
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে এক কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার।
সোমবার ১৫ ডিসেম্বর বিকেল চারটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন তিনি।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওসমান হাদিকে রক্ষা করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। আর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঘাতককে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করে তামাশা করছেন। এমন উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই। আমি রাকসু জিএস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে এক কোটি টাকার পুরস্কার ঘোষণা করলাম। যে বা যারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ নিশ্চিত করতে পারবেন, তাকে আমি কোটি টাকা পুরস্কার দেব।”
এর আগে বিকেল তিনটায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে এই সমাবেশ শুরু হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সমাবেশ শুরুর আগেই শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। দুপুরের পর থেকেই মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ চলে। চেয়ার সাজানো, ব্যানার ও ফেস্টুন টানানোর পাশাপাশি গান ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে হামলার প্রতিবাদ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান তুলে ধরা হয়।
সমাবেশে অংশ নেওয়া অনেককে হাতে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানাতে দেখা যায়। একই সঙ্গে তারা হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আয়োজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানানো এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহিংসতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরা। সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক। তিনি অভ্যুত্থান-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকার ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সে লক্ষ্যে নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।