ঐতিহ্যের স্মারক ১৫০ বছরের পুরনো ঘড়ি; প্রতি ঘন্টায় সময় মনে করিয়ে দেয় সিলেটবাসীকে
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৪:১১ পিএম, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

সিলেটের ক্বীন ব্রিজের পাশেই ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন লাল রঙের ঘড়ি। যেখান দিয়ে প্রতিদিন সিলেট শহরে ঢোকেন কয়েক হাজার মানুষ। সিলেটের প্রবেশের সম্মুখে ভাগেই আলি আমজাদের এই ঘড়িটি ১৫০ বছর থেকে এভাবেই দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে ধারণ করে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বৃটিশ শাসন কিংবা চব্বিশের আন্দোলন সবকিছুরই সাক্ষি সিলেটের এই ঘড়িটি। সময়ের সাথে সবকিছু বদলালেও বদলায়নি ঐতিহ্যের স্মারক বহনকারী ঘড়িটি। কয়েক বছর পর পর রঙ করে ফকফকা করা হলেও স্মৃতি বাচিঁয়ে রাখতে নেয়া হয় না তেমন কোনো উদ্যোগ।
সুরমা নদীর উপর দাড়িয়ে থাকা ক্বীন ব্রিজের পাশে অবস্থিত ঘড়িটির পাশে বিকেলে অবসর সময় কাটাতে আসেন অনেকেই। চারপাশে মাটির তৈরি মৃৎশিল্প দিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। হাতের তৈরি এসব বিক্রি করেই চলছে অনেকের জীবিকা। অপর পাশে চটপটি আর ফুচকা খেতে লাইন ধরে আড্ডায় মেতে ওঠেন অনেকেই। সবকিছুই মূলত ওই আলি আমজাদের ঘড়ি কেন্দ্রীক। যে জিনিসকে কেন্দ্র করেই সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে এ এলাকার। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ১৫০ বছরের পুরনো এই ঘড়িটি মধ্যখানে কিছু দিন নষ্ট থাকলেও সিলেট সিটি করপোরেশন টিক করে দেয়। যার ফলে প্রতি ঘন্টায় শহরবাসীকে এলার্মের মতো সময় স্মরণ করিয়ে দেয়।
জানা গেছে, ১৮৭৪ সালে তৎকালীন বড় লাট লর্ড নর্থব্রুক সিলেট সফরে এসেছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ওই বছর মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার নবাব আলী আহমদ খান ঘড়িটি নির্মাণ করেন। নামকরণ করেন নিজের ছেলে আলী আমজাদ খানের নামে। সেই থেকে এটি আলী আমজাদের ঘড়ি নামে পরিচিত। আলী আমজাদের ঘড়ির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি ও প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি। নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত উচ্চতা ১৩ ফুট, ছাদ থেকে ঘড়ি অংশের উচ্চতা ৭ ফুট, ঘড়ির ওপরের অংশের উচ্চতা ৬ ফুট। মোট উচ্চতা ২৬ ফুট। ঘড়িটির ডায়ামিটার আড়াই ফুট ও ঘড়ির কাঁটা ২ ফুট লম্বা। লোহার খুঁটির ওপর ঢেউটিন দিয়ে সুউচ্চ গম্বুজ আকৃতি তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষাবিদ মজির উদ্দিন আনছার বলেন, ‘আমাদের জন্মের পর থেকেই আলি আমজাদের এই ঘড়িটি দেখতে পাচ্ছি। এটা দেখার জন্য অনেকেই দূর থেকে ছুটে আসেন। তবে, সময়ের সাথে কিছু নতুনত্ব নিয়ে আসলে ঘড়িটি আরো শত বছর সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব।’