মোবাইল ফোনে অপহৃত সন্তানের চিৎকার শুনে মারা গেলেন মা


Feb 2025/Mother death.jpg

গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে কারখানার দুই কর্মচারীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ দাবির এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা নির্যাতন চালিয়ে মোবাইল ফোনে চিৎকার শোনায় তাদের স্বজনদের। সন্তানের চিৎকার শুনে তাৎক্ষণিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন অপহৃত একজনের মা।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে শ্রীপুর পৌর শহরের লোহাগাছ এলাকা থেকে ওই দুই ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। তারা হলেন মো. মাহিন (২৩) ও আহসান হাবীব (২৫)। তারা দুজনই ওই পৌর শহরের বৈরাগীরচালা এলাকার এসকেবি স্টেইনলেস স্টিল মিলস লিমিটেডের কর্মচারী।

অপহরণের প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে মুক্তি পান তারা। পরে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ওই দুইজনের মধ্যে মো. মাহিন রাজশাহী নগরের রাজপাড়া এলাকার সেলিম রেজার ছেলে ও আহসান হাবীব একই এলাকার নবী হোসেনের ছেলে।

এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে ওই কারখানার ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের দুইজনের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলেন শ্রীপুর পৌর শহরের লোহাগাছ এলাকার মো. সালামতের ছেলে কাদের মিয়া (২৭) ও একই এলাকার তাজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (৩০)। তবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি।

আবদুল কাদের জানান, মাহিন ও আহসান হাবীব পাশে লোহাগাছ এলাকার মোমেনা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থেকে তাদের এখানে চাকরি করেন। গত শুক্রবার কারখানা থেকে কাজ শেষে তারা বাসায় ফেরেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুইজন একসঙ্গে চা পানের জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। ওই সময় চার থেকে পাঁচজনের একটি দল তাদের একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তাদের কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোনসেট নিয়ে একটি ঘরের ভেতর আটকে রেখে তারা নির্যাতন চালায়।

আবদুল কাদের আরো জানান, রাত প্রায় ২টার দিকে আহসান হাবীবের মোবাইল ফোন থেকে তার মায়ের কাছে ফোন করে অপহরণের ঘটনা জানিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী দলের একজন। এক পর্যায়ে ওই দলটির সদস্যরা আহসান হাবীবের ওপর নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনে আহসান হাবীব চিৎকার করলে মোবাইলে ফোনে তার মাকে শোনায় তারা। এতে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত প্রায় আড়াইটার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মা মারা যান।

আবদুল কাদের জানান, ওই ঘটনার পর অপরহরণকারীদের মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে স্বজনদের কেউ সাড়া না দিলে শনিবার সকাল ১০টার দিকে লোহাগাছ এলাকার নির্জন একটি স্থানে ওই দুইজনকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। পরে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×