বাসে তুলে রগ কেটে অটোচালককে খুন


বাসে তুলে রগ কেটে অটোচালককে খুন

সাইড দেওয়া নিয়ে তাকওয়া পরিবহনের বাসচালক ও তার সহকারীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় অটোরিকশাচালক রিটন মিয়ার। এক পর্যায়ে জোর করে রিটনকে বাসে তুলে নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে খুন করে ফেলে রেখে যায় তারা।

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া নতুন বাজার এলাকায় সোমবার (৩ মার্চ) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে হত্যা মামলা করতে স্বজনরা থানায় গেলেও পুলিশ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের মামলা করার পরামর্শ দেয়। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকায় অবস্থান নেন রিটনের সহকর্মী, স্বজন ও এলাকাবাসী।

হত্যা মামলা গ্রহণ ও মহাসড়ক থেকে তাকওয়া পরিবহন নিষিদ্ধের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টা অবস্থান করেন তারা। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে আটকা পড়ে হাজারো যান। ভোগান্তি পোহায় মানুষ। পরে শ্রীপুর থানা হত্যা মামলা নিলে সড়ক ছেড়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

পুলিশ, স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে রিটন মিয়া মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবন নির্বাহ করেন। প্রতিদিনের মতো সোমবার বিকেলে তিনি অটোরিকশা নিয়ে বের হন। এ সময় তাকওয়া পরিবহনের একটি মিনিবাস রিটনের অটোরিকশার পেছনে এসে হর্ন বাজিয়ে সাইড চায় চালক। সামনে গাড়ি থাকার কারণে রিটন সাইড দিতে পারছিলেন না। কিন্তু তাকওয়ার চালক হর্ন বাজানো বন্ধ করেনি। পেছন ফিরে রিটন হর্ন বাজানো বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। এতেই চটে যায় তাকওয়া বাসের চালক ও হেলপার। তারা রিটনকে জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, ‘তুলে নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলের দেড় কিলোমিটার দূরে আমার স্বামীর মরদেহ পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাঁর হাত-পায়ের রগ কাটা রক্তাক্ত মরদেহ পাই। তারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’

রিটনের ছোট ভাই মো. আজিজুল বলেন, ‘থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। রাতভর অবস্থান করেও মামলা করতে পারিনি। আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে। অথচ পুলিশ বলছে সড়ক দুর্ঘটনার মামলা করতে। এ জন্যই স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোরিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করেন। মামলা নেওয়ার পর আন্দোলন থেকে সরে যান তারা।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, রিটনের ভাই তৌহিদ মিয়া তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×