
রাজধানীর হাজারীবাগে একটি নারী হোস্টেল থেকে ধানমন্ডি শাখার এনসিপি নেত্রী জান্নাত আরা রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) জিগাতলা জান্নাত নারী হোস্টেলের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে তার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
রুমী এনসিপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ধানমন্ডি থানার যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন। চলতি বছরের ৬ নভেম্বর ঘোষিত সমন্বয় কমিটিতে তার নামও স্থান পেয়েছিল। রুমী নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নাজিরপুর থানার মো. জাকির হোসেনের কন্যা। তার মায়ের নাম নুরজাহান।
পুলিশ জানিয়েছে, ভোরে ছাত্রী হোস্টেল কর্তৃপক্ষ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে রুমীর বিষয়ে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
রুমীর মৃত্যুর ঘটনায় দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে একাধিক পোস্ট ও স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। একটিতে রুমী সহযোদ্ধার সঙ্গে মেসেঞ্জারে লিখেছেন, "আমার জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যু।" পোস্টে তিনি হুমকি-ধমকি ও সাইবার বুলিংয়ের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কথাও উল্লেখ করেছেন।
তারেক রেজা ফেসবুকে লিখেছেন, কিভাবে লিখব বুঝছি না। আমার হাত কাঁপছে। আপনাদের মনে থাকার কথা, গত মাসে শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের দিন ধানমণ্ডি ৩২-এ ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগাররা কী সিন ক্রিয়েট করেছিল। সেখানে একজন জেন-জি নারীকে আপনারা দেখেছিলেন, এক আওয়ামী লীগারকে (যে জিয়ার কবর খুড়তে চাইছিল) পিটায়ে পুলিশের কাছে ধরায়ে দিতে।
তিনি বলেন, সেই জেন-জি নারী গত এক মাস ধরে আওয়ামী লীগের ক্রমাগত সাইবার বুলিং, হত্যা ও রেপ থ্রেটে অতিষ্ঠ হয়ে আজ রাতে আত্মহত্যা করেছেন। নাম: জান্নাত আরা রুমি, যুগ্ম সমন্বয়কারী, এনসিপি ধানমণ্ডি থানা। ধানমণ্ডির ভাইব্রাদারদের সঙ্গে কথা হলো। তারা গত এক মাসে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে তার পাশে থাকার।
সাইবার বুলিং আর ফোনকলে সারা দিন থ্রেট পাওয়ার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য পাওয়া যায়নি অভিযোগ করে তারেক বলেন, কারোর কল্পনাতেও ছিল না, বুলিংয়ের মাত্রা এত তীব্র যে, সে আত্মহননের পথ বেছে নেবে।
এটাকে আমরা আত্মহত্যা হিসেবে দেখতে রাজি নই। এটা খুন। যারা আমার বোনের জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে, তাদের জীবন আমরা শান্তিতে কাটাতে দেব না। আমার বোনের রক্তের শপথ!