
দীর্ঘ দেড় বছর ধরে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম চালিয়ে অবশেষে থেমে গেল গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফিকের হৃদস্পন্দন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত এই সাহসী যোদ্ধার মৃত্যুতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটসহ স্থানীয় জুলাই যোদ্ধা ও স্বজনদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সোমবার ৩০ ডিসেম্বর সকালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
শফিকুল ইসলাম ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি আব্দুস সামাদের ছেলে এবং পরিবার নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী পূর্ব এলাকায় বসবাস করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম সরকারিভাবে গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। তার গেজেট নম্বর ৭২২। গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর উত্তরা আজমপুর এলাকায় গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিতে গিয়ে তিনি ডান পায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হন। আহত হওয়ার পর প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান নিটোর পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। সরকারিভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হলেও তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
হালুয়াঘাট উপজেলার জুলাই শহীদ ও আহত সেলের প্রতিনিধি রিদওয়ান সিদ্দিকী জানান, “পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় হালুয়াঘাট উপজেলার দর্শারপাড় মামা পাগলা মাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।” জানাজা শেষে তাকে নিজ বাড়িতে দাফন করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির শহীদ ও আহত সেলের সমন্বয়কারী আল নূর মোহাম্মদ আয়াস বলেন, “শফিকুলের মৃত্যু আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে- আহত জুলাই যোদ্ধারা এখনও উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। শহীদ পরিবারগুলো ন্যায়বিচার পাচ্ছে না।”