় আমার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। আমি ব্যক্তি বিশেষের আক্রোশের শিকার।’
মামলায় নাম ঢুকিয়ে হয়রানির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি জোরদাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, ‘একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা রয়েছে। কিন্তু বাদি কাকে আসামি দিচ্ছেন, তাৎক্ষনিক সেটা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। তবে নিরপরাধ কাউকে আসামি করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে মামলার বাদি আলী আরশাদ খাঁনকে ফোন দিলে তিনি আক্রান্ত মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব আজিজুল হক আজিজের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইল ফোন দেন।
এ বিষয়ে আজিজুল হক আজিজ বলেন, ‘ভুল বুঝাবুঝির কারণে সাংবাদিক রেজা রুবেলকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ফটো সাংবাদিক রেজা রুবেলের ওপর মামলার ঘটনায় জরুরী সভা আহ্বান করা হয়। সভা থেকে বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও ভিকটিম স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আজিজুল হক আজিজের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। তারা এই বিষয়টি নিস্পত্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মঈন উদ্দিন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আজ বুধবার জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভা থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’