সারাদেশে পুলিশের সব ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫০ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ। এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য হামলার ঝুঁকি মাথায় রেখে সারাদেশে পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে চূড়ান্ত সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে, বিশেষ করে ‘কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন’ বা কেপিআই এলাকায় বাড়ানো হয়েছে টহল।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ আগুনের পরপরই পুলিশের শীর্ষ দপ্তর থেকে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব কেপিআই রয়েছে, সেসব এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার মৌখিক নির্দেশ চলে গেছে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে। এরই মধ্যে অনেক জেলায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশের টহল, বসানো হয়েছে অতিরিক্ত চেকপোস্ট, সন্দেহভাজনদেরও আটক করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, "নির্দেশনার পর আমরা বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়িয়েছি, গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।"
পুলিশ সদর দপ্তরের এক সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকেই কেপিআইগুলোর আশপাশে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকায় কেপিআই স্থাপনাগুলোর প্রতি বিশেষ নজরদারি বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, "দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সারাবছরই নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা থাকে। কেপিআই এলাকাগুলোর নিরাপত্তায় পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।"
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ৫৮৭টি কেপিআই চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ ভবন, বিমানবন্দর, সচিবালয়, বিটিভি ভবন, কারাগার এবং বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র। এসব স্থাপনার নিরাপত্তা কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের সরকারি নীতিমালা কমিটি সক্রিয় রয়েছে।
অন্যদিকে, শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, “সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, তা সরকার গভীরভাবে অবগত। আমরা নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে চাই, প্রতিটি ঘটনা তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলো জনগণের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।”
সরকার আরও জানায়, “যদি কোনো ঘটনার পেছনে নাশকতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অপরাধমূলক তৎপরতা বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন বা রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে দেওয়া হবে না। যদি এসব ঘটনা পরিকল্পিত হয় এবং আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে তা সফল হবে কেবল তখনই, যখন আমরা ভয়কে আমাদের নীতিনির্ধারণ ও দৃঢ়তার ওপর প্রাধান্য দিতে দেব।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশ অতীতেও অনেক কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। ঐক্য, সংযম ও দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রের পথে যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করব। আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রতিহত করতে প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে।