
এক মার্কিন আইনজীবী মার্ক স্টিভেন জাকারবার্গ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে তিনি ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ নন। নামের এই দৈব মিলের কারণে ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের এই আইনজীবী বারবার সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, স্টিভেন দাবি করেছেন, ফেসবুক বারবার তার অ্যাকাউন্ট অকার্যকর করেছে। মূল অভিযোগ ছিল, তিনি “জনপ্রিয় তারকার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট” খুলেছেন। আইনজীবী জানিয়েছেন, গত আট বছরে পাঁচবার তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার ডলারের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি মেটাকে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে মামলা করেছেন।
স্টিভেন স্থানীয় টিভি চ্যানেল ডব্লিউটিএইচআরকে বলেছেন, “শুনতে হাস্যকর মনে হলেও এটি কোনো মজার ঘটনা নয়, বিশেষ করে যখন তারা আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এটি অনেকটা এমন, আপনি একটি বিলবোর্ড কিনলেন, কিন্তু মালিক এসে সেটি একটি বিশাল কম্বল দিয়ে ঢেকে দিল।”
ঘটনার পর মেটা তার অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করেছে এবং জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ভুল যাতে না হয়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মেটার বিবৃতিতে বলা হয়, “মি. (মার্ক এস) জাকারবার্গ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন, এজন্য আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই।”
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, স্টিভেন ৩৮ বছর ধরে আইন পেশায় আছেন। তিনি ফেসবুকের জনপ্রিয়তার পরই তার নামের কারণে সমস্যায় পড়েন। সর্বশেষ মে মাসে তার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়েছিল এবং মামলার পর পুনরায় চালু হয়।
স্টিভেন জানান, ফটো আইডি, ক্রেডিট কার্ড, জন্ম সনদ ও অসংখ্য সেলফি দিয়েও তিনি তার স্বতন্ত্র পরিচয় প্রমাণ করতে পারেননি। ফেসবুক তাকে “ফেইক জাকারবার্গ” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি বলেন, “আমার নাম মার্ক স্টিভেন জাকারবার্গ, তার নাম মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ।”
তিনি এই অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি ওয়েবসাইটও তৈরি করেছেন, যার নাম “I Am Mark Zuckerberg”। সেখানে তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গের সঙ্গে নামের মিলের কারণে যে সব দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন, তা তুলে ধরেছেন।
স্টিভেন আরও জানিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন মানুষ তাকে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মনে করে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায়। তার অ্যাকাউন্ট প্রায়ই হ্যাক হয়, তাই তাকে দিনে তিন থেকে চারবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হয়।
সবকিছু সত্ত্বেও তিনি মেটা বা মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গের প্রতি ক্ষোভ রাখেন না। তিনি বলেন, “যদি কখনো মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ ইন্ডিয়ানায় এসে আর্থিক সমস্যায় পড়েন, তবে আমি বিনা পারিশ্রমিকে তার আইনি লড়াইয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত।”
সূত্র: বিবিসি