মেরুদণ্ডহীন ইসির সুষ্ঠু নির্বাচন করার যোগ্যতা নেই: হাসনাত


মেরুদণ্ডহীন ইসির সুষ্ঠু নির্বাচন করার যোগ্যতা নেই: হাসনাত

নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও কার্যক্ষমতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁর ভাষ্য, বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিরপেক্ষতা হারিয়েছে এবং ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছামতো পরিচালিত হচ্ছে, ফলে তাদের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।

রোববার, ১৯ অক্টোবর, নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে প্রতীক বরাদ্দ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

হাসনাত বলেন, “আমাদের প্রতীকের বিষয়ে কথা বলতে এসেছি। ইসির মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক অটোক্রেসি তৈরি হয়েছে। বিদ্যমান দলগুলোকে যে মার্কা দেওয়া হয়েছে তাতে কোনো নীতিমালা নেই। মধ্যযুগীয় বর্বর শাসনব্যবস্থা যেমন দেখতাম, রাজা যেমন ইচ্ছা করছে...। রাজা বাদশাহদের আচরণের সঙ্গে তাদের সাদৃশ্য রয়েছে। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছা নয়, নীতির মাধ্যমে চলতে হবে ইসিকে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক বাস্তবতা উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা জনগণের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে। ইসি সিদ্ধান্তগুলো কীভাবে নিচ্ছে, তা স্পষ্ট নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

“আইনগত ব্যাখ্যা যতক্ষণ না হচ্ছে; আমরা ধরে নেবো, সিদ্ধান্তগুলো চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে,” বলেন হাসনাত। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্তে নয়, বাইরের নির্দেশে চলছে। “ইসির রিমোট আগারগাঁওয়ে নেই, অন্য জায়গায়। তাদের আচরণে মনে হয় না সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবেন।”

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণকে ঘিরে কমিশনারের এক মন্তব্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। হাসনাত বলেন, “নির্বাচন কমিশনার রহমানেল মাছউদ বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এ ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। মার্কা নিয়ে যে স্বেচ্ছাচারী আচরণ, একটা অটোক্রেসি তৈরি করেছে, যে তারা ব্যাখ্যা দেবে না। অথচ ইসি একটি জনগণের প্রতিষ্ঠান।”

হাসনাত আরও বলেন, “এ ইসির একটা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার যোগ্যতা নেই। স্পাইনলেস কমিশন এটা। বিভিন্ন পক্ষের ইনভল্ভমেন্ট রয়েছে। যারা নিয়োগ দিয়েছে, তাদের পারপাস ইসির ব্যানারে সার্ভ করছে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি জনআকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করা হয়, তবে তার প্রতিক্রিয়া ভয়াবহ হতে পারে। “গণবিদ্বেষ হলে চাপিয়ে রাখা যায় না। যে গণবিদ্বেষ হবে তাতে নূরুল হুদার পরিণতি হবে, তা আমরা চাই না।”

প্রতীক বিতর্কে নিজের দলের অবস্থান পরিষ্কার করে হাসনাত বলেন, “শাপলা ছাড়া বিকল্প কোনো অপশন নেই। কারণ ইসি আইনগত ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। আমরা কেন মেনে নেবো। কেবল হোমজিক্যালি একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছে। কোনো বিকল্পের অবকাশ নেই।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন নীতিগত অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ক্ষমতাসীনদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×