.png)
যুক্তরাষ্ট্রে ছয় হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট। আইন লঙ্ঘন, মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসায় অবস্থান এবং নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী হামলা, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, চুরি সহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর পাশাপাশি কিছু ভিসাধারীর বিরুদ্ধে “সন্ত্রাসবাদে সহায়তা”র অভিযোগও আনা হয়েছে।
বিবিসির ভাষ্যমতে, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারির অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে “সন্ত্রাসবাদে সহায়তা” বলতে আসলে কী বোঝানো হয়েছে, তা পরিষ্কার করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনে অংশ নেওয়া কিছু শিক্ষার্থীকেও ট্রাম্প প্রশাসন টার্গেট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইহুদি-বিরোধী আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অধিকৃত তথ্য অনুযায়ী, বাতিল হওয়া ভিসার মধ্যে প্রায় চার হাজার আইন ভঙ্গের কারণে বাতিল হয়েছে। এছাড়া ২০০ থেকে ৩০০ ভিসা বাতিল হয়েছে অভিবাসন আইনের ৩বি ধারা অনুযায়ী, যেখানে “সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ”কে মানবজীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ বা বেআইনি কর্মকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকারের সময়সূচি স্থগিত করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পরে জুনে সাক্ষাৎকার চালু হলেও ঘোষণা দেওয়া হয়, আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট জমা দিতে হবে এবং তাদের পোস্ট খতিয়ে দেখা হবে, যুক্তরাষ্ট্র বা এর জনগণ ও সংস্কৃতির প্রতি বিদ্বেষের কোনো ইঙ্গিত আছে কি না।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যেসব ব্যক্তি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন বা প্রচারণা চালান, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করেন কিংবা বেআইনি ইহুদি-বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের শনাক্ত করতে হবে।
মে মাসে কংগ্রেসে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, জানুয়ারি থেকে হাজারো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তার ভাষায়, “সর্বশেষ সংখ্যা আমার জানা নেই, তবে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অতিথি হিসেবে আসা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা করছে, তাদের ভিসা আমরা বাতিল করতে থাকব।”
এদিকে ডেমোক্র্যাটরা এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, এটি শিক্ষার্থীদের আইনি অধিকার খর্ব করছে।
‘ওপেন ডোরস’ নামের সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ২১০টিরও বেশি দেশ থেকে ১১ লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন।