সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে: বিএনপি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কিভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। ‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি। সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

সুযোগ থাকলে ফিলিস্তিনের পক্ষে যুদ্ধ করতাম: মির্জা আব্বাস

বিশ্বের কোথাও মুসলমানের ওপর অত্যাচার হলে প্রতিবাদের পাশাপাশি বিএনপি প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, যদি সুযোগ থাকতো আমরা (ফিলিস্তিনের পক্ষে) যুদ্ধ করতাম। আমরা যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারি তাহলে একে একে সব মুসলিম রাষ্ট্রকে তারা ধ্বংস করবে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও মুসলমানদের নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরাও সেটা প্রতিহত করার চেষ্টা করবো। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র‌্যালি শুরুর আগে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদ এবং নির্যাতনের শিকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এই প্রতিবাদ র‌্যালি করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। মির্জা আব্বাস বলেন, ওরা (ইসরায়েল) ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করছে, এক এক করে সব মুসলমানের ওপর নির্যাতন করবে, ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। আজ যারা বিশ্বের মুসলিম মোড়ল আছেন, তারা তাদের রাজত্ব টিকে রাখতে নেতৃত্বে আসছেন না, এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াচ্ছে না তাদের প্রতি ধ্বংস নেমে আসবে। বিশ্বের কোথাও মুসলমানের ওপর অত্যাচার হলে প্রতিবাদের পাশাপাশি বিএনপি প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফিলিস্তিনের রাফা ও গাজায় ইসরায়েল হামলা, গণহত্যা চালালেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। এমনকি সুশীল সমাজেরও কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। বিএনপি বরাবরই মানবতার পক্ষে, অন্যায়ের বিপক্ষে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও নির্যাতনের প্রশ্নে মুসলিম বিশ্বের মোড়লদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ ইসরায়েলকে পরোক্ষভাবে মদত দিয়েছিল। এমনকি আড়িপাতার যন্ত্র কিনে এ দেশের বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মানুষের অপর নাম ফিলিস্তিনের জনগণ। মুসলিম বিশ্বের নীরবতার কারণে সারা পৃথিবীতে মুসলিম জনগণ গণহত্যার শিকার হচ্ছে, সেটা আরাকান থেকে ফিলিস্তিন পর্যন্ত সারা বিশ্ব বিস্তৃত। ফিলিস্তিনি জনগণ নিজ দেশে পরবাসী হয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ ১৯৪৮ সালের পর থেকে তীব্রভাবে ইসরায়েলি হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে। তারা এখন আপন দেশে পরবাসী হয়ে গেছে। বিশ্বের কিছু পরাশক্তির সমর্থনে ইসরায়েল যে গণহত্যা শুরু করেছে তা আজ নয়, বহুদিন আগে থেকে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। এছাড়া র‌্যালিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, আব্দুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম নীরব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন, জাতীয়তাবাদী যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে র‌্যালি কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, বাংলামোটর প্রদক্ষিণ করে কারওয়ানবাজার মোড়ে এসে শেষ হয়। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ফিলিস্তিনের পতাকা, কাফন মোড়ানো শিশুদের প্রতীকী মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

বিমান বানিয়ে ভাইরাল জুলহাসকে আবারও আর্থিক সহায়তা দিলেন তারেক রহমান

মানিকগঞ্জের যুবক জুলহাস মোল্লার তৈরি করা বিমানে নতুন ইঞ্জিন লাগানো এবং প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করার জন্য তাকে দ্বিতীয় দফায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জুলহাস মোল্লার হাতে অর্থ সহায়তা দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। যার আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ নামের বিএনপির একটি সংগঠন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান রিয়াজ উদ্দিন নসু, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, মিডিয়া সেলের সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশের (এ্যাব) সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সালাহউদ্দিন আহমেদ রায়হান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আতিকুর রহমান রুমন বলেন, ‘জুলহাস যখন বিমানটি তৈরি করেন, তখন আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে নির্দেশে তার কাছে গিয়েছিলাম। ওখানে তাকে উৎসাহ দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, জুলহাস মোল্লার পাশে আমরা সব সময় থাকব। তারই অংশ হিসবে এই প্লেনটি মোডিফাই করার জন্য আমাদের কাছে সাহায্য চান।তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজকের এই অনুদান দেওয়া।’ আর্থিক অনুদান পাওয়ার পর জুলহাস মোল্লা তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাকে অনেকেই চিনত না, এখন অনেকেই চেনেন। আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাই। তার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ থাকব।আসলে একজন মানুষ যখন আলোচনায় আসে, সবাই তার পাশে থাকার অভিনয় করে। কিন্তু প্রকৃত যারা পাশে থাকে, তাদের আজকে দেখতে পাচ্ছেন। আমি তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’প্রসঙ্গত, নিজ চেষ্টায় উড়োজাহাজ বানিয়ে সারা দেশে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের জুলহাস মোল্লা। ২৮ বছর বয়সী এই তরুণের প্রতিভা ও সৃজনশীলতা দেখে এর আগেও তার পাশে দাঁড়িয়েছেন তারেক রহমান।গত ৫ মার্চ শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ বাজার এলাকায় গিয়ে জুলহাস মোল্লাকে ৫০ হাজার টাকা দেন আফরোজা খানম রিতা ও আতিকুর রহমান রুমন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হলো।

মিরপুরে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে চিনতে পেরে ব্যাপক মারধর

রাজধানীর মিরপুরের শাহআলী থানাধীন এলাকায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের তিন নেতাকে চিনতে মারধর করেছে উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ। বুধবার(৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১০ থেকে ১১ টার মধ্যে শাহআলীর বি ব্লকের মনি কানন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শাহআলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা জেনেছি তিনজনই ছাত্রলীগের নেতা। তারা পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। তবে তাদের নাম এখনো নিশ্চিত নই। তাদের মধ্যে দুজনের নামে পাবনায় একাধিক মামলা আছে বলে তথ্য এসেছে। আমরা তাদের সঠিক নাম পরিচয় ও মামলার তথ্য যাচাই-বাছাই করছি।” কে বা কারা কেন মারধর করলো জানতে চাইলে ওসি বলেন, “তারা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত, চিনতে পেরে কয়েকজন মারধর শুরু করে। পরে আরও অনেকে অংশ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।”

বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন চায় ইসলামী আন্দোলন

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নাম পরিবর্তন করে ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ বা ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় দলের মহাসচিব ইউনুছ আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এ প্রস্তাবনা জমা দেন। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে তারা লিখিত মতামত দেন। লিখিত মতামতে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের নামের মধ্যে যেন জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করার দর্শন প্রতিফলিত হয়, সে জন্য ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ নামটি প্রস্তাব করছি।’ প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।

‘বৈশাখের আয়োজন থেকে “মঙ্গল” শব্দ বাদ দিতে হবে’

বৈশাখের আয়োজন থেকে ‘মঙ্গল’ শব্দসহ ‘হিন্দুত্ববাদী’ প্রতীক. ধারণা ও অনুষঙ্গ বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আান্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি জানান। সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘পয়লা বৈশাখ ঋতু সম্পর্কিত একটি বিষয়। এই অঞ্চলের মানুষের কৃষিকাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিয়ে-সাদিসহ অনেক কিছুই ঋতুর সঙ্গে সম্পর্কিত। সেজন্য বাদশাহ আকরব ইসলামী বর্ষপঞ্জিকাকে ভিত্তি ধরে সৌরবর্ষ গণনার জন্য বাংলা সন প্রবর্তন করেছিলেন। এই সন প্রবর্তনের সঙ্গে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িত।’’ তিনি বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ মুসলমান হওয়ার কারণে তাদের আচার-প্রথা ও সংস্কৃতিতে ইসলামবিরোধী কোনো কিছুর অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। তাই বাংলা নববর্ষের কোনো আয়োজনে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু থাকা যাবে না।’’ সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘নববর্ষের দিন মানুষ শালীনতা ও ইতিহাস-ঐতিহ্য সমর্থিত পন্থায় নানা আয়োজন করতেই পারে। কিন্তু সেই দিন কোনো যাত্রা করলে তাতে “মঙ্গল” হবে, এমন বিশ্বাস করলে বা ধারণা করলে পরিস্কারভাবে তা গুনাহের দিকে নিয়ে যাবে। তাই ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে কোনো কিছু করা যাবে না। “মঙ্গল“ শব্দ ও ধারণা অবশ্যই বাদ দিতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই অঞ্চলের মুসলিমদের স্বার্থেই প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ইতিহাসের সেই বাস্তবতা মাথায় রেখে নববর্ষের আয়োজন থেকে “মঙ্গল” শব্দ ও ধারণা বাদ দিন। একই সঙ্গে নববর্ষের আয়োজনে মূর্তিসহ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব কিছু বাদ দিন। এ দেশের হাজার বছরের ইহিতাস ঐহিত্যকে বিবেচনা করে ইসলাম সমর্থিত ধারণা ও উপকরণ ব্যবহার করুন।’’বিজ্ঞাপন সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘পতিত ফ্যাসিবাদের চাপিয়ে দেওয়া সংস্কৃতিক যদি অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে জারি থাকে, তাহলে শহিদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করা হবে। ইসলামী আন্দোলন তা হতে দেবে না। তাই নববর্ষের আয়োজন থেকে পতিত ফ্যাসিবাদের চাপিয়ে দেওয়া হিন্দুত্ববাদী প্রতীক, ধারণা ও অনুসঙ্গ বাদ দিতে হবে।’’

পদত্যাগ করে দলের দায়িত্ব নিন, প্রধান উপদেষ্টাকে দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছেলেদের দিয়ে একটা দল গঠন করেছেন। অনেকেই এর বিরোধিতা করেছে, কিন্তু আমরা করিনি। ড. ইউনূস সত্যবাদী, সাহসী ও বিবেকবান মানুষ। তাকে আমরা এখনও শ্রদ্ধা করি। আপনার (ড. ইউনূস) যেহেতু এতই বিবেক আছে, এতই সত্য জানেন, তাহলে ছেলেদের রাস্তায় ঠেলে দিচ্ছেন কেন? আপনি পদত্যাগ করে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করুন। নির্বাচনে অংশ নিন। জনগণ ভোট দিলে বিএনপি আপনাকে সর্বপ্রথম অভিনন্দন জানাবে।’ বুধবার (৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ আয়োজিত ‘সংস্কার, জাতীয় নির্বাচন ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আপনাদের আমরা সমর্থন করি। আপনাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। এই শ্রদ্ধা, ভালোবাসা নষ্ট করবেন না। বিএনপিকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। বিএনপি রাস্তায় নামার আগেই নির্বাচন দিন। বিএনপি রাস্তায় নামলে কী হবে শেখ হাসিনার দিকে তাকান। বিএনপি যে কয়বার ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের সমর্থন ও ভালবাসা নিয়ে। কারণ আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আছে।’ নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হবে। নির্বাচন ঠেকানোর মতো সাহস কারও নাই। নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে। এটা এখন আমরা দাবি করছি। কিন্তু আমরা প্রমাণ করে ছাড়বো ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে।’ দুদু আরও বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সেই নির্বাচনই যদি না হয় তাহলে সংস্কার কী কাজে লাগবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার যদি ভুল না করে, দেশকে বিপথে চালিত না করে তাহলে আগামীর বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।’ নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি এসএম মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদপত্র এডিটরস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার, ব্যবসায়ী রশীদ আহমেদ হোসাইনী।

কাঠগড়ায় জ্যাকবের সাথে আড্ডায় মাতলেন শমী কায়সার

রাজধানী ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানার হত্যা মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সারকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সাংসদ, অভিনেত্রীসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের সঙ্গে কাঠগড়ায় জমিয়ে আড্ডা দিতে দেখা যায় শমী কায়সারকে। বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে তাদের হাজির করা হয়। মামলার শুনানির পুরোটা সময় জ্যাকব ও শমী কায়সার আড্ডায়-গল্পে পার করেন। এদিকে শুনানি শেষে উত্তরার আজমপুরে টঙ্গী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান ইউসুফ হত্যাচেষ্টা মামলায় শমী কায়সারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত ৫ নভেম্বর রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে শমী কায়সারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। গত ১৪ অক্টোবর মাগুরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন সময় কটূক্তি করার অভিযোগে অভিনেত্রী শমী কায়সারের নামে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী সরকার পতনের পর ১৪ আগস্ট দেশের ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন শমী কায়সার। অভিনেত্রী এবং প্রযোজক শমী কায়সার নব্বই এর দশকের নামকরা অভিনেত্রী। ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন শমী। তার বাবার নাম শহীদুল্লাহ কায়সার ও মাতার নাম পান্না কায়সার। তার মা পান্না একজন লেখিকা এবং সাবেক সাংসদ। সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দুজা চৌধুরীর স্ত্রী মায়া পান্নার বোন। সে হিসেবে শমী কায়সার এবং রাজনীতিক মাহি বি চৌধুরী খালাতো ভাই-বোন।

নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে বিএনপি

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আবারও সাক্ষাৎ করবে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পরপরই সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতা ও গণহত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিএনপি। দ্রুত এই নৃশংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে দলীয়ভাবে খুব শিগগিরই ঢাকায় বড় ধরনের বিক্ষোভ করবে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। এতে চলমান পরিস্থিতিসহ রাজনৈতিক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর এই বৈঠক ছিল দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের প্রথম বৈঠক। সূত্রমতে, গত কয়েক মাস ধরে বিএনপি নেতারা সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের যে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, সে ব্যাপারে একটি স্পষ্ট পথনির্দেশিকা পেতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাক্ষাতের পর দলটি নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে দলীয় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে দু-একটি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে দেখা যেতে পারে দলটিকে। বৈঠকে বেশ কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপ ও সংস্কারের ইস্যু ছিল অন্যতম। বিএনপি ২৩ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ওপর দলীয় মতামত জমা দিয়েছে। সংস্কারের পক্ষেই দলটির মতামত রয়েছে। সংস্কার ইস্যুতে তারা যে সরকারকে সহযোগিতা করছে, সে বিষয়ে দলটি তাদের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করছে। বিএনপি মনে করে, সরকারের উচিত নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ আলোচনা হয়েছে। বিএনপি মনে করে, নির্বাচনকেন্দ্রিক যত সংস্কার রয়েছে, সেগুলো সরকার একটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে। আর বাকি সংস্কারগুলো একটা রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ করবে। তবে সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে, সে ব্যাপারে দলটি এখনো আশ্বস্ত নয়। তাদের মধ্যে নির্বাচন প্রলম্বিত করার নানান শঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। সরকারের তরফ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মনে করে, এটি কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নয়। কারণ, নির্বাচন নিয়ে সরকারের তরফ থেকে একেক সময় একেক কথা বলা হচ্ছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে সরকার আসলে কী ভাবছে কিংবা তাদের অবস্থান কী, সেটা সুস্পষ্টভাবে জানতে খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবে। জানা গেছে, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে কনসার্ন, সংশয়-তা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাবে বিএনপি। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির যে মতামত, সেটাও তারা তুলে ধরবে। চিকিৎসার জন্য রোববার সিঙ্গাপুর যান বিএনপির মহাসচিব। সপ্তাহখানেক পরে তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। জানা গেছে, স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে বিএনপি যেহেতু সরকারকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে এবং আগামীতেও করবে; সে কারণে নির্বাচনি রোডম্যাপ ইস্যুতে তারা বড় কোনো কর্মসূচিতে যেতে চান না। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবতা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈশ্বিক চাওয়া-এগুলো বিবেচনায় নিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। দলটি মনে করে, দ্রুত নির্বাচন হলে দেশে বিদ্যমান নানা সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে এবং দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচি পালন করছে। এবার বিএনপিও কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি নেবে। এর অংশ হিসাবে চলতি সপ্তাহেই রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিতে পারে। যেখানে ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিবাদ জানাবে দলটি। এছাড়া শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীতে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানাবে বিএনপি। সেখানে দলটির নেতাকর্মীরা অংশ নিতে পারেন।

ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না ছাত্রশিবির

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, অভিশপ্ত ইহুদি জাতির পতন সময়ের ব্যাপার। সারা বিশ্বের মুসলমানরা আজ জেগে উঠেছে। আমরা বাংলাদেশ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, ফিলিস্তিনে আর কোনও বোমা পড়লে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রশিবির ঘরে ফিরে যাবে না। সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের সঙ্গে আমরা রাজপথে অবস্থান করবো। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় ‘গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার’ দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল উত্তর সমাবেশে শিবিরের নেতারা এসব কথা বলেন। সমাবেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘পৃথিবীতে দুইশ কোটি মুসলমান থাকলেও আজ গাজার মুসলিমরা অভিভাবক শূন্য। ফিলিস্তিনের নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম গণহত্যার শিকার হচ্ছে। মুসলিম দেশগুলোর দ্বারা বেষ্টিত দখলদার ইসরায়েল মুসলমানদের পবিত্র ভূমি দখল করছে, অথচ শক্তিশালী মুসলিম দেশগুলো নির্বিকার। পরিস্থিতি এমন যে, মুসলিম নেতারা যেন ইসরায়েলের হাতে জিম্মি।’ গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে ঢাকা মহানগর ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর শাহবাগ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে মৎস্য ভবন, জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরগেটে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামের নেতৃত্বে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু'তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি, সেক্রেটারিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।

প্রতিবাদ মিছিলের মধ্যে যারা লুটপাট করেছে তারা মানবতার কলঙ্ক: দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘গতকাল সারাবিশ্ব ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশও ঘৃণা প্রকাশ করেছে। আমাদের দেশের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের মধ্যেও কিছু দুষ্কৃতকারী, কিছু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের তথাকথিত অভিযোগের নামে আক্রমণ এবং লুটপাট করেছে। এটা ঘৃণ্য ব্যাপার। এটা সমর্থনযোগ্য নয়। যারা এটা করেছে তারা মানবতার কলঙ্ক।’ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’র উদ্যোগে আয়োজিত ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে নাগরিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু আরো বলেন, ‘বাঙালি জাতি, মুসলিম জাতি ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রুখে দাঁড়ানোর জন্য আমরা প্রত্যাশা করি, তারা কার্যকর ভূমিকা না নিয়ে নীরবতা পালন করছে। আমার মনে হয় এটা পরিহার করে সারা বিশ্বের সঙ্গে এই মানবতার সপক্ষে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এই মানবতার রক্ষা যদি আমরা না করতে পারি, তাহলে ইসলামকে রক্ষা করা, হযরত মোহাম্মদ (স.) এর প্রতি আমাদের যে শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা সেটাও প্রশ্নের মধ্যে পড়ে যাবে।’ ‘জাতিসংঘের মানবতা সনদের স্বাক্ষরকারী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ। যেকোনো মানবতাবিরোধী দেশ, জাতি, গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান থাকবে। আমরা সশস্ত্র সংগ্রাম এবং লড়াই করে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের মাতৃভূমি পেয়েছি। ৭১ সালে আমাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা করেছিল পাকিস্তান। আমাদের বিরুদ্ধে তারা নির্মম নির্যাতন করেছিল। গণহত্যা কি সেটা বাঙালি জাতি জানে। গণহত্যা কত নির্মম ও ভয়ঙ্কর সেটা জাতি ও দেশ হিসেবে আমরা জানি।’ ‘এমনকি ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমরা দেখেছি, তৎকালীন গায়ের জোরে প্রধানমন্ত্রী দাবিদার শেখ হাসিনা কীভাবে মানবতাবিরোধী ভূমিকা নিয়েছিলেন। একটা পর্যায়ে ছাত্র-জনতার রক্ত যখন রাজপথে রঞ্জিত হয়েছে, তখন তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছে। সে কারণে যেকোনো দেশের গণহত্যা বিরোধী ভূমিকায় বাঙালি জাতি, বাংলাদেশিরা তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা প্রকাশ করে।’ ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার যখন ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল, তখন বিশ্বের মানুষ কিন্তু সেই ইহুদি হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করেছিল। তখন মানবতার প্রশ্নে বিরোধিতা করা হয়েছে। এমনকি মুসলমানরাও তখন হিটলারের সেই হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করেছিল। সেই ইহুদিরা অন্য কোনো জাতির বিরুদ্ধে এমন নৃশংস হয়েছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে জায়গা এখন ইসরায়েল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত, সেটিও ফিলিস্তিনিদের ভূমি ছিল। ফিলিস্তিনে ছোট ছোট শিশু, নারী এবং সাধারণ মানুষের যে ভয়ঙ্কর পরিণতি, সেটা কোনোভাবেই কেউ মানতে পারে না।’ দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, সাবেক এমপি শামীম কায়সার লিংকন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার ও জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকন প্রমুখ।

ইসরায়েলি পানীয় কিনে ফেলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা করলেন বিএনপি নেতা আমিনুল

গাজার রাফায় ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মুসলিম সচেতন নাগরিক হিসেবে সবাইকে ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। সোমবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় ফিলিস্তিনে সব নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোক প্রকাশ করেন। মুসলমানদের ওপরে এই ধরনের হত্যাযজ্ঞ আমরা আর দেখতে চাই না বলে তিনি উল্লেখ করেন। এসময় অনুষ্ঠানে কোমল পানীয় ইসরায়েলের পণ্য হওয়ায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের আহ্বানে খাবার টেবিল থেকে পণ্যটি ফেলে দেয় হাজারও নেতাকর্মী।

ঢাকায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

অবিলম্বে গাজায় বন্দিদশা, হামলা, নারী-শিশু হত্যাসহ হামলা বন্ধ করতে হবে। যদি সেটা না করা হয়, তাহলে বিশ্ব মুসলিম গাজাবাসীর দিকে মার্চ করতে বাধ্য হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলিম উম্মাহ ইসরায়েলকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে গুঁড়িয়ে দেবে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম। মহাখালী থেকে শুরু হয় এ বিক্ষোভ মিছিল। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর কাছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজাবাসী নারী ও শিশুকে হত্যা করে আইয়ামে জাহেলিয়াতের বর্বর যুগের ইতিহাসকে হার মানিয়েছে। ইসরায়েল গণহত্যা পরিচালনার মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে তৌহিদী জনতা, মুসলমানদের গুঁড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা শুধু ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করতে চাই না। পৃথিবীর বুকে যেখানেই ইহুদি থাকবে সেখানেই তাদের বয়কট করা হবে। তরুণ যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছাত্রশিবিরের সাবেক এ কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, জ্ঞানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ হয়ে তৈরি হওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলকে বয়কট করে গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে হবে। সন্ত্রাসী ইসরায়েলের কালো থাবা থেকে তাদের মুক্ত করতে জ্ঞান-বিজ্ঞান দক্ষতার মাধ্যমে চূড়ান্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিনি জাতিসংঘ ও ওআইসিকে বিশ্বব্যাপি ইসরায়েলকে বয়কট এবং ইসলামী জেনোসাইডের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। ইন্ধনদাতা-সমর্থন দেওয়া রাষ্ট্রগুলোকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ জামায়াত নেতা বলেন, অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, হামলা বন্ধ করুন। যদি তা করা না হয়, তাহলে গোটা মুসলিম উম্মাহ দুর্বার বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। বিক্ষোভ মিছিলে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মুসল্লিরা অংশ নেন।

গাজায় গণহত্যা: দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক জামায়াতের

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের উপর্যুপরি বিমান হামলা ও নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর মহাখালীতে দলটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। সোমবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের মুজিবুল আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর উপর্যুপরি বিমান হামলা ও নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে মানবতার দুশমন ইসরাইলি বাহিনীর পাশবিক হামলায় গাজায় ৫০ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জনেরও অধিক নিরীহ ফিলিস্তিনি। নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু। এদিকে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধ বিরতি কার্যকর করার পর থেকেই ইসরাইল অব্যাহতভাবে গাজায় একের পর এক ছোট-খাটো হামলা চালিয়ে যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করে আসছে। গত ১৮ মার্চের হামলাটি ছিল যুদ্ধ বিরতির পর সবচাইতে বড় ধরনের হামলা। জালিম ইসরাইলি বাহিনীর এক দিনের এই বর্বর হামলায় নারী-শিশুসহ চার শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। ‘ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার ঘোষণা দিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। এ হামলার মাধ্যমে ইসরাইলিদের যুদ্ধবাজ জঙ্গি মনোভাবই আবার অত্যন্ত নগ্নভাবে প্রকাশিত হলো।’ তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর উপর্যুপরি বিমান হামলা ও নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংগঠনের সকল শাখা এবং দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

মক্কা থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য অঝোরে কাঁদলেন শফিকুল ইসলাম মাসুদ

পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য গত ৩০ মার্চ সপরিবারে সৌদি আরবে গেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। তার আগামী ১০ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে। রোববার ওমরাহ পালনকালে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন শফিকুল ইসলাম মাসুদ। পরে ফিলিস্তিনবাসীর জন্য অঝোরে চোখের পানি ফেলে দোয়া করেন তিনি। মাসুদ কান্নারত অবস্থায় বলেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। প্রিয় ফিলিস্তিন, প্রিয় গাজা। আমার ভাই ও বোনেরা, কাবার মালিকের কাছ থেকে দোয়া করছি- আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালার কাছে, কাবার মালিক যেমন হস্তিওয়ালাদের দমন করেছিলেন এবং মুসলমানদের হেফাজত করেছিলেন, আল্লাহ তায়ালা যেন আমার ফিলিস্তিনিদের হেফাজত করেন। আমার গাজাকে হেফাজত করেন। তিনি আরও বলেন, হে আল্লাহ আমার ভাইবোনদের হেফাজত কর। প্রিয় ফিলিস্তিন আমরা এ কাবার চত্বরে আছি। আমাদের শরীরটা এখানে পরে আছে। কিন্তু আমাদের হৃদয়টা তোমাদের সঙ্গে আছে। আমরা আসব। আমরা তোমাদের সঙ্গে গাজি হব। আমরা তোমাদের সঙ্গে শহিদের কাতারে মিলিত হবে। তোমাদের কেউ হারাতে পারবে না। তোমরা হারলে হেরে যাবে পৃথিবী। মাসুদ বলেন, প্রিয় ফিলিস্তিন- তোমাদের বিজয় দিয়েই শুরু হবে মুসলিম বিশ্বের উম্মাহর বিজয় নিশান। ইনশাল্লাহ। ইনশাল্লাহ। ইনশাল্লাহ। ফিলিস্তিনির জন্য পুরো মুসলিম উম্মাহ একত্রিত হওয়া খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। কাল কেয়ামতের দিন আমরা আল্লাহর কাছে কী জবাব দেব। আল্লাহ প্রিয় ফিলিস্তিনকে দয়া কর। আল্লাহ প্রিয় ফিলিস্তিনকে সাহায্য কর। তিনি আরও বলেন, পবিত্র এ কাবাঘরে দাঁড়িয়ে আমার নিজের পরিবারের কথা বলতে ইচ্ছে করে না। কাবার মালিকের কাছে বলতে ইচ্ছে করে- মালিক! তুমি হস্তিওয়ালাদের দমন করেছ। সামুদ জাতিকে ধ্বংস করেছেন। আল্লাহ, আপনি ইসরাইলকে তাদের মতো ধ্বংস করে দেন। আল্লাহ নেতানিয়াহুর মতো নরপিচাশকে আপনি ধ্বংস করে দেন। আমিন।

গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রাজপথে নামার আহ্বান সারজিসের

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, কোনো দলের ব্যানারে নয় বরং দলমত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে সোমবার (৭ এপ্রিল) আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি জনতাকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান। ফেসবুকে তিনি লিখেন, আগামীকাল বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছে আমাদের মজলুম গাজাবাসী ভাই-বোনেরা। গণহত্যা বন্ধ করার দাবিতে বিশ্বের সব দেশে একযোগে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, অফিস, আদালত সব বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা। কিন্তু মানুষ কিংবা মুসলিম হিসেবে এসব বন্ধ রাখাতেই আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত নয় বরং দলমত নির্বিশেষে সারাদেশের ছাত্রজনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে ইসরায়েলি খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। তিনি লেখেন, আমরা হয়তো এই মুহূর্তে আমাদের গাজার ভাইদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারব না। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের সাথে একত্বতা ঘোষণা করতে নিজ ভূমির রাজপথে অন্তত নামতে পারবে। এনসিপি, বিএনপি-জামায়াত; কিংবা অন্য কোনো দলের ব্যানারে নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে আগামীকাল আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। তিন আরও লেখেন, প্রত্যেক জেলায় ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন মিলে দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালিত হোক। ৭ এপ্রিল কোনো দল, মত, পক্ষের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গাজার মজলুম মানুষের পক্ষে হোক।

ওয়াকফ আইন পুনর্বিবেচনা করতে ভারতকে আহ্বান বিএনপির

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, গত কয়েক দিন আগে ভারতের পার্লামেন্টে ‘মুসলিম ওয়াক্ফ (সংশোধন) বিল ২০২৫’ নামে একটি আইন পাস করা হয়। আইনটির বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি যে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্যমূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে এই আইনে। রবিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এসব কথা বলেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি উল্লেখ করেন, ভারতে মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ওয়াক্ফ হলো ইসলামি দানের একটি প্রাচীন ব্যবস্থা। ওয়াকফের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি স্থায়ীভাবে সাধারণত জমির মতো কোনও সম্পত্তি ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে ব্যবহারের জন্য দান করেন। এ ধরনের ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিক্রি করা বা কারও নামে হস্তান্তর করা যায় না।’ ‘ভারতের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি ও স্বার্থবিরোধী এই আইনকে অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, যা ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ভারতে ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর অধীনে প্রায় ১০ লাখ একর সম্পত্তির মধ্যে অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণ মূলক কাজে।’ ‘নতুন আইনে পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, যার ফলে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে। মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপের কারণে এবং বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে—এ রকম কোনও পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গ্রহণ করা সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি’- বলেন সালাহ উদ্দিন। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারতে অন্য ধর্মাবলম্বীদের এই জাতীয় বোর্ডে অথবা কোনও আইনি সংগঠনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোনও অন্তর্ভুক্তি দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে এই আইনটি একটি বৈষম্যমূলক আইন হিসেবে বিবেচিত হবে। নতুন আইনে পরিবর্তনগুলো শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াক্ফ জমির ওপর গড়া মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।’ ‘নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যে এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে, তা মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ‘ল’ বোর্ডের মতো সংগঠনগুলোর মতে—এই আইন ইসলামি ওয়াক্ফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থি। তাদের মতে, ওয়াক্ফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত। তারা একে মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে অভিমত দিয়েছেন।’’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের ভূমিকাকে সমুন্নত রেখে উক্ত আইনটি ভারত সরকার পুনর্বিবেচনা করবে, আমরা এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’ ‘আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা মনে করি।’

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল

রাজধানীতে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (৬ এপ্রিল) সকাল ৭টা ১০ মিনিটের দিকে রায়তুল মোকারমের দক্ষিণ গেট থেকে এই ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু এভিনিওতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মোরাদের নেতৃত্বে। মিছিলে রাজধানীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

কোকোর শাশুড়ির মৃত্যুতে মির্জা ফখরুল-তারেক রহমানের শোক

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর শাশুড়ি মুরেমা রেজার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় তারা এ শোক জানান। শোকবার্তায় তারেক রহমান বলেন, ‘এসইউএফ মুকরেমা রেজার মৃত্যুতে তার শোকাহত পরিবারের মতো আমিও গভীরভাবে সমব্যথী। একজন স্নেহশীর মা হিসেবে তিনি গভীর মাতৃত্ব ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে তার সন্তানদের সুশিক্ষিত ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। পরহেজগার ও পরোপকারী নারী হিসেবেও তিনি সবার কাছে ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়।’ শোকবার্তায় এসইউএফ মুকরেমা রেজার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তারেকর রহমান। পৃথক শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মেধা ও শ্রম দিয়ে তিনি তার সন্তানদের সুশিক্ষিত, প্রতিষ্ঠিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। ধর্মপরায়ন ও পরোপকারী হিসেবে মরহুমা এসইউএফ মুকরেমা রেজা প্রতিবেশীদের কাছে সুপরিচিত ও শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন।’ শোকবার্তায় এসইউএফ মুকরেমা রেজার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মুকরেমা রেজা রোববার (৬ এপ্রিল) ভোর রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা ফখরুল

রোববার (৬ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে ডাক্তার দেখানোর শিডিউল আছে মহাসচিব স্যারের। এক সপ্তাহ পর ঢাকায় ফিরবেন তিনি।

বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর হেফাজতও দ্রুত নির্বাচন চায়

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। হেফাজত নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপির মতো তারাও দ্রুত নির্বাচন চান। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন। হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, নায়েবে আমির ড. আহমদ আবদুল কাদের, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। মহিউদ্দিন রব্বানী জানিয়েছেন, হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে ২০১৩ এবং ২০২১ সালে দায়ের মামলা, নির্বাচন, আওয়ামী লীগের বিচার এবং সংবিধান সংস্কার নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে। হেফাজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহারের দাবি বিএনপিও তুলবে বলে আশ্বস্ত করেছে। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হেফাজত অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোটের নেতারা হেফাজতেরও নেতৃত্বে রয়েছেন। খেলাফত, জমিয়ত, ইসলামী ঐক্যজোট এক সময়ে বিএনপির জোটে থাকলেও দলগুলোর নেতারা আওয়ামী লীগ আমলে হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলায় পড়ার পর বেরিয়ে যায়। আগামী নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে কাছে টানতে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী। এ সময়ে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মহিউদ্দিন রব্বানী সমকালকে বলেছেন, বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চায়, হেফাজতও তাই চায়। হেফাজতের ব্যানারে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে না। তবে সংগঠনের নেতারা নিজ নিজ দলের হয়ে নির্বাচন করবেন। একটি বৃহত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে হেফাজতও মনে করে, যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই ভালো। নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সরকার একেক সময় একেক কথা বলায় অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে বহুত্ববাদ যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে। বিএনপি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানে যুক্ত করা ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসকে’ ফের মূলনীতি হিসেবে চায়। মহিউদ্দিন রব্বানী বলেছেন, হেফাজতও বহুত্ববাদ ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসকে’ মূলনীতিতে চায়। জামায়াতের সমালোচক হেফাজত আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে সমর্থন করতে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এর জবাবে মহিউদ্দিন রব্বানী বলেছেন, যারা হেফাজতের ১৩ দফাকে সমর্থন করবে, তাদেরকেই হেফাজত সমর্থন করবে।

আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া দরকার: রেজাউল করিম

জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর দাবি অনতিবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন। সেটির জন্য এ বছরের শেষে বলা আছে। আমরা এর আগেই দাবি করি স্থানীয় নির্বাচন হওয়া দরকার। এজন্য আমরা মেয়রসহ কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়ে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, জামায়াতের মেম্বার-চেয়ারম্যান প্রার্থীরা কাজ করছেন। জাতীয় সরকার আইন প্রণয়ন করবে। কিন্তু জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ স্থানীয় সরকারের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেগুলো ভেঙে পড়ার কারণে আমরা মনে করি স্থানীয় নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ মনসা বাড়ির সামনে আয়োজিত শ্রী শ্রী বাসন্তী দুর্গোৎসব পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন রেজাউল করিম। জামায়াত নেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি সম্প্রীতির একটি বাংলাদেশ। আগামী দিনে ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরকার আসবে। মসজিদ যদি পাহারা দিতে না হয়, মন্দির কেন পাহারা দিতে হবে? আমরা সেরকম একটি সহনশীল সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কেউ আছে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা এ দেওয়ালটাকে অতিক্রম করতে চাই। দেশের সব নাগরিকেরই সমান অধিকার। তাই সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলতে কোনো কিছু নেই।’ এসময় উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর পৌর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আবুল ফারাহ নিশান, মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি দেবজিৎ নাথ, সাধারণ সম্পাদক ঝন্টু দেবনাথ, বিশ্বজিৎ সাহা প্রমুখ।

গুলশানে হেফাজত নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মির্জা ফখরুল

গুলশানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত ৮টা ১০ মিনিটে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকে মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। অপরদিকে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে উপস্থিত রয়েছেন ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।

জনগণ দ্রুত একটি নির্বাচন দেখতে চায়: আমিনুল হক

বাংলাদেশের জনগণ দ্রুত একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর আহ্বায়ক আমিনুল হক। শনিবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানী পল্লবীর কালশী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। আমিনুল হক বলেন, আমরা আশা করি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এতে নতুন ও পুরাতন ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের সময়ে কেউ ভোট দিতে পারেনি। এবার মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নতুন ভোটারদের প্রতি শুভকামনা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, ভোটার হওয়া হচ্ছে একজন নাগরিকের অধিকার। সেই অধিকার অবশ্যই তাকে প্রয়োগ করতে দিতে হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা আশা করি— আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। যার মাধ্যমে জনগণ নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মাহাবুব আলম মন্টু প্রমুখ।