
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্র জমা নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা জাতিকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তির পথে যে অবদান রেখেছ, তা জাতি মনে রাখবে। ভবিষ্যতেও গণতান্ত্রিক উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
বুধবার(১০ ডিসেম্বর) বিকেল পাঁচটার মধ্যে দুই উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তা গ্রহণ করেছেন, এবং তাদের পদত্যাগ নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে বলে নিশ্চিত করেছেন।
যমুনায় বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর দুজন ছাত্রনেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। এত অল্প সময়ে তোমরা জাতির জন্য যা করেছ, তা ভুলে যাওয়ার নয়। এটি কেবল একটি রূপান্তর; আগামী দিনে তোমরা আরও বড় পরিসরে দেশের জন্য কাজ করবে।”
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব থেকে আসা ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্য থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন মাহফুজ ও আসিফ। মাহফুজ আলম দায়িত্বে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে, আর আসিফ মাহমুদ দায়িত্ব পালন করছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের।
মাহফুজ আলম গত বছরের ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে যোগ দেন এবং ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর তাকে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আসিফ মাহমুদ প্রথমে দায়িত্ব পান শ্রম ও যুব-ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। পরে গত নভেম্বরে তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ২৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদে মোট তিনজন ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধি।
প্রথমে ২৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন নাহিদ ইসলাম এবং পরে এনসিপির আহ্বায়ক হন। আজ মাহফুজ ও আসিফের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র প্রতিনিধিদের অধ্যায় সম্পূর্ণরূপে শেষ হলো।