
রিভাইজড কলিং ভিসা ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় চলতি বছরের ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে ২৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫৬ জন বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ দেবে মালয়েশিয়া। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মালয়েশিয়ান বিজনেস টুডে।
এই বিপুল নিয়োগ প্রক্রিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় সুযোগ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিয়ন ইসলাইল সম্প্রতি মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী চার মাসের মধ্যে কৃষি, বনায়ন, খনিজ সম্পদ আহরণ, কারখানায় উৎপাদন, ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণ এবং সংশ্লিষ্ট ১৩টি উপখাত ও পরিষেবা খাতে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হবে।
মালয়েশিয়ার কৃষি, শিল্প এবং খনিজসম্পদ সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক সংকট বিরাজ করছে এবং সময়ের সঙ্গে তা আরও প্রকট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি শ্রমবাজারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রাখা মালয়েশিয়া নতুন করে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কঠোর নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা হবে।
সরকারি সূত্র জানায়, কৃষি খাতে রাবার, পাম তেল ও মাছ উৎপাদন এবং সংশ্লিষ্ট পরিষেবা খাতে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্মাণ খাতে নিযুক্ত কর্মীরা শুধু সরকারি প্রকল্প ও অবকাঠামোগুলোর কাজ করতে পারবেন। কারখানাগুলোর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা)-এর অনুমোদিত শিল্প কারখানাতেই নিয়োগ পাবেন শ্রমিকরা।
এখন আর আগের মতো কেউ নিজে বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন না। নতুন ব্যবস্থায় আবেদন করতে হবে সরকারের অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমে। সেই আবেদন যাচাই-বাছাই করবে স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি। নির্বাচিত আবেদনকারীরাই মালয়েশিয়ার কর্মী ভিসা পাবেন।
উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৯০-এর দশকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের বড় অংশ কাজ করতেন। তবে এখন সেখানে ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভারত ও ভিয়েতনামের শ্রমিকরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন।
তবে কুয়ালালামপুর ও ঢাকার মধ্যকার সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নকে কেন্দ্র করে আশা করা হচ্ছে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকেও বড় সংখ্যক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ পাবেন।