
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) আসনে একটি ভিডিও ফুটেজকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে এলাকায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের ওয়ার্ড হচ্ছে ৭ নম্বর ওয়ার্ড, ধানের শীষের বাইরে গেলে কারো পিঠের চামড়া রাখব না’—স্থানীয় ভাষায় যা ‘বাকলা রাখব না’ বলে পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর পক্ষে ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র কমিটি গঠনের সময় ওই মন্তব্য করা হয়।
ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। জহিরাবাদ ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মোবারক হোসেন নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্লোগান হলো, শক্তি কিংবা ভয় দেখিয়ে নয়, ইনসাফ ও উদারতা দিয়ে মানুষের মন জয় করুন। আর এখানে বলা হচ্ছে “বাকলা রাখব না”। এটা কার আদর্শ?’
একইভাবে গজরা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বাবু প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, বিএনপির বাইরে কেউ ভোট দিতে পারবে না—এমন বক্তব্য গণতন্ত্রবিরোধী এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তিনি উল্লেখ করেন, ‘ভোট যার, সিদ্ধান্ত তার’—এটাই বিএনপির রাজনীতি।
আরিফুল ইসলাম বাবু আরও বলেন, যারা এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে, তারা প্রকৃত অর্থে বিএনপির কর্মী নয়; বরং দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
ভিডিওকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর-২ আসনে নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। স্বাধীন ও নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ফরাজিকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান গাজীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
চাঁদপুর জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দলের আদর্শ ও নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে যেন কেউ এমন বক্তব্য দিতে না পারে, সে বিষয়ে দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি।