
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) আর শুটিংয়ের কেন্দ্র হিসেবে থাকছে না- বরং এটি পরিণত হবে চলচ্চিত্র গবেষণার বিশেষায়িত পরিসরে। সব ধরনের শুটিং কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়া হবে কবিরপুর ফিল্ম সিটিতে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এফডিসিতে আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বিজনেস অটোমেশন সার্ভিস, সিনে-আর্কাইভ, সংস্কার করা সাউন্ড রেকর্ডিং স্টুডিও এবং ঝর্ণা স্পট উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহফুজ আলম বলেন, ‘সামনে এই এফডিসিতে এসে কেউ শুটিং করবেন না, শুটিং করবেন কবিরপুর ফিল্ম সিটিতে। এফডিসির এই জায়গাটা থাকবে গবেষণার জন্য। স্ক্রিপ্টিং থেকে ডিস্ট্রিবিউশন পর্যন্ত চলচ্চিত্রকে একটা ইকো সিস্টেমের মধ্যে আনা হবে।’
বাংলাদেশের সিনেমাকে বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করাই আমার স্বপ্ন। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য গুণগতমান সম্পন্ন কন্টেন্ট নির্মাণ করতে হবে। দেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পারলে আমরা নিজেরাই সম্মানিত হবো।’
দেশজুড়ে একাধিক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘সিনেমা হল যেহেতু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেহেতু প্রতিটি বড় শহরে সিনেপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
সরকারি অনুদানের নীতিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির কথাও জানান তিনি। বাণিজ্যিক ও শিল্পধারার চলচ্চিত্রে অনুদান বিভাজন বাতিল করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমরা ভালো সিনেমাকে অনুদান দেব। বাণিজ্যিক আর অবাণিজ্যিক- কোনো ধারায় অনুদানকে বিভক্ত করতে চাই না। বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক সব ভালো সিনেমাকেই আমরা অনুদান দেব।’
এসময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে যারা দায়িত্ব নেবেন তারাও এই ধারাবাহিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় কাজ করে যাবেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি শাহীন সুমন এবং অভিনয়শিল্পী বাপ্পারাজও বক্তব্য দেন। আলোচনার পর একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।