
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যা ও মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ বন্ধের দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৩ আগস্ট) সকালের এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ, যারা বিশ্বব্যাপী এই সহিংসতা রোধে সোচ্চার ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাবেশে অংশ নেওয়া জনতা ইন্দোনেশিয়ার সরকারকে ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আরও দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, বিক্ষোভ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রদানের আহ্বান ও মানবিক সহায়তার জোরালো অনুরোধ।
বক্তারা ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ানোর প্রতি অনুরোধ জানান, তিনি যেন গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ বন্ধে মুসলিম দেশসহ আন্তর্জাতিক মহলে একটি ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন।
সমাবেশের নেতারা বলেন, 'আমাদের (ইন্দোনেশিয়ার) ১৯৪৫ সালের সংবিধান অনুসারে, ফিলিস্তিনি জনগণের পূর্ণ স্বাধীনতার প্রতি জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। উপনিবেশবাদকে অবশ্যই বিলুপ্ত করতে হবে, কারণ এটি মানবতা এবং ন্যায়বিচার থেকে বিচ্যুত।'
বিক্ষোভকারীরা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও দুর্ভিক্ষকে 'গণহত্যা' হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারা বলেন, হাজার হাজার নিরীহ মানুষ হত্যা ও লক্ষাধিক মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে এই আক্রমণ।
তারা আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'যাদের এখনো বিবেক ও মানবতা আছে - তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, 'গাজার জনগণের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ এবং যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে অনাহার ব্যবহার বন্ধ করার জন্য অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।'
বিক্ষোভকারীরা মিশর ও জর্ডান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অবিলম্বে গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ তুলে নেওয়া এবং টেকসইভাবে মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করা জরুরি।
পাঁচ দফা দাবির শেষাংশে তারা ইসরায়েলের 'জায়নিস্ট শাসনের' সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পণ্যের বর্জন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, যতদিন না গণহত্যা বন্ধ হয় এবং ফিলিস্তিন পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে, ততদিন বিশ্ববাসীকে প্রার্থনা চালিয়ে যেতে হবে।
এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুগিওনো, সংস্কৃতিমন্ত্রী ফাদলি জোন এবং সংসদ সদস্য মারদানি আলী সেরা, যাঁরা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান।
এক বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুগিওনো ঘোষণা দেন, গাজার জনগণের জন্য ইন্দোনেশিয়া ১০ হাজার টন চাল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তারিখ নির্ধারিত না হলেও তিনি জানান, সহায়তা খুব শিগগিরই পাঠানো হবে।