
নোয়াখালী–৬ (হাতিয়া) আসনে এবার অদ্ভুত এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাচ্ছে—একই আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তার বাবা আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেক পৃথক দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন।
দু’জনই সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে আব্দুল হান্নান মাসউদ শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করছেন, আর তার বাবা আবদুল মালেক বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) হয়ে একতারা প্রতীকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামছেন।
একই আসন থেকে বাবা-ছেলে প্রার্থীর উপস্থিতি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ বলছেন এটি নবীন ও প্রবীণ নেতৃত্বের প্রতীকী লড়াই, আবার কেউ এটিকে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের নতুন কৌশল হিসেবে দেখছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন প্রার্থী বিন্যাস ভোটের মাঠে শক্তির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশের আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে লড়াই করেছি। তবে ভোটের অভিজ্ঞতা আমার জন্য একেবারেই নতুন। ভোটার হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। নোয়াখালী–৬ আসনের বাকি ১৩ জনের মধ্যে আমার বাবা একজন প্রবীণ ও অভিজ্ঞ মানুষ। তাই তার মনোনয়নপত্র দাখিল করাকে আমি উৎসাহিত করেছি। ভোটের মাঠে তার কাছ থেকেও নতুন কিছু শেখার সুযোগ হবে। আমি শাপলা কলি প্রতীকে লড়ব এবং বাবার এই নির্বাচনী লড়াইকেও আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।”
তবে এ বিষয়ে আব্দুল মালেকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, নোয়াখালীর ছয়টি আসনে ৮৮টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ৬২ জন প্রার্থী জমা দিয়েছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই কার্যক্রম চলবে।
এবার নোয়াখালী–৬ আসনে মোট ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রার্থীরা হলো- জামায়াতে ইসলামী থেকে অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে আবদুল হান্নান মাসউদ, বিএনপি থেকে মো. মাহবুবুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মোহাম্মদ ফজলুল আজিম, শামীমা আজিম, তানভীর উদ্দিন রাজিব, মুহাম্মদ নুরুল আমীন।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে এ. টি. এম নবী উল্যাহ, নাছিম উদ্দিন মো. বায়েজীদ। অন্যান্য দলের মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব, গণঅধিকার পরিষদের মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম শরীফ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মোহাম্মদ আবুল হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেক।