
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে রক্তক্ষয়ী দিন কাটাল সাধারণ মানুষ। ত্রাণ সংগ্রহের সময় গুলিবর্ষণসহ বিভিন্ন হামলায় একদিনে অন্তত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭ জন।
রোববার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালগুলোতে ৪৭ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২২৬ জন। এ নিয়ে চলমান ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজারে পৌঁছেছে, আর আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮৬ জন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বহু মৃতদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপ ও রাস্তায় পড়ে আছে, যেগুলো উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
মানবিক সহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষদের ওপরও থেমে নেই হামলা। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রাণের লাইনে গুলিতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১৩২ জনের বেশি। গত ২৭ মে থেকে এভাবে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৯৩৮ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪২০ জনেরও বেশি।
এছাড়া, অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে গত একদিনে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ২ শিশু রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষুধা-সংক্রান্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৮-এ, যার মধ্যে ১১০ জনই শিশু। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ায় ২৪ লাখ মানুষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল গাজায় পূর্ণাঙ্গ হামলা শুরু করে। এর মাধ্যমে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভেঙে যায়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৩ হাজার ৮৪৫ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজার যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলছে।