সাবেক ওসি নেজামকে পেটানো সেই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বহিষ্কার
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:২১ পিএম, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫

চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা (সাবেক ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীনকে পেটানোর ঘটনায় চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক) স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। বহিষ্কৃত নাম শহীদুল ইসলাম শহীদ চট্টগ্রামের চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম শহীদকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।’
এর আগে সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে সিটির পাঁচলাইশ থানার এলাকায় একটি স্কুল থেকে সন্তানকে আনতে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। এ সময় সেখানে চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম শহীদ এবং দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নুর হোসেন ছিলেন। একপর্যায়ে নেজামের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে পরনের শার্ট ছিঁড়ে ফেলে তাকে মারধরও করা হয়।
নেজাম উদ্দিন সিটির কোতোয়ালি, বাকলিয়া, সদরঘাট ও সর্বশেষ পটিয়া থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের নিন্দা ও প্রতিবাদ: এদিকে, চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি কামরুল হাসান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু সাক্ষরিত বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নেজাম উদ্দিন স্থানীয় একটি স্কুল থেকে তার সন্তানকে আনতে যান। এ সময় চট্রগ্রাম পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সামনে চকবাজার থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম শহীদ সহ স্থানীয় কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা প্রকাশ্যে ফেসবুক লাইভে গিয়ে তার সন্তানের সামনে তাকে (সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নেজাম উদ্দিন) মারধর করেন। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে ভাইরাল হয়।’
‘সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনের শার্টের কলার ধরে টেনেহিচড়ে ছিড়ে ফেলা এবং চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি মারার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মনে গভীর সমবেদনা তৈরী হয়েছে। একজন পুলিশ অফিসারকে এভাবে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত ও মারধর করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া দন্ডনীয় ও ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আমরা সব নাগরিককে আহ্বান জানাচ্ছি, আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে যে কোন অসন্তোষ বা অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনানুগ পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এ ধরনের ঘটনা সরকারি কর্মচারীদের মনোবল ও কর্মস্পৃহা নষ্ট করে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সাবেক ওসি মোঃ নেজাম উদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।ৎ
‘আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা প্রতিরোধে সরকার ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে, যাতে বাংলাদেশ পুলিশ আরও কার্যকর ও জনবান্ধব হয়ে উঠতে পারে।’