ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় একদিনেই ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে ইসরাইলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছেন।
সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে দেইর আল-বালাহ শহরে। সেখানে শিশুখাদ্য সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একসঙ্গে ১৫ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৯ শিশু ও ৪ নারী ছিলেন। হামলায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “যখন মানুষ বেঁচে থাকার জন্য সাহায্যের জন্য লাইনে দাঁড়ায়, তখন তাদের ওপর হামলা চালানো সম্পূর্ণ অমানবিক।” তিনি গাজায় ক্রমবর্ধমান অনাহার ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও তুলে ধরেন।
রাসেল আরও বলেন, ইসরাইল যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলে এবং এই হামলার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করা হয়।
হামাস এক বিবৃতিতে এই হামলাকে গাজায় “গণহত্যার ধারাবাহিকতা” বলে উল্লেখ করে জানায়, ইসরাইল নিয়মিতভাবে স্কুল, রাস্তাঘাট, শরণার্থী শিবির ও সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাস এটিকে একটি পরিকল্পিত জাতিগত নিধন হিসেবে অভিহিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত ও প্রায় ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপর থেকেই ইসরায়েল গাজায় টানা প্রতিশোধমূলক অভিযান চালিয়ে আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ।