
বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, আজ যারা স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চায়, তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমাদের সবার সতর্ক থাকা জরুরি।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহত্তর মিরপুরস্থ জাতীয়তাবাদী শিক্ষক কর্মচারী জনতা পরিবার আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উদযাপন-২০২৫’ এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
আমিনুল হক অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা উন্মুখ হয়ে আছে কবে নাগরিক অধিকার ফিরে পাবে। সেই অধিকার ফিরিয়ে এনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের সরকারই জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে এবং জনগণের ইচ্ছানুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি জনগণের জন্য রাজনীতি করে, ক্ষমতার জন্য নয়। দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে সাধারণ মানুষের ওপর অন্যায় প্রভাব বিস্তার করেছে, আপনারা কেউ সে পথে হাঁটবেন না। বিএনপি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাস করে, জনগণের সমস্যাকে নিজেদের সমস্যা মনে করে সমাধান করাই আমাদের রাজনীতি।
তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মপরিকল্পনার প্রসঙ্গ টেনে আমিনুল হক বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের ভবিষ্যৎ সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। ইনশাল্লাহ, সেই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি আধুনিক, মানবিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়েছে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে। আমরা চাই না শিক্ষকরা বিএনপি হওয়ার জন্য চাপ অনুভব করুক। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে চলবে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের নিজস্ব সত্ত্বা ধরে রেখে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করবেন।
ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে বিকৃত ইতিহাস পড়ানো হয়েছে। বিএনপি সেই বিকৃতি দূর করে সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে চায়। শিক্ষক-শিক্ষিকারাই হবেন সেই দায়িত্বের বাহক।
শহীদ পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, বীর শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। তাদের পরিবারকে বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় খেতাব ও মর্যাদা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবসময় শহীদ পরিবার ও আহতদের পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর মিরপুর থানা যুবদলের আহ্বায়ক মো. শাকিল মোল্লা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, দারুসসালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক এস এ সিদ্দিক সাজু এবং এ খালেক চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক। এছাড়া শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।