
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ভোটার তালিকার বিশেষ তদারকি বা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) নিয়ে রাজনীতি তীব্র রূপ নিচ্ছে। এই উত্তেজনার মধ্যে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মীসভায় প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বিজেপিকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলা জিতে দিল্লি কাড়ব। ওরা (বিজেপি) মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়, টোটাল অটোক্র্যাসি চলছে। ৪৬ জন ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন। তারমধ্যে অর্ধেকের বেশি হিন্দুও আছেন।’
মমতা অভিযোগ করেন, যদিও এসআইআর প্রক্রিয়াটি সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে চলে, এবার তা অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত সম্পন্ন করা হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়াকে ‘ব্লান্ডার’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘টোটালটাই আনপ্ল্যানড, বিজেপির কথায় বিজেপির কমিশন। বিজেপি তুমি আমাদের সঙ্গে কোনও কিছু খেলেই কিছু করতে পারবে না। তুমি সব এজেন্সিকে দালাল বানিয়েছো। বিজেপির দাবি আরও নাকি দেড় থেকে দুই কোটি নাম বাদ দিতে হবে।’
বিজেপিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলায় আপনারা লড়াই করুন, বাংলায় লড়াই করলে ওর দিল্লি কেড়ে নেব। চাইলে আমার গলাটাও কেটে দিতে পারেন, কিন্তু আমি মানুষের কথাই বলব।’
এদিন মমতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এসআইআর-র মাধ্যমে ভোটার তালিকা পরিবর্তন হলেও তা ভোটবাক্সের ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি অভিযোগ তুলেছেন যে তারা প্রতিদিন নির্দেশ বদলাচ্ছে, এবং এ পর্যন্ত অন্তত ২২ থেকে ২৪ বার নির্দেশ পরিবর্তন করা হয়েছে। এর ফলে বৈধ ভোটাররা বিভ্রান্তি ও হয়রানির মুখে পড়ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী দলের কর্মীদের নির্দেশ দেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করতে, যে ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তারা প্রকৃতপক্ষে উপস্থিত আছে কিনা। তিনি বলেন, যদি এমন ভোটার খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে তারা যেন যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
এসআইআর-এর খসড়া অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৫৮ লাখ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। মমতা এদিন দলের বিধায়ক ও কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, যাদের তালিকায় অসঙ্গতি ধরা পড়েছে বা যারা শুনানির নোটিশ পেয়েছেন, তাদের যথাযথ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস